1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সেন্ট মার্টিন দিয়ে ক্ষমতা চাই না: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ কাউকে দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চান না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে। তাহলে এখন তারা দেশ বিক্রি, নাকি সেন্ট মার্টিন বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে আসতে চায়?

গতকাল বুধবার দুপুরে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা, আমি এ দেশের কোনো সম্পদ কারো কাছে বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না।

ওই গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও তখন ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। আর এখনো যদি আমি বলি, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ কাউকে লিজ দেব, তাহলে আমাদের ক্ষমতায় থাকতে কোনো অসুবিধা হবে না। আমি সেটা জানি। কিন্তু আমার দ্বারা সেটি হবে না।

কারা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ লিজ চাইছে বক্তব্যে তা উল্লেখ করেননি প্রধানমন্ত্রী। তবে সম্প্রতি জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের দুই শীর্ষ নেতা রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চায়।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফরের বিষয়ে তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা চায়, অর্থনৈতিক উন্নতি, দেশের মানুষের উন্নতি, নাকি আবার সেই ২০০৭-এর মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার, আবার সেই ইমার্জেন্সি, আবার সেই ধরপাকড়—সেগুলো চায়, সেটা দেশের মানুষকেই বিবেচনা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফরের বিষয়ে তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু এ দেশে ওয়েস্টমিনস্টার ধরনের গণতন্ত্রচর্চা হয়, তাই ইংল্যান্ডে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেইভাবে এখানে নির্বাচন হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলের নানা প্রস্তাব। এখন তারা আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়; যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে খালেদা জিয়ার উক্তি ছিল, পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। একবার যেটা তারাই বাদ দিয়েছে এবং নষ্ট করেছে, সেটা আবার তারা ফেরত চাইছে।

অথচ উচ্চ আদালতের রায় আছে এবং সেই মোতাবেক সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে যে একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বা সরকারপ্রধান আরেকজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান দ্বারাই প্রতিস্থাপিত হবেন। এর বাইরে অনির্বাচিত কেউ আসতে পারবে না। এটা উচ্চ আদালতের রায়ে আছে, সংবিধানেও আছে। এটা জানার পরও সাংবিধানিক জটিলতার সৃষ্টি কেন করা হচ্ছে?

শেখ হাসিনা বলেন, তার মানে গণতান্ত্রিক ধারাটাকে নষ্ট করা। এই যে দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর বাংলাদেশ সুষ্ঠুভাবে চলছে, আর্থ-সামাজিক উন্নতি করছে, সেটিকে নষ্ট করা। এসব দেশবাসী কিভাবে নেবে সেটাই প্রশ্ন। তারা কি গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা চায়, অর্থনৈতিক উন্নতি চায়, দেশের মানুষের উন্নতি হোক সেটা চায়, নাকি আবার সেই ২০০৭-এর মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার, আবার সেই ইমার্জেন্সি, আবার সেই ধরপাকড়—সেগুলো চায়, সেটা দেশের মানুষকেই বিবেচনা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন বানচাল করার জন্য বিএনপি-জামায়াত যেভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, তিন হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে, তিন হাজারের ওপরে মানুষকে পুড়িয়েছে। কত মানুষ পঙ্গু হয়ে আছে, কত পরিবার ধ্বংস হয়ে আছে। জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষের ক্ষতিগুলো করে দিয়েছিল, সেটা মানুষ এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাবে?

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমি কাউকে খেলতে দেব না। সে অধিকার কারো নেই। আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো জায়গায় কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, কাউকে আক্রমণ করবে বা এ ধরনের কাজ আমরা হতে দেব না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি।’

যুক্তরাষ্ট্রকে কী বলতে হবে ভারত জানে, ওকালতির কিছু নেই

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা নিয়ে সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের একটি বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ভুলভাবে কিছু গণমাধ্যমে এসেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারত যথেষ্ট পরিপক্ব, তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের কাছে) কী বলতে হবে, তারা জানে। সে জন্য আমাদের ওকালতির দরকার নেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতের ওকালতি আমরা চাই না, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এটা বলেননি। তিনি যা বলেছেন আর যা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, এর মধ্যে বিরাট ফাঁক আছে।’

ব্রিকসে যোগদানের ব্যাখ্যা

বাংলাদেশ কেন ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে গঠিত ব্রিকস জোটে যোগ দিতে চায়, সংবাদ সম্মেলনে সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একক ব্লকের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে বাংলাদেশ ব্রিকসে যোগ দেবে। তিনি বলেন, ‘ব্রিকস গঠনের প্রস্তুতির পর থেকেই আমরা এর সঙ্গে ছিলাম এবং আছি। কিন্তু আমরা ফাউন্ডার মেম্বার হতে পারিনি। এখন আমরা মেম্বার হতে চেয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অন্যান্য দেশের সঙ্গেও যেন আমাদের অর্থ বিনিময়ের সুযোগটা থাকে, আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো যেন আমরা সহজে ক্রয় করতে পারি, আমার দেশের মানুষের কষ্ট লাঘব করতে পারি, সেই সমস্ত বিষয় বিবেচনায় নিয়েই আমরা ব্রিকসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আন্তর্জাতিক কোনো মুদ্রা চালু করার পরিকল্পনা বাংলাদেশের আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মুচকি হেসে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আদার ব্যাপারি জাহাজের খবর নিতে বলছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু ডলারের ওপর নির্ভরশীল না, আমরা নিজেরা নিজেদের অর্থে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যেন বিনিময় করতে পারি, কেনাবেচা করতে পারি, সেই পদক্ষেপও নেওয়া আছে। যখন এটা কার্যকর হয় তখন আপনারা দেখতে পাবেন।’

শত ফুল ফুটতে দিন

আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রতি আসনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাশার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে গণতন্ত্র আছে, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে। এ কারণেই দেশটার উন্নতি হয়েছে। মানুষের মধ্যে আস্থা-বিশ্বাস ফিরে এসেছে, দারিদ্র্য দূর হয়েছে। পঁচাত্তর-পরবর্তী অবস্থার কথা চিন্তা করেন। মানুষের ভোটের অধিকার ছিল না, আমরা অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে তা জনগণকে ফিরিয়ে দিয়েছি। এ অবস্থায় প্রার্থী হওয়ার জন্য অনেকেরই আগ্রহ থাকবে, এতে তো কোনো সন্দেহ নেই।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘কাকে প্রার্থী করা হবে, কাকে হবে না এ ব্যাপারে আমাদের দলেরও একটা লক্ষ্য থাকে। একটা অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ নির্বাচন হবে, এটা আমাদেরও দাবি। অনেকেই তো প্রার্থী হতে পারে। প্রার্থী যদি হয়, শত ফুল ফুটতে দিন। যে ফুলটি সবচেয়ে সুন্দর সেটি আমি বেছে নেব।’

মজুদদারদের খোঁজ দিন

বাজার সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে কিছু লোক তো থাকে সুযোগসন্ধানী। বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য থাকার পরও যখন দাম বাড়ে, তার মানে কিছু লোক মজুদদারি করে। তখন আমাদের কিছু বিকল্প পদক্ষেপ নিতে হয়। যেমন, পেঁয়াজ আছে বাজারে, কিন্তু ছাড়ছে না, নিয়ে বসে আছে। এ রকম যারা করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরাও তাদের খোঁজ দিন। কোথায় কে কী গুঁজে রাখল, আমরা খুঁজে খুঁজে তাদের বের করব। মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সে ব্যবস্থা নেব।’


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ