1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ঢাকা-১৭ আসনে মোহাম্মদ এ আরাফাতকে যে কারণে প্রয়োজন

মোহাম্মদ ফায়সাল আহসান উল্লাহ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০২৩

রাজনীতিতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ইতিহাস ও চেষ্টা বহু পুরোনো। উপমহাদেশীয় রাজনীতিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতির জন্য বাইরের শক্তিরা দায়ী। সময়ের ধারাবাহিকতা ও সংগ্রামে রক্তপাত, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি হটিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন বেশ স্থিতিশীল। তারই নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এই দল সর্বোচ্চ স্তর থেকে নিম্নবিত্ত সর্বস্তরের মানুষের ভাষা বোঝে, চাহিদা বোঝে। সেই অনুযায়ী নিজেদের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নও করে। যার প্রমাণ দেশের গতি-প্রবাহের প্রতীক পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল ইত্যাদি।

অর্থাৎ কোন স্থানে কী প্রয়োজন, সেই নিরীক্ষা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার জানে এবং সে অনুযায়ী তা বাস্তবায়ন করে। দেশ এখন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার লড়াইয়ে অগ্রসর। কিন্তু নির্মম বাস্তবতা হলো, এই লড়াই চলাকালীন রাজনৈতিকভাবে এশিয়ার এই ঐতিহ্যবাহী দলটি তার বহু পুরোনো ও পরীক্ষিত সারথি হারিয়েছে চিরসত্য মৃত্যুর কারণে। শুধু আওয়ামী লীগ কেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলেরও বহু পুরোনো মানুষ এই সময়টায় মৃত্যুর গর্ভে হারিয়ে গেছেন। সে রকমই একজন আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক ফারুক তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ছিলেন ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। গত ১৫ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিঙ্গাপুরে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

নায়ক ফারুকের চলে যাওয়ায় জাতীয় সংসদের এই গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-১৭ আসনটি বর্তমানে শূন্য। যার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৭ জুলাই এই আসনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপনির্বাচন। যাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আরাফাত। আভিজাত্য ও বৈশ্বিক সুরসম্পন্ন এই আসনটি প্রায় সময়ই আওয়ামী লীগের বাইরে ছিল। এ জন্য এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন এখনো বহু বাকি। তা ছাড়া এই আসনের সর্বশেষ সংসদ সদস্য দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় এককভাবে এই অঞ্চলের উন্নয়ন তেমন গতি পায়নি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বারিধারা, গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালীর নিউ ডিওএইচএস, ভাসানটেক, মাটিকাটা আদর্শনগর বাইকারটেক, সোনাপুর, মানিকদি এলাকা নিয়ে ঢাকা-১৭ আসন। এবার নির্বাচনে এই এলাকার ৩ লাখ ২৫ হাজার ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। উপনির্বাচনের এই সময়টা আগামী জাতীয় নির্বাচন থেকে মাত্র ছয় মাস আগে। তবু এই আসন নিয়ে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে সবার। কারণ এই সময়টায় দেশের মানুষের অগ্রগতিকে দমানোর জন্য সব বিরোধী অপশক্তি এককাট্টা হচ্ছে। ফলে এই নির্বাচনে একদিকে আওয়ামী লীগ এবং তার উল্টো দিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা যাচ্ছে সব এন্টি আওয়ামী লীগ শক্তিকে। রাজনৈতিক বাস্তবতায় কাছে-দূরের শক্তিগুলো সব সময় অথর্ব শাসন কায়েম রাখতে চায়। এতে তাদের নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষিত ও সুরক্ষিত থাকে। সেই দৃষ্টিতে এই উপনির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের প্রতিপক্ষের কেউ কেউ দুরভিসন্ধিতে মেতেছেন। এ জন্য এই লড়াইয়ে স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির পাশে আমাদের সবাইকে দাঁড়াতে হবে।

অনেকেই মনে করছেন এই উপনির্বাচন কিছুটা জটিল। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের জন্য তা পার হওয়া বা নির্বাচিত হওয়া কঠিন হবে না বলেই মনে করি। কেন কঠিন হবে না সে ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক মোহাম্মদ আলী আরাফাত সম্পর্কে। তিনি একজন শিক্ষাবিদ, বর্তমানে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কৌশলগত ব্যবস্থাপনা ও নীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ, ট্রানজিট এবং কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ খাতের জন্য উপযুক্ত নীতি, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বাংলাদেশে রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র ইত্যাদির মতো বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় অনেক নিবন্ধ লিখেছেন। এমন এক মেধা ও গুণের অধিকারী আরাফাতের নির্বাচনী আসনে যেমন রয়েছে শিক্ষিত-মার্জিত মানুষ, তেমনি রয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষও।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত একজন অধ্যাপক, স্কলার ও সংবেদনশীল মানুষ। যে কারণে তিনি তার চিন্তার বাস্তব প্রতিফলন ঘটানোর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ঢাকা-১৭ আসনের অন্তর্গত বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন দেখে এসেছেন, সেসব এলাকায় বসবাসকারীদের জীবনব্যবস্থার কোথায় কোন অসংগতি রয়েছে তা প্রত্যক্ষ করছেন এবং সেগুলোকে চিহ্নিত করেছেন। সমাজের উচ্চবিত্ত, সুশীল সমাজের পাশাপাশি এ আসনে অবস্থিত ভাসানটেক, কড়াইল, সাততলা বস্তিসহ বড় বড় বস্তিতে বসবাসকারী এবং শাহজাদপুর, কালাচাঁদপুর ও নর্দা এলাকার দরিদ্র মানুষেরও বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। এসব এলাকার নিম্নবিত্তদের জন্য তার যে দরদ ও তাদের জন্য কাজ করার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, সেটিও এরই মধ্যে দৃশ্যমান। যার ফলে আশা করাই যায়, তিনি সার্বিকভাবে এই আসনের অন্তর্গত এলাকাগুলোর মানুষের মনস্তাত্ত্বিক আকাঙ্ক্ষা, রাজনৈতিক ও নাগরিক চাহিদা সম্পর্কে বুঝতে পারবেন।

মনে রাখতে হবে, এই আসনের মধ্যে আবার রয়েছে ‘কূটনৈতিক পাড়া’খ্যাত গুলশান এলাকা। রয়েছে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা। যেখানে রয়েছে সামরিক-বেসামরিক ভোটার। যে কারণে কূটনীতিপাড়ায় বোঝাপড়া, দর-কষাকষি বা ক্যান্টনমেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষিত ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষ মোহাম্মদ আলী আরাফাতের বিকল্প এই আসনে নেই।

রাজনৈতিক বাস্তবতায় কাছে-দূরের শক্তিগুলো সব সময় অথর্ব শাসন বা অ-উন্নয়নের ধারা কায়েম রাখতে চায়। এতে তাদের নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষিত ও সুরক্ষিত থাকে। সেই দৃষ্টিতে মোহাম্মদ আলী আরাফাতের প্রতিপক্ষ প্রায় সব দুরভিসন্ধির চক্র। এ জন্য তার পাশে আমাদের সবার দাঁড়াতে হবে।

যারা দেশকে, মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিতে চায়, জাতিকে বিশ্বের কাছে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারবে তাদেরই সবার সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নেয়া উচিত ও বিজয়ী করা জরুরি।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে মনোনীত হয়েছেন। কাজেই এখন আমাদের দায়িত্ব তাকে বিজয়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরেকটি বিজয় উপহার দেয়া। আগামীর জন্য নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলা। দেশের রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুণগত পরিবর্তন এনেছেন। মানুষ এখন রাজনৈতিকভাবে অনেক সচেতন। এ কারণে অষ্টম শ্রেণি পাস কিংবা লোভের কারণে দেশের স্বার্থ বিক্রি করে দেবে এই ভেলকিতে ভোটাররা আর পড়তে চান না। দিন গেলে মানুষ ভালোকেই পেতে চান, প্রাধান্য দিতে চান। আর সে কারণেই তারা ঢাকা-১৭ আসনে মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে নির্বাচিত করবেন বলেই সবার বিশ্বাস।

একজন ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকের চোখে দেখলে মাঠে সবচেয়ে ভালো খেলোয়াড় কিংবা যে ভালো খেলতে থাকে তাকে প্রতিপক্ষ এমনভাবে ফাউল করে যেন সে আর দাঁড়াতে না পারে। এতে বহুমুখী কাজ হয়। এক ওই খেলোয়াড় তার ছন্দ হারায়, দুই টিম স্পিড দুর্বল হয়ে পড়ে। রাজনৈতিকভাবে ঢাকা-১৭ আসন এখন সেই ক্ষেত্রবিন্দু, যেখানে এন্টি আওয়ামী লীগরা এক হয়েছে জনগণের শক্তির ছন্দে বিঘ্ন ঘটাতে। কাজেই এখন প্রয়োজন সম্মিলিত উদ্যোগ ও সবার ঐক্যবদ্ধ শক্তির সমন্বয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন, কয়েকটি উপনির্বাচন ও পৌরসভা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই উপনির্বাচনটিও ভোটারদের ভোটদানের উৎসবে পরিণত হবে বলে বিশ্বাস করি। এই আসনের যারা সম্মানিত ভোটার, তাদের কাছে আবেদন- আপনাদের মূল্যবান ভোট, মূল্যবান সময় রাষ্ট্রের উন্নয়নের স্বার্থে ভোটকেন্দ্রে এসে প্রদান করবেন। এতে শুধু মোহাম্মদ আলী আরাফাত জয়ী হবেন না, জয়ী হবে গণতন্ত্রের শক্তি, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে।

লেখক : মোহাম্মদ ফায়সাল আহসান উল্লাহ – ক্রীড়া সংগঠক এবং যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ (কেন্দ্রীয় কমিটি)


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ