1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বদলে যাওয়া পঞ্চগড় এখন সমৃদ্ধ জেলা

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। পাঁচটি উপজেলা নিয়ে জাতীয় সংসদের দুটি আসন। হিমালয়কন্যা খ্যাত পঞ্চগড় এক সময় ছিল মঙ্গাপীড়িত। গত ১৫ বছরের উন্নয়নে এটি এখন একটি সমৃদ্ধ জনপদ। এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি সব সূচকেই হয়েছে অভূতপূর্ব অগ্রগতি।

এই সরকারের আমলে পঞ্চগড় জেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। প্রথম গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত জেলা এটি। রাজধানী ঢাকার পর প্রথম ক্যাশলেস যুগেও প্রবেশ করেছে। জেলার ৪৩টি ইউনিয়ন পরিষদের সব ধরনের লেনদেন এখন করা হয় অনলাইনে। এতে দুর্নীতি ও ভোগান্তি দুটোই কমেছে।

কৃষিসমৃদ্ধ এ জেলাটির সড়ক ও রেল যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। এক হাজার ৯৬ কিলোমিটার স্থানীয় সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি তিনটি স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস চালু হয়েছে। যেটি মানুষের যোগাযোগ স্থাপন, কৃষি উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বড় অবদান রেখেছে। চা উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় অবস্থানে এই জেলা। চা খাতে ২০০ কোটি টাকার বেশি বাণিজ্য হয়।

এ সরকার জেলার শিক্ষার হার ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে প্রায় ৭৪ শতাংশে উন্নীত করেছে। কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সারাদেশের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানির সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। দেশের একমাত্র রপ্তানিমুখী স্থলবন্দর হিসেবে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর এরই মধ্যে চালু হয়েছে। এভাবে সব সূচকেই অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে পঞ্চগড় জেলায়।

বাংলা উইকিপিডিয়া বলছে, বিগত ১০ বছরে পঞ্চগড়ে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে। এগুলো হলো- ১. বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর চালু ২. রাজধানী ঢাকার সঙ্গে তিনটি ও রাজশাহীর সঙ্গে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু ৩. পঞ্চগড় অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পঞ্চগড়ে অভূতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছে। ২০২২ সালের ২১ জুলাই এ জেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হয়েছে। ছিটমহলের জীবনমানের উন্নয়ন ও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। সমতলে চা চাষ, প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাপ্রসূত কর্মসূচি। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের চা উৎপাদনে দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা পঞ্চগড়।

তিনি বলেন, পঞ্চগড়ে আগামী এক মাসের মধ্যে দেশের তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্র করা হচ্ছে, এতে এখানকার সমতলের চা চাষিরা লাভবান হবেন এবং চা উৎপাদন আরও বাড়বে। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ- সব ক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছে পঞ্চগড়, যা হয়তো অনেকে না দেখলে বিশ্বাস করবে না। কারণ এক সময় পঞ্চগড়কে মানুষ অবহেলিত ও মঙ্গাপীড়িত হিসেবে জানতো। এখন সমৃদ্ধ জেলা পঞ্চগড়।

শিক্ষায় অগ্রগতি

১৯৭২ সালে পঞ্চগড় জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল ৩০০টি এবং ২০০৮ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ৩১০টিতে। এ সরকারের শতভাগ প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণ নীতি বাস্তবায়নের ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬৪টিতে। বর্তমানে পঞ্চগড়ে শিক্ষার হার ৭৪ শতাংশ, ২০০৮ সালে যা ছিল মাত্র ৪৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ২০০৬ সালে ঝরে পড়া প্রাথমিক শিক্ষার্থীর হার ছিল ১৭ দশমিক ০৮, যা বর্তমানে মাত্র ৩ দশমিক ৩ এ নেমে এসেছে। ছিটমহল বিনিময়ের পর এ জেলার আওতাধীন ৩৬টি ছিটমহলে নতুন করে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবায় এগিয়েছে অনেক

২০০৬ সালে পঞ্চগড় জেলার চার উপজেলায় ৩১ শয্যাবিশিষ্ট চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল ছিল। বর্তমানে জেলায় চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এছাড়াও জেলার একমাত্র ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালকে আটতলা বিশিষ্ট ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে।

শতভাগ বিদ্যুৎ

পঞ্চগড় জেলায় কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত না হলেও বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর নানামুখী উদ্যোগের ফলে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ থেকে নেসকো ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে এরই মধ্যে এ জেলার শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎসেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। ২০০৬ সালে মাত্র ৪৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল, যেখানে ২০২৩ সালে ১০০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে।

ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলা পঞ্চগড়

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ দেওয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অঙ্গীকার বাস্তবায়নে পঞ্চগড় জেলাই দেশের প্রথম জেলা হিসেবে শতভাগ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত জেলা হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। বর্তমান সরকারের গৃহীত অন্যতম প্রশংসিত উদ্যোগ আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের মাধ্যমে মোট চার হাজার ৮৫০ জন ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়ায় ২০২২ সালের ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী পঞ্চগড় জেলাকে দেশের প্রথম ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন।

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন

পঞ্চগড় জেলায় অবকাঠামো উন্নয়নে গত দুই দশকের কম সময়ে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন ৭২ কিমি রাস্তা প্রশস্তকরণের মাধ্যমে এশিয়ান হাইওয়ে-২ এর উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ২০০৮ সাল পর্যন্ত এলজিইডির আওতায় ৩০৫ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক নির্মিত হয়। পরবর্তীসময়ে ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে এলজিইডির মাধ্যমে ৭৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৬৯০টি পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়। ফলে এ জেলায় মোট পাকা সড়কের পরিমাণ হয় প্রায় এক হাজার ৯৫ কিমি। একইভাবে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলায় নির্মিত ব্রিজ/কালভার্টের সংখ্যা ছিল ৪৮৮টি (মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ হাজার ৬৮৫ মিটার)। পরবর্তীসময়ে ২০০৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সময়ে এলজিইডি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের মাধ্যমে আরও ৪৯২টি ব্রিজ/কালভার্ট (মোট দৈর্ঘ্য ১১ হাজার ৭৪২ মিটার) নির্মাণ করা হয়। ফলে মোট ব্রিজ/কালভার্টের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮০টি (মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২৩ হাজার ৪২৭ মিটার)।

এছাড়া এ জেলায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ভবন নির্মাণ করে ৩৭টি হাট-বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে।

রেল যোগাযোগ স্থাপন

২০০৮ সালের আগে পঞ্চগড় জেলার সঙ্গে সরাসরি ঢাকার ট্রেন চলাচল ছিল না। যে কয়েকটি সেক্টরের অভূতপূর্ব এবং স্মরণীয় পর্যায়ে উন্নয়ন হয়েছে, তার মধ্যে রেলওয়ে যোগাযোগ খাত অন্যতম। এ জেলায় রেলট্র্যাক নির্মাণ, রেল যোগাযোগে নতুন কোচ চালু, আধুনিক রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ ইত্যাদি খাতে বিগত ২০ বছরে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে পঞ্চগড়ের সঙ্গে অন্য জেলার আধুনিক রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য মোট ছয়টি ট্রেন চলাচল করছে। ২০১৯ সালে পঞ্চগড় জেলায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের নামে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন একটি রেলওয়ে স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়া হয়ে আন্তঃরাষ্ট্রীয় রেল যোগাযোগের জন্য আধুনিক রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ কাজ চলমান।

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ হাজার ২০ জন বয়স্ক ভাতাভোগী ছিল ২০০৮ সালে। ২০২৩ সালে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা প্রায় পাঁচগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ২০১ জন। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা ২০০৬ সালে পেতো ৬ হাজার ৭৪০ জন, ২০২৩ সালে তা চারগুণ বেড়ে হয়েছে ২৩ হাজার ৫৭১ জন। ২০০৬ সালে পঞ্চগড়ে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা পেতো ১ হাজার ২৭০ জন, বর্তমানে পাচ্ছে ১৬ হাজার ৫২৮ জন।

চা শিল্পে বদলে গেছে পঞ্চগড়

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার চোখেই ১৯৯৬ সালে প্রথম পঞ্চগড়বাসী সমতলে চা চাষের স্বপ্ন দেখেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালে এ জেলায় চা চাষের সূত্রপাত। ২০০৬ সালে চা আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৯২৫ একর, যা বর্তমানে ১৩ গুণ বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৭৯ একর। বছরে এ শিল্প থেকে প্রায় ২৮০ কোটি টাকা আয় হচ্ছে, যা চা খাতে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়। ২০০৮ সালে এ খাতে আয় ছিল এক থেকে দেড় কোটি টাকা। ২০০৯ সালে এ জেলার মোট চা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ৫৯ লাখ কেজি, যা ২০২২ সালে বেড়ে হয়েছে এক কোটি ৭৮ লাখ কেজি। পঞ্চগড়ের সমতলের চা শিল্পের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী এ জেলায় দেশের তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্র চালুর ঘোষণা দিয়েছেন, যা শিগগির উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর চার দেশের ব্যবসাকেন্দ্র

তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি বাংলাদেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর। যার মাধ্যমে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলমান। প্রতিদিন এ স্থলবন্দরে প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করে। ফলে প্রায় ৩৫ হাজার জনের জীবন-জীবিকায়ন এ বন্দরের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভর করে। ১৯৯৭ সালের দিকে প্রথম নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার্থে প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীসময়ে ২০১১ সালে ভারতের সঙ্গে এবং ২০১৭ সালে ভুটানের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালে এ বন্দরের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন চালু হয়। এ বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে পাথর, ভুট্টা, অয়েল কেক, আদা, গম, চাল, ফল ইত্যাদি এবং নেপাল ও ভুটান থেকে উৎপাদিত এবং বিভিন্ন

প্রক্রিয়াজাত পণ্য আমদানি করা হয়। এছাড়া দেশ থেকে পার্টস, গ্লাস শিট, ওষুধ, আলু, জুস, কটন ব্যাগ ও খাদ্যসামগ্রী রপ্তানি করা হচ্ছে। বর্তমানে এ বন্দরের কলেবর আরও ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে এটিকে একটি আধুনিক বন্দরে রূপান্তরের জন্য মাস্টার প্ল্যান নেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবায়ন চলমান।

ক্যাশলেস সেবায় এগিয়ে

সম্প্রতি পঞ্চগড় জেলার ৪৩টি ইউনিয়ন পরিষদে ‘ক্যাশলেস ইউপি সেবা সিস্টেম’ চালু হয়েছে। এতে মোবাইল ফোনে কিংবা কম্পিউটার থেকে ঘরে বসেই সেবা নিতে পারছেন সাধারণ নাগরিকেরা। এতে সময় বাঁচার পাশাপাশি নির্ধারিত ‘ফি’র বাইরে কোনো টাকা দিতে হচ্ছে না। ফলে হয়রানির শিকারও হতে হচ্ছে না।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদগুলো থেকে সেবাগ্রহীতাদের সেবামূল্য নগদে গ্রহণ বা রসিদ ছাড়া অর্থ গ্রহণের কারণে অনেক সময় সরকারি অর্থ তছরুপ হওয়ার আশঙ্কা থাকতো। সেবাগ্রহীতাদের দূর-দূরান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সনদ নিতে সময় অপচয় হতো। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রমকে প্রান্তিক পর্যায়ের জনসাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা এ ক্যাশলেস লেনদেনের উদ্যোগ নেন।

এতে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম তাকে দিকনির্দেশনা দিয়ে সহায়তা করেন। গত ৬ জানুয়ারি তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদে ক্যাশলেস সেবার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ধীরে ধীরে এ সেবা জেলার পাঁচটি উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়নে চালু হয়। এতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স, চারিত্রিক সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ভূমিহীন সনদ, উত্তরাধিকার সনদ, অবিবাহিত সনদ, বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়নপত্রসহ নানান সেবা নিজের মোবাইল ফোন থেকে নগদ ও বিকাশসহ অনলাইন পেমেন্টের যে কোনো মাধ্যমে ফি পরিশোধ করে সেবা নিতে পারছেন।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের ক্যাশলেস ইউপি সেবা সিস্টেম একটি অন্যতম উপাদান। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সময়, খরচ কমিয়ে মানুষ এখন ঘরে বসেই এই সেবা পাচ্ছেন। দেশের কোনো জেলা হিসেবে পঞ্চগড়েই এটা প্রথম।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত