1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জনশক্তি রফতানিতে বাংলাদেশের রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩

জনশক্তি রফতানিতে বাংলাদেশ রেকর্ড গড়েছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে বিদেশ গেছেন ৬ লাখ ১৭ হাজার কর্মী। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে গেছেন ১ লাখ ৯০ হাজার কর্মী। আর ৫১ হাজার জনশক্তি বিদেশে পাঠিয়ে একক জেলা হিসেবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে কুমিল্লা।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের শ্রম ও জনশক্তি রফতানি কার্যালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানে বিদেশে কাজে যেতে আগ্রহীদের প্রচণ্ড ভিড়। তারপরও প্রয়োজনীয় তথ্য নিবন্ধনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টার অপেক্ষা করছেন তারা। দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে ফরমও জমা দিচ্ছেন তারা। তাদের এ প্রতীক্ষার সুফল মিলছে জনশক্তি রফতানির প্রথম ছয় মাসের তথ্যে।

তথ্য বলছে, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রফতানি হয়েছে ৬ লাখ ১৭ হাজার। অবশ্য ২০২২ সালে পুরো বছরে এ সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ৩৫ হাজার। কাজেই বড় কোনো বিপর্যয় না ঘটলে বাকি ৬ মাসে আগের সব রেকর্ড ভাঙার আশাবাদ জনশক্তি রফতানি কার্যালয়ের। তাছাড়া সৌদি আরব, ওমান ও আরব আমিরাতের পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানিও কিছুটা বেড়েছে।

জনশক্তি রফতানিতে রেকর্ড হওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রামের শ্রম জনশক্তি রফতানি কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বছরের প্রথম ৬ মাসে আমাদের ৬ লাখের বেশি মানুষের দেশের বাইরে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আমাদের রেকর্ড সংখ্যক কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হবে।’

জনশক্তি রফতানিতে এখনও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে চট্টগ্রাম বিভাগ। এখানকার ৩ পার্বত্য জেলা ছাড়া বাকি ৮ জেলা থেকে রেকর্ড সংখ্যক শ্রমিক পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লা জেলা এককভাবে ৫১ হাজার ২৭ জনকে বিদেশে পাঠিয়ে শীর্ষস্থান অক্ষুণ্ণ রেখেছে।
 
এ বিষয়ে কুমিল্লার শ্রম জনশক্তি রফতানি কার্যালয়ের জেলা কর্মকর্তা দেবব্রত ঘোষ বলেন, এখানকার লোকজনের একটি ধারণা আছে যে, বিদেশ গেলে তাদের ভাগ্যে পরিবর্তন আসবে।
 
বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগসন্ধানী একজন জানান, ‘দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। তাই আমরা প্রবাসে যাওয়ার জন্য আগ্রহী। সেখানে গেলে আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে। টাকা-পয়সা আয় করে দেশে ফিরবো। পরিবার নিয়ে ভালো থাকতে পারবো।’
 
কিন্তু সরকারিভাবে তেমন কোনো সুযোগ না থাকায় শ্রমিকরা মূলত নিজেদের প্রচেষ্টায় শ্রমবাজারে যুক্ত হচ্ছেন। যে কারণে তারা বিদেশে তো যাচ্ছেন, তবে সেখানে রাজধানী কিংবা মূল শহরের পরিবর্তে তাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকায়। ফলে সেখান থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো কঠিন হওয়ায় এর পুরো সুযোগ নিচ্ছেন হুন্ডি ব্যবসায়ীরা।
 
তাহলে এক্ষেত্রে সমাধান কী হতে পারে? এর জবাবে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) চট্টগ্রামের কার্যালয়ের সাধারণ সাম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া একটি পরামর্শ  দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিদেশে প্রতিটি প্রদেশ বা অঞ্চলে আলাদা আলাদা করে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করার জন্য ব্যাংক বা কোনো মানি এক্সচেঞ্জকে দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। আর তাহলেই রেমিট্যান্সের প্রবাহে গতি আসতে পারে।
 
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, লাখ লাখ শ্রমিক বিভিন্ন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করেন। কাজেই সেখানে যদি ব্যাংকিং সিস্টেম জোরদার করা হয়, তাহলে রেমিট্যান্স আরও বাড়তে বাধ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে (২০২২-২৩) দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১৬১ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
 
সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের জুলাইতে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, আগস্টে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার, মার্চে ২০২ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ডলার, মে মাসে ১৬৯ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং জুনে এসেছে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার।
 
বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে তৈরি পোশাক খাতের পরেই রয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। প্রতি বছরই রেকর্ড পরিমাণ মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় গত ৬ মাসেও রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে দেশে রেমিট্যান্স আসছে না। সেক্ষেত্রে রেমিট্যান্স পাঠাতে কোথায় জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে, তা সরকারকেই খুঁজে বের করতে হবে, এমনটিই বলছেন অর্থনীতিবিদরা।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ