1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ : দুই বোন গ্রেফতার ও আদালতে প্রেরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২২

পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন নিজে ও তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এরমধ্যে তার দুই মেয়ে শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন ৬৪ কোটি। পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে গত ২৮ জুলাই দেশে আসেন তারা।

বুধবার ভোরে দুজনকে রাজধানীর ধানমন্ডি ও শ্যামলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ছিলেন পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী। কর্মরত থাকাকালে নিজে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে। পরে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে অর্থআত্মসাতের অভিযোগে এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

চলতি বছরের ৭ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির ঋণ খেলাপীদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করে হাইকোর্ট। পরে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গত ১৯ এপ্রিল আদালত তাদের গ্রেপ্তার করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়।

কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেপ্তার দুজন তাদের বাবা সাবেক পরিচালক খবির উদ্দিনের মাধ্যমে ঋণ নেয়। শারমিন ৩১ কোটি ও তানিয়া ৩৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তারা গত ২৮ জুলাই কানাডা থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং বুধবার পুনরায় গোপনে কানাডার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করছিল।

খন্দকার আল মঈন জানান, র‌্যাব জানতে পারে যে, প্রতিষ্ঠানের দুজন ঋণ খেলাপী বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। র‌্যাব এ ঋণ খেলাপীদের গ্রেপ্তার করতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর দুপুরে র‌্যাব তাদের হাইকোর্টে হাজির করে।

শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদের মুক্তির জন্য আদালতে শুনানির শুরুতেই প্রার্থনা করেন তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু তালেব। তিনি বলেন, শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদ দুইজনই নারী। তাদের উভয়ের শিশুসন্তান রয়েছে। এর মধ্যে একজন অটিজমে আক্রান্ত শিশুও রয়েছে। আদালতের কাছে দুই বোনের মুক্তির আবেদন করছি।

বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ তখন বলেন, আমরা কাউকে জেলে আটকে রাখতে চাই না। শাস্তি দিতে চাই না। কিন্তু আপনারা জনগণের টাকা নিয়ে কানাডায় পালিয়ে থাকেন। আপনাদের কেন খুঁজে বের করতে হবে? জনগণের টাকা ফেরত দিন। আমরা আপনাদের আটকে রাখব না।

এ সময় আদালত তাদের গ্রেপ্তার করে হাজির করার জন্য র‌্যাব সদস্যদের সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্যালুট জানাই, তারা এত কাজের মাঝেও এদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করেছে।

শুনানি শেষে হাইকোর্ট অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিনের দুই মেয়ে শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তির নির্দেশ দেন।

শর্তের মধ্যে রয়েছে, ৩০ দিনের মধ্যে পিপলস লিজিংয়ের পরিচালনা বোর্ডের কাছে তাদের কাছে মোট পাওনা প্রায় ১৯৭ কোটির মধ্যে ৫ শতাংশ ১০ কোটি টাকা জমা দিতে হবে। এ ছাড়া আজ দুই বোনসহ তাদের পরিবারের মোট ১১ জনের পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে। এরপর তারা র‌্যাবের হেফাজত থেকে মুক্তি পাবেন।

আদালতে দুই বোনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবু তালেব, পিপলস লিজিং পরিচালনা পর্ষদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান।

পরে অ্যাডভোকেট আবু তালেব বলেন, দুই বোন এরইমধ্যে তাদের পাসপোর্ট আদালতের কাছে জমা দিয়েছেন। তাদের পরিবারের বাকি ৯ জনের পাসপোর্ট র‌্যাবের কাছে জমা দিতে হবে। র‌্যাব আদালতের কাছে এ পাসপোর্ট জমা দেবে। পরিবারের ১১ জনের পাসপোর্ট জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত তারা র‌্যাবের হেফাজতে থাকবেন। এ ছাড়া দেশের বাইরে যেতে তাদের আদালতের অনুমতি নিতে হবে।

১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরবর্তীতে নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ২০১৯ সালে কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময় আদালত পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করে।

র‌্যাব জানায়, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৬ হাজার ব্যক্তি/শ্রেণীর আমানতকারী রয়েছে এবং বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীর প্রায় এক হাজার ৮শত কোটি টাকা আটকা পড়েছে। এই টাকার পুরোটাই পিপলস ঋণ হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা রয়েছে। এই অর্থের একটি বড় অংশ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা বিভিন্ন নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নেওয়া হবে।

 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ