1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ৯০ কিলোমিটার দৃশ্যমান

কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন এখন ৯০ কিলোমিটার দৃশ্যমান। নির্মাণকাজ বাকি আছে মাত্র ১০ কিলোমিটার। একইভাবে পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি এখন ৮৭ শতাংশ। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ শেষে ট্রেন পর্যটন নগরী কক্সবাজার যাবে এমন আশাবাদী প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

দোহাজারি-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে ৮৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১৩ শতাংশ কাজ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে পারবো বলে আশা রাখছি। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি অথবা শেষের দিকে এ রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করা হবে। বর্তমানে ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ৯০ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাকি ১০ কিলোমিটারের মধ্যে দোহাজারিতে তিন, সাতকানিয়ায় দুই ও লোহাগাড়ায় দুই কিলোমিটারসহ আরও কিছু স্থানে রেললাইন বসানোর কাজ বাকি আছে। কক্সবাজারে আইকনিক স্টেশনের কাজও শেষ পর্যায়ে। শুধু এ স্টেশনের ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি আছে। কাজ সম্পন্ন হয়েছে ছোট-বড় সবকটি ব্রিজ-কালভার্টের। তবে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত রয়েছে।’

প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘এ প্রকল্পের জন্য প্রায় এক হাজার ৪০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তবে এখনও অনেক ভূমির মালিক তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি বলে অভিযোগ করে তার জমিতে কাজ বন্ধ রাখে। এ কারণেও বিভিন্ন স্থানে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এতে প্রকল্পের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

এদিকে, দোহাজারি-রেললাইন প্রকল্পে বড় বাধা হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ কালুরঘাট সেতু। সেতুটি ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) থেকে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পরামর্শক দলের সুপারিশ অনুযায়ী সংস্কার করা হচ্ছে। এতদিন সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারি রেললাইনে ১০ টন ভারী ইঞ্জিন চলাচল করতো। সেতু পার হওয়ার সময় গতি থাকতো সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। তবে কক্সবাজারগামী ইঞ্জিনের ওজন হবে ১২-১৫ টন। ট্রেনের গতি হবে ৮০-১০০ কিলোমিটার। এ কারণে সেতু সংস্কার ছাড়া দোহাজারী-কক্সবাজার রেল যোগাযোগের সুফল মিলবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘কালুরঘাট রেলওয়ে সেতু সংস্কারে তিন মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদারি সংস্থা। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া সংস্কার কাজ শেষ হবে আগামী ৩১ অক্টোবর। এই তিন মাস সেতু দিয়ে যানবাহন এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।’

দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ১০০ কিলোমিটার রেলপথে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনসহ মোট স্টেশন থাকছে ৯টি। বাকি আট স্টেশন হলো– দোহাজারি, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ ও রামু। এসব স্টেশনের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। এ রেললাইনে সাঙ্গু, মাতামুহুরী, ডলু, ঈদগাঁও ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ছয়টি বড় রেল সেতু। এ ছাড়া এই রেলপথে নির্মাণ করা হয়েছে ৩৯টি ছোট-বড় সেতু, ২০১টি কালভার্ট এবং ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং।

সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় তৈরি হচ্ছে একটি ফ্লাইওভার। রামু, সাতকানিয়া ও কক্সবাজার লিংক রোডে নির্মাণ করা হচ্ছে তিনটি হাইওয়ে ক্রসিং। হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চলাচলে ৫০ মিটারের একটি ওভারপাস ও তিনটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে নির্মাণ করা হচ্ছে ঝিনুক আকৃতির দৃষ্টিনন্দন রেল স্টেশন। যা দেশের একমাত্র আইকনিক রেল স্টেশন। কক্সবাজার ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর এই স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজ প্রায় ৮৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। স্টেশনটিকে সৈকতের ঝিনুকের আদলে তৈরি করা হচ্ছে। স্টেশন ভবনটির আয়তন এক লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয়তলা ভবনটির বিভিন্ন অংশে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে।

ভবন ঘেঁষে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১২ মিটার প্রস্থের তিনটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে। স্টেশনের পাশেই রেলওয়ের আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে আটটি ভবনের নির্মাণকাজ চলমান আছে। স্টেশনটিতে আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি ক্যান্টিন, লকার, গাড়ি পার্কিং ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারাদিন সমুদ্রসৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন। এই স্টেশন দিয়ে দিনে ৪৬ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারি-রামু-কক্সবাজার ও রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের প্রায় সাত বছর পর ২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ এবং সিঙ্গেল ট্র্যাক রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। দোহাজারি থেকে কক্সবাজার রামু পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ