1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আমাদের নোবেলম্যান ও কিছু কথা

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গত কয়েকদিন ধরেই একসময় যাকে মিয়ানমারের পুর্নজাগরণের নেতা বলা হত সেই অং সান সুচির কথা মনে পড়ছে। যিনি মিয়ানমারে কয়েক দশক ধরে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। যিনি তার দেশের মানুষকে সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতি সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে উঠে এক অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখাতেন। অথচ সেই সুচিই কিনা তার দেশে নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু ও মুসলিমদের সাথে ঘটে যাওয়া সহিংসতা,নিপীড়ন, নির্যাতন উপেক্ষা করেছিলেন। জাতিসংঘ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন পাঠাতে চাইলে সেটির উপর তিনি নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল এ কেমন শান্তির দূত? তিনি একজন নোবেল বিজয়ী। আমাদেরও একজন নোবেল বিজয়ী আছেন। যদিও তাকে আমাদের বলতে কেমন অস্বস্তি হচ্ছে। তিনি বরাবরই পরদেশমুখী। আমাদের সংকট, উল্লাস বা জাতিগত কোন চেতনাবাহী কর্মে তার অনুপস্থিতি গভীরভাবে পরিলক্ষ্যিত হয়। কেমন জানি ” তোমার দেখা নাইরে তোমার দেখা নাই “। তবু্ও আমরা জনতা জর্নাদন তাকে সম্মান করি! কিন্তু মুর্হুতেই বিস্ময় জাগে তার কর্মকান্ডে। তার ব্যাপক সম্মোহনী ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তার কর্মকান্ড স্বাভাবিক কিছু প্রশ্নের জন্ম দেয়। বলছি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস প্রসঙ্গে। তাকে নিয়ে তর্ক –বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনা, জল্পনা-কল্পনা, রাজনীতিকরণ –বিকরণ সহ জল ঘোলা হয়েই চলছে । জনমানসে কিছু প্রশ্ন থেকেই যায় ।

গ্রামীণ নারীদের উন্নয়নের কথা বলে ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছ গ্রামীণ টেলিকমের অনুমতি নিয়েছিলেন। পল্লীফোন নামে একটি মুঠোফোন নেওয়া হয়েছিল। যার শুরু হয় ০১৭৫১ ডিজিট দিয়ে? প্রশ্ন হল সেই পল্লীফোন কোথায়? সেই গ্রামীণ টেলিকমের মালিকানা কাদের? এর থেকে প্রাপ্ত কর কি রাষ্ট্রকে দেওয়া হয়েছে? সেই ফোনের সুবিধাভোগী কারা? যাদের (গ্রামীণ নারী গোষ্ঠী) কথা বলে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল আদৌও কি তাদের কাছে সেই সুফল পৌঁছেছে?

গ্রামীণফোন, এই প্রতিষ্ঠানটি সাথে গ্রামীণ ব্যাংকের নাম, প্রভাব, অর্থ প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত এবং এই গ্রামীণফোনের যাত্রা শুরুই হয় গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের ওপর ভর করেই। পুজিঁহীন, অসচ্ছল, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হাতে মোবাইল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পের কথা বলে কর মওকুফসহ রাষ্ট্রীয় নানা সুবিধাও তারা গ্রহণ করে। প্রথম দিকে গ্রামীণফোনের লোগো ছিল গ্রামের কিষান- কিষাণীর। এখন প্রশ্ন হল, যে গরীব মানুষের কথা বলে এই ফোন নেওয়া হল সেটির সুফল কতখানি সেই জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছেছে? আর নোবেল প্রাপ্তির পর কেনই বা গ্রামের কিষান- কিষানীর লোগো পাল্টে টেলিনরের লোগো যুক্ত করতে হল? উঁচুদরের মানুষের এমন নীচতা কি প্রশ্নের বাইরে থেকে যাবে?

গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি যখন তাদের রির্টান জমা দিতে গিয়েছে চাইনিজ কোম্পানি আরজেএসসি’ র কাছে তখন সেখানে বলা ছিল গ্রামীণ টেলিকম হবে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। অথচ রির্টানে দেওয়ার কথা লাভজনক প্রতিষ্ঠান অলাভজনক নয়। এর বাইরে এখান থেকে লভ্যাংশ নিয়ে গ্রামীণ কল্যাণ নামে আরেকটি তহবিলে টাকা দেওয়া হয়েছে। ট্রাস্টের জায়গা থেকে যখন কোম্পানি হল, সেই কোম্পানির যে কাঠামো সেখানে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল আরজেএসকে। যেটি বাংলাদেশের কোম্পানি আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। যা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যার সাজা নূন্যতম ৫ বছর। ডঃ ইউনুস কি করে এই আইন লংঘন করলেন? কেনই বা মিথ্যা তথ্য দিলেন? তিনি না নোবেল লরিয়েট!

গ্রামীণ ব্যাংকের কাঠামো অনুযায়ী আজীবন এমডি থাকা সম্ভব নয়। গ্রামীণ ব্যাংক কোন বেসরকারি ব্যাংক নয় কোন এনজিও নয় । এটি সংবিধিবদ্ধ সরকারী ব্যাংক। এটি একটি বিশেষ আইনে নিবন্ধিত। সেই আইনের ড্রাফট ডঃ কামাল হোসেনের এ্যাসোসিয়েশন থেকে তার( ডঃ ইউনুস ) পছন্দমতোই হয়েছে। সরকার কিন্তু করেনি। সেখানে নিজের মর্যাদা চেয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের এমডিদের সমকক্ষ পদ ও মর্যাদা তিনি ভোগ করবেন। তাহলে বিধিবদ্ধ নিয়ম অনুযায়ী অন্যান্য ব্যাংকের এমডিদের মতো তারও চাকরির সময় ও বয়স সুনির্দিষ্ট। তাহলে কি করে সারাজীবন এমডি পদ ও মর্যাদা ভোগের প্রত্যাশা করেন? এটি সুস্পষ্ট আইন লংঘন নয় ?

আবার গ্রামীণ ব্যাংক প্রচারিত হয়েছে একজন ব্যক্তি বিশেষের ব্যাংক হিসেবে। অথচ গ্রামীণ ব্যাংকের কাঠামো অনুযায়ী সরকারের আইনগত অধিকার আছে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার ।এই ব্যাংকে যে সরকারের অংশ আছে কেন এই তথ্য গোপন করা হয়েছে ? কেনই বা ব্যক্তি বিশেষের ব্যাংক হিসেবে বিভ্রাান্তকর প্রচারণা করা হয়েছে ?

তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের সার্বক্ষণিক বেতনভুক্ত ইমপ্ল্যোয়ি। গ্রামীণ ব্যাংকের অফিস, জনবল,তাদের কর্মঘণ্টা, রির্সোস, গ্রামীণের নাম, ঠিকানা ব্যবহার করে গ্রামীণ নাম দিয়ে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন যেখানে গ্রামীণ ব্যাংকের কোন মালিকানা নেই! কিভাবে একজন বেতনভুক্ত ইমপ্ল্যোয়ি এটি করতে পারেন? নৈতিকতার চূড়ান্ত স্খলন এটি নয় কি? এতো উচ্চ নৈতিকতার বিবেচনায় থাকা মানুষ কিভাবে এটি করতে পারেন?

নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পর নোবেল প্রাইজ মানির ট্যাক্স না দেওয়ার জন্য বিদেশী তদবির করে তৎকালীন এনবিআরের চেয়ারম্যানের উপর কেন চাপ প্রয়োগ করেছিলেন? নৈতিক ভাবে কি এটি সমর্থনযোগ্য?

হঠাৎ করেই পশ্চিমা বিদেশী শক্তি ডঃ ইউনুসকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে এত আগ্রহী হয়ে উঠল কেন? ১/১১ এর মতো ষড়যন্ত্রের কূটচালে একটি পুতুল সরকার বসিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কায়েম করার কি নতুন কৌশল এটি?

যে শতাধিক ব্যক্তি ডঃ ইউনুসের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন তারা কেন কেউ তাদের নিজস্ব টুইটার, ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের যে ভারিভাইড এ্যাকাউন্ট আছে সেখান থেকে বিবৃতি দিলেন না? অভিযোগ যখন উঠেছে,প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে কারো কর্মকান্ড, সেইসাথে বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে সেখানে আত্মবিশ্বাসের সাথে মোকাবিলা করাটাই তো যুক্তিযুক্ত। বিদেশীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি কি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ করার অপচেষ্টা নয় কি? বিশ্ববরেন্য বা ক্ষমতাধর ব্যক্তি হলেই কি তার কর্মকে প্রশ্ন করা যাবে না?

ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এই মূল দাবির মোড়কে গ্রামীণ ব্যাংক তার যাত্রা শুরু করে। গ্রামীণ ব্যাংকের ওয়েবসাইট ও তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্যের তালিকায় মুনাফা অর্জনে সাফল্যের হার শীর্ষ স্থানে এবং দারিদ্র্যসীমার ওপরে ঋণগ্রহীতাদের নিয়ে আসার হার সর্বনিম্নে। এ যেন উল্টো যাত্রা। পরিশেষে লামিয়া করিমদের মতো সাধারণ নারীদের নাকছবি, মুরগি,ঘরের টিন, ঘটি বাটি বিক্রি করে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়েছে। তাহলে মুনাফা অর্জন কি মূল লক্ষ্য? একজন নোবেল লরিয়েট যিনি সমাজে সুধীজন হিসেবে পরিচিত তিনি বাস্তবে কিভাবে সুদী মহাজন হতে পারলেন?

ক্ষুদ্র ঋণ বা মাইক্রোক্রেডিট প্রক্রিয়া বৃহৎ পু্ঁজি বিনিয়োগকারীদের জন্য এক সম্ভাবনাময় বাজার যা ইতিমধ্যেই বৃহৎ বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে প্রচুর মূলধন সংবর্ধন করেছে। বহুজাতিক পুঁজির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ও পুঁজিপতিদের কাছে বৃহৎ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি সফল ও যুগান্তকারী মডেল হতে পারে স্বাভাবিকভাবেই । পুঁজিবাদী, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাকে ধন্য ধন্য করতেই পারে। কিন্তু দারিদ্র্য বিমোচন ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতে এটি সর্বেসর্বা তা ভ্রান্ত। তাহলে এই সাধারণ,দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নাম করে বিভ্রান্তি কেন? সেই সাথে দারিদ্র্যকে বিশ্ববাজারে বিক্রি করে বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন তত্ত্বের হাওয়াই মিঠাই এ ভুলে দারিদ্র্যকরণের প্রাতিষ্ঠানিক কি চাই আমরা??

লেখক : নবনীতা চক্রবর্তী – শিক্ষক, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসির্টি


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত

পশ্চিম তীরের সহিংসতাকারীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা

দুর্নীতির আরও ৫ নতুন অভিযোগ সু চির বিরুদ্ধে

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কোনও দেশে আশ্রয় না দিতে জাতিসংঘে প্রস্তাব তুলবে বাংলাদেশ 

জাতীয় সংগীতের প্রতি এতো অবজ্ঞা অন্য দেশে নেই

কচুরিপানা থেকে তৈরি হচ্ছে জৈবসার, ‘জলকমলে’ আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

সংকট মোকাবিলায় বৈশ্বিক সংহতি ও ছয় দফা প্রস্তাব শেখ হাসিনার

দৃশ্যমান হলো বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর প্রথম স্প্যান

আরও ৫০ পয়সা বাড়লো ডলারের দাম

ঝুঁকিপূর্ণ লক্ষ্মীপুর-ভোলা লঞ্চ রুট, মানা হচ্ছে না নিষেধাজ্ঞা

ফুটবলে অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জয়