1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

রাজাকারপুত্ররা এখনও পূর্বপুরুষের কুকর্মের উত্তরাধিকার হতে চায়

হায়দার মোহাম্মদ জিতু : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২

রাজনীতির একটা নৈতিক চরিত্র আছে। এর উদ্দেশ্য, দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদন করা। কিন্তু দুর্ভাগ্য এখানে এখনও কেউ কেউ তার শেকড় অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের চিন্তাকে পাশ কাটিয়ে মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাসবাদী পাকিস্তানি ভাবধারা কায়েমের খায়েশ পোষেন। অবশ্য এখন আর ‘পোষেন’ কথাটা বলা যায় না। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বিষয়টি প্রকাশই করে ফেলেছেন।

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দেশ এখন বিশ্বের সব উঠতি রাষ্ট্রের জন্য উদাহরণ। পাকিস্তানের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সে দেশে ক্ষমতা গ্রহণের পরপর নিজের দেশকে সুইডেনের মতো গড়ে তুলবেন বলে মত প্রকাশ করেন। এর পাল্টা হিসেবে সেখানকার টেবিল-টকশোগুলোতে বলা হয় সুইডেন, সুইজারল্যান্ড নয়, পাকিস্তানকে বাংলাদেশের মতো করে দাও। এর কারণ বাঙালির শান্তসাহস শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বিস্ময়কর অবস্থানে পৌঁছেছে।

ইতিহাস বিচারে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময়টায় ক্ষমতার লোভে রাজনৈতিক নেতা ভুট্টো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাশ কাটিয়ে সামরিক বাহিনীর সাথে আঁতাত করেছিলেন। কৌশল ছিল, সেনাবাহিনীকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সরিয়ে গণতন্ত্রকামী জনতার কাছে সেনাবাহিনীকে ভিলেন বানানো। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুকেও শেষ করে দেওয়া। কিন্তু ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে তিনি বেশিদূর যেতে পারেননি। জীবদ্দশায় ভুট্টো ফাঁসিতে ঝুলে তা পেয়েছেন এবং এখন গোটা পাকিস্তান পাচ্ছে। বারবার ক্যু, হত্যা সবই পাকিস্তানের ট্রেডমার্ক। শুধু তা-ই নয়, আজ পর্যন্ত সেখানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনও সরকার ক্ষমতার মেয়াদ পূরণ করতে পারেনি।

বিএনপির মহাসচিব ফখরুল সাহেব এসব স্মরণ না করেই হয়তো বলে ফেলেছেন, পাকিস্তান আমলেই ভালো ছিলাম। বলতেই পারেন, কারণ পাকিস্তানের ‘বি টিম’ হিসেবে ক্ষমতায় বসতে বারবারই সেদিক থেকে সহযোগিতা পেয়ে আসছেন। এই তো ১৯৯১ সালেও পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা থেকে যে বিএনপি অনুদান পেয়েছিলেন সেটা সেখানকার খোদ গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান স্বীকার করেছেন।

‘অনুদান’ শব্দটির মাঝে এক ধরনের গিমিক ও চালাকি আছে। পাবলিকলি একে সহযোগিতা মনে হলেও এটা মূলত এক ধরনের ধারকর্য বা বিনিয়োগ। কাজেই পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক অনুদানের বিষয়টিকে এখন সামনে আনা জরুরি। কারণ, এর ওপর ভর করে সেসময় বিএনপি ক্ষমতায় বসেছিল। আর তাতে সহায়ক হিসেবে ছিল যুদ্ধাপরাধী জামায়াত। কাজেই ক্ষমতায় থাকাকালীন ফখরুল সাহেবরা সেই মনিবদের বিশেষ কী সুবিধা দিয়েছিলেন সেটাও জনগণের সামনে আনা আবশ্যক। অবশ্য মোটা দাগে এর একটা হিসাব আছেও, তা হলো দেশে মৌলবাদী চিন্তা, সাম্প্রদায়িক আচরণ, কুসংস্কারের জোয়ার ও প্রতিবেশী দেশের সীমান্তবর্তী স্থানে স্থানে অরাজকতা সৃষ্টির জোরালো প্রয়াস দেখা গিয়েছিল।

এর বাইরে বৈশ্বিক রীতি রেওয়াজের তোয়াক্কা না করে পাকিস্তানি জেনারেল জানজুয়ার মৃত্যুতে বেগম খালেদা জিয়ার শোক প্রকাশের বিষয়ও ছিল। যা ওই সময়কে বিব্রত করে। কারণ, তখনও খোদ পাকিস্তানই শোক প্রকাশ করেনি। পরাজিত জেনারেলদের জন্য স্বভাবতই শোক অপ্রকাশিত থাকে। উল্টোদিকে মুক্তিযুদ্ধে জাতিকে অসম সহযোগিতাকারী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের জেনারেল অরোরার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ প্রায় উহ্যই রয়ে গিয়েছিল।

এই বিষয়টি দিয়েও মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য উপলব্ধি করা যায়। অর্থাৎ দলের অপ্রকাশিত ম্যানিফেস্টো, দলীয় প্রধানের প্রীতি এবং নিজের উত্তরাধিকার তাকে পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলেন এমন মন্তব্য করতে উৎসাহিত করেছে, নিজের অনুভূতি প্রকাশে উদ্বুদ্ধ করেছে। তামাশার বিষয়, এমন মন্তব্যের বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনও জোরালো আওয়াজ ওঠেনি! অবশ্য এটিকে দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। এক, এদের আচরণ সম্পর্কে জনগণের জানা হয়ে গেছে। দুই, এদের কাছ থেকে জনগণ এর চেয়ে বেশি কিছু আশাই করে না।

ভুলে যাওয়া জাগতিক নিয়মের অংশ। ভালো থাকার জন্য এই গুণটির বিশেষ প্রয়োজন। কর্ম-শৌর্যে শেখ হাসিনার অদম্য নেতৃত্বে দেশ এখনও ভালো থাকার ধারাবাহিকতায়। অবিকল্প এই পথে এখনই সত্যকে আলিঙ্গন করতে হবে। জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে যারা বিরোধিতা করেছিল ও তাদের বংশধরদের প্রকৃত চরিত্র। তাহলে জনগণ বুঝে যাবে, এত রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়া দেশকে উপেক্ষা করে কেন রাজাকারপুত্ররা এখনও বাপ-দাদার কুকর্মের উত্তরাধিকার হতে চায়, গুণকীর্তন করে।

লেখক : হায়দার মোহাম্মদ জিতু – প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। haiderjitu.du@gmail.com


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ