1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

খাদ্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকারের নানামুখী উদ্যোগ

বানিজ্য প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২২

করোনা মহামারি, ডলার সংকট ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পার করছে কঠিন সময়। ভবিষ্যতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকার খাদ্যপণ্যের সরবরাহ ও মজুত বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগও গ্রহণ করা হচ্ছে। খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের চতুর্থ সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে সভায় চাল, চিনি, পেঁয়াজ, গম, আটা, ময়দা ও সয়াবিন তেলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় চিনির চাহিদা, উৎপাদন ও আমদানি নিয়ে আলোচনা হয়।

সভা সূত্রে জানা গেছে, গ্যাসের অভাবে পরিশোধন কারখানাগুলো চিনি উৎপাদন করতে পারছে না। দেশে চিনির উৎপাদন কমে গেছে। এ জন্য চিনির দাম বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে গ্যাসের সমস্যা কিছুটা সমাধান হবে। এতে চিনির দাম কমে যাবে। সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জ্বালানি বিভাগের সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে চেষ্টা-তদবির করা হচ্ছে বলে সভায় জানানো হয়েছে।

সভায় আরও জানানো হয়, চিনির চাহিদা প্রতিমাসে সাত হাজার মেট্রিক টন। এর ৬৬ শতাংশ উৎপাদন করা গেলেও চাহিদার ৩৪ শতাংশ ঘাটতি থাকছে। এ কারণেই চিনির বাজারে অস্থিরতা। যা কাটানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

সূত্র জানিয়েছে, সরবরাহে ঘাটতি থাকায় দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। আগে ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করা গেলেও যুদ্ধের প্রভাবে তা করা যাচ্ছিল না অনেক দিন। এখন ইউক্রেন থেকে গম আমদানির অনুমতি পাওয়া গেলেও জাহাজ ভাড়া না পাওয়ায় আনা যাচ্ছে না। এর প্রভাব পড়ছে গমের বাজারে। তবে রাশিয়া থেকে গম আসা শুরু হলে সংকট কেটে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার ব্যবসায়ীদের নানামুখী সুবিধা দিয়ে কানাডা থেকে গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। তবে খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে। বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম কমলেও দেশের বাজারে সে রকম প্রভাব পড়ছে না। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যে পরিমাণ গম আমদানির কথা ছিল সেখানে একটু ঘাটতি দেখছি। ইউক্রেন-রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিলে গম সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তবে আমাদের ব্যবসায়ীরা এই বাজারে সমস্যার জন্য অন্য বাজার থেকে গম কেনা শুরু করেছেন। যদিও দাম একটু বেশি পড়ছে। কানাডা থেকে আসছে, তাদের মানও ভালো। এই বাজারটা স্বাভাবিক হলে আমাদের কোনও সমস্যা থাকবে না। এর বাইরেও দেশের একটি বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের একটি জাহাজ তুরস্কে গম নিয়ে আটকে ছিল। সেটা এরইমধ্যে রওনা হয়েছে। সেখানে ৫৫ হাজার টন গম রয়েছে। এই জাহাজটি দেশে এলে গমের সরবরাহ অনেকটাই ঠিক হয়ে যাবে।

দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে গত দুই-তিন দিনে ডালের দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে। টিসিবির মাধ্যমে নির্ধারিত দামে দেশের এক কোটি পরিবারের কাছে ডাল বিক্রি করা হলেও এই সুবিধার বাইরে রয়েছে আরও অনেক মানুষ। ডালের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। সে কারণেই দাম কিছুটা বেড়েছে। ট্যারিফ কমিশন বিষয়টি দেখছে বলেও জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে সে প্রভাবটা দেশে এসে পড়েছে বলে দাবি করছেন সরকার সংশ্লিষ্টরা।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারি বিক্রয়কারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর জন্য ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সরকারের খরচ হবে ১৫৮ কোটি ৪০ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ টাকা। এরমধ্যে ৮৯ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে সয়াবিন তেল এবং ৬৮ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে কেনা হবে মসুর ডাল।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্য বাড়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তবে প্রত্যেক মানুষের জীবনে ভালো ও মন্দ সময় থাকে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সরকারের পক্ষ থেকে যেকোনও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

অপরদিকে গত বুধবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন অ্যাকাডেমিতে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমেরিকা, ইউরোপ, ইংল্যান্ডসহ প্রত্যেকটা দেশ এখন অর্থনৈতিক মন্দার কবলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না, খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে, সেখানে সব জায়গায় রেশনিং করা হয়েছে। এমন একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি বহু আগে থেকেই এটা বলে যাচ্ছি যে এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। কারণ, আমাদের নিজের খাদ্য নিজেদেরই উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার জন্য শিল্পায়ন দরকার এবং দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ