1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

উদ্বোধনের অপেক্ষায় এশিয়ার বৃহত্তম দৃষ্টিনন্দন ‘আইকনিক রেলস্টেশন’

ডেস্ক রিপোর্ট : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কাছাকাছি নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম এবং এশিয়ার বৃহত্তম দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন। ঝিনুকের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে এর অবকাঠামো। এখানে রয়েছে তারকা মানের হোটেল, শপিংমল, কনভেনশন সেন্টার, রেস্টুরেন্ট, শিশু যত্নকেন্দ্র, লাগেজ রাখার লকারসহ অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। এরই মধ্যে রেলস্টেশনটি বিদেশিদের প্রশংসা কুড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আক্ষরিক অর্থে ঝিনুক না হলেও সমুদ্র দেখতে এসে ট্রেন থেকে নেমেই প্রথম দর্শনেই সামুদ্রিক আবহ পাওয়া যাবে গোটা স্টেশনে। কেবল আসা-যাওয়ার জন্যই হয়নি এ স্টেশন, দেয়া হয়েছে এর বহুমাত্রিক রূপও। নান্দনিক ডিজাইন আর নির্মাণশৈলীর পাশাপাশি এর বহুমাত্রিক পরিধি নিয়ে গড়ে উঠা এ স্টেশন পরিণত হয়েছে দর্শনার্থীদের বিনোদনের নতুন গন্তব্য।

সরেজমিনে দেখা যায়, চোখধাঁধানো আইকনিক এ স্টেশনের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে চারপাশে ব্যবহার করা হয়েছে কাচ; ছাদের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল ক্যানোফি। ফলে দিনের বেলা ব্যবহার করতে হবে না বাড়তি আলো। আর আধুনিক নির্মাণশৈলীর কারণেই একে বলা হচ্ছে গ্রিন স্টেশন। একই সঙ্গে সুবিশাল চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতলা থেকে নামতে হবে ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে। আর আসার যাত্রীরা বের হবেন নিচ থেকে। যার জন্য প্রস্তুত চারটি চলন্ত সিঁড়ি। স্টেশনের ভেতরেই রয়েছে সাতটি টিকিট কাউন্টার। আর চাইলেই নির্দিষ্ট লকারে ব্যাগ রেখে পর্যটকরা ঘুরে আসতে পারবেন পুরো শহর।

আইকনিক এ স্টেশনের স্থপতি মো. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘কক্সবাজার রেলস্টেশন ডিজাইন করার সময় একটা অনুপ্রেরণা নিয়েছি। ঝিনুক ও শামুকের গঠনটা বাহিরে থাকে, আর বাকি শরীরের অংশটুকু ভেতরে আবৃত থাকে। আমরা সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে পুরো রেলস্টেশনটাকে একটা ছাউনি দিয়ে ঢেকে দিয়েছি।’

ফয়েজ উল্লাহ আরও বলেন, চারদিকে গ্লাস লাগানো হচ্ছে। এখানে কোনো কৃত্রিম আলোর প্রয়োজন নেই। এছাড়া ছাউনিটা পুরো কাঠামোটাকে ঢেকে রেখেছে। ফলে সব সময় ভবনটি সহনীয় তাপমাত্রায় থাকবে। এতে কুলিং লোড কম হবে। ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের লোডও কম হবে। এতে এখান থেকে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

তিনি আরও বলেন, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, প্রকল্পটি পরিবেশগতভাবে টেকসই হিসেবে ডিজাইন করা। এখানে বৃষ্টির পানি থেকে শুরু করে পানি পুনর্ব্যবহার করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া পুনর্ব্যবহৃত টেকসই উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। পানির জন্য কম অপচয় ওয়াটার ফিকশ্চার ব্যবহার করা হয়েছে। নানা রকম সুযোগ-সুবিধা আছে এখানে। বলা যায়, এ বিল্ডিংটা একটা পরিপূর্ণ গ্রিন বিল্ডিং।

স্টেশনটি নির্মাণে ব্যবহার হয়েছে বিশ্বমানের সরঞ্জাম। নানা জটিলতা পেরিয়ে পরিপূর্ণতা পেয়েছে ভবনটি। আর রেলস্টেশনটি বিদেশিদের প্রশংসা কুড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে আইকনিক এ রেলস্টেশনটি। ভবনটির নির্মাণ ছিল অত্যন্ত জটিল। যেমন যে স্টিলগুলো দেখা যাচ্ছে, এ স্টিলগুলোর না যত দাম, এটা তৈরি করতে তার চেয়ে চার গুণ বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা টাকার দিকে তাকাইনি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও এক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে।’

ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, কক্সবাজারে নির্মিত আইকনিক এ রেলস্টেশনটি দেখে মুগ্ধ এডিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাদের একজন বলেছেন, এ রকম সুন্দর ও নান্দনিক আইকনিক রেলস্টেশন বিশ্বে আর কোথাও নেই। এটা দেখে অন্যান্য দেশেও এ রকম আইকনিক ভবন নির্মাণ করবেন।

রাজধানী থেকে রাতের ট্রেন ধরে সকালে কক্সবাজারে পৌঁছে পর্যটকরা লাগেজ বা মালামাল স্টেশনের লকারে রাখতে পারবেন। সারা দিন সমুদ্রসৈকত বা পর্যটন স্পট ঘুরে রাতের ট্রেনে আবার ফিরতে পারবেন নিজ গন্তব্যে। এখন আইকনিক রেলস্টেশনটি প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে ভ্রমণপিপাসুদের প্রত্যাশা পূরণ হবে বলছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

আইকনিক রেলস্টেশন প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ম্যানেজার আবদুল জাবের মিলন বলেন, সমুদ্রসৈকত থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা এলাকায় ২৯ একর জমিতে ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এ স্টেশন। এটি নির্মাণে চীন, বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড ও ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন আধুনিক স্টেশনের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পটিতে ছয় শতাধিক লোক কাজ করছে। চার বছরের বেশি শ্রমে আইকনিক রেলস্টেশন ভবনটি এখন দৃশ্যমান। এখন কেবল প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষা।

কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, যাত্রী অপারেশনে প্রস্তুত নান্দনিক নির্মাণশৈলীর বিশ্বমানের চোখধাঁধানো আইকনিক রেলস্টেশন, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। মূলত আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে উদ্বোধন করবেন কক্সবাজারবাসীর বহু কাঙ্ক্ষিত দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন। এরপর তিনি মহেশখালীতে গিয়ে জনসভায় বক্তব্য দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এবারের জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার লক্ষ্য।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ