1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সাড়া ফেলছে কৃষকের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২

কৃষকরা নিজেদের উৎপাদিত শাক-সবজি ও ফল-মূল এখন ঢাকাসহ কয়েকটি নগরীতে বাজার বসিয়ে বিক্রি করছেন। এসব বাজারের নাম দেওয়া হয়েছে কৃষকের বাজার। আর নগরের মানুষ বাজারগুলো থেকে বিশুদ্ধ পণ্য কিনতে পেরে খুব খুশি। সরাসরি গ্রাহকের কাছে নিজের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পেরে কৃষকরাও লাভবান। এই বাজারগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে এ ধরনের বাজার বসিয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। এই কাজে অর্থায়ন করেছে-জাতি সংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে ইতোমধ্যে ১৬টি কৃষকের বাজার গড়ে উঠেছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা-ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট (ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট) বাজারগুলো পরিচালনা করছে। এর বাইরে কৃষি ও বিপণন অধিদপ্তরের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় একটি এবং পল্লবীতে একটি বাজার পরিচালনা করছে।

এ প্রসঙ্গে ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, মূল প্রকল্পে নগর কৃষি, রুপটপ গার্ডেন, কাঁচাবাজার ব্যবস্থাপনা ও কৃষকের বাজারসহ বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কৃষকের বাজার কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করছে ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট।

তিনি বলেন, এই প্রকল্পের বাইরে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরও ঢাকায় দুটি বাজার পরিচালনা করছে। এই বাজারগুলোতে ১০ জন করে কৃষককে বসানো হয়েছে। তাদের উৎসাহিত করতে প্রাথমিকভাবে কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পরে এর দায়িত্ব সিটি করপোরেশন, কাউন্সিলর বা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে গ্রহণ করতে হবে। বাজারগুলো নগরবাসীর মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাজারগুলোকে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য নগরবাসী এবং সরকারের সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে শুরু হয় কৃষকের বাজার। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রকল্পের আওতায় ১৬টি বাজার শুধু সপ্তাহে শুক্রবার বসছে। আর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দুটি বাজার সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার বসছে। সকাল ৬টা থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে বাজার। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার ২০১৯ সালে শুরু হয়েছে। আর ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে কৃষকের বাজার শুরু হয় ২০২০ সালে।

তারা আরও জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ছয়টি কৃষকের বাজার রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে জাওলাহাটি রোডে, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ জামাল স্কুলের সামনে, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের আজিমপুর এতিমখানার সামনে, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের টিকাটুলীসংলগ্ন অভয় দাস লেনে, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইস্কাটন গার্ডেন স্কুলের সামনে, ১ নম্বর ওয়ার্ড খিলগাঁও আনসার ভিডিপি অফিসের পাশে। আর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লবী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রূপনগর ইসলামিয়া স্কুলের সামনে, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রূপনগর আবাসিক এলাকার ৩০ নম্বর সড়কে, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের আদাবর ১০ নম্বর সড়কে, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের লালমাটিয়া বি-ব্লকে মহিলা কলেজের পেছনের সড়কে, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটিতে। আর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের সফিউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের রাজদিঘি রোডে এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (এনসিসি) ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ডন চেম্বার এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নীমতলা লেকের পাড়। মানিক মিয়া এভিনিউ কৃষকের বাজারের বিক্রেতা আব্দুর রহিম জানান, তার বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয়। সেখানে তার স্বজনরা কৃষি কাজ করেন। তার নিজেরও রয়েছে কৃষি। সেখান থেকে উৎপাদিত ফসল এনে তিনি মানিক মিয়া এভিনিউ’র সেচ ভবনের সামনের ফুটপাতে বিক্রি করেন।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালের শেষের দিকে শুরু হয়। সেই থেকে আছি। প্রথমে বাজারটি সেচ ভবনের ভেতরের খালি জায়গায় ছিল। এখন ফুটপাতে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্য এখন আমাদের দোকান পরিচালনা করতে অসুবিধা হচ্ছে।

খিলগাঁও কৃষকের বাজার থেকে প্রতি সপ্তাহে সবজি কেনেন গণমাধ্যম কর্মী দিশানা জলধি। তিনি বলেন, এখানকার সবজি তরতাজা। প্রকৃত কৃষকের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও আছেন কয়েকজন। তবে এই বাজারের সবজিগুলো অপেক্ষাকৃত তরতাজা এবং এসব সবজির দামও একটু বেশি।

ডিএসসিসির ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকের বাজার সম্পর্কে কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন জানান, এই উদ্যোগটি খুবই ভালো। এই বাজারের কেরানীগঞ্জের কৃষকরা সবজি নিয়ে আসেন। প্রথমে কম সংখ্যক দোকান বসলেও এখন ৩০ থেকে ৩৫টি দোকান বসছে। সাপ্তাহিক এই বাজার নিয়ে এলাকাবাসী খুবই খুশি। ডিএসসিসির ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক বলেন, আজিমপুর এতিম খানার সামনে কৃষকের বাজার বসানো হয়েছে। এখানে প্রতি সপ্তাহে ১০ জন কৃষক নিজেদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে আসেন। সাপ্তাহিক বাজারের সবজি পেয়ে এলাকাবাসী খুবই খুশি। তারা দাবি জানিয়েছেন, কৃষকের বাজার সপ্তাহে আরও অন্তত দু’দিন করার জন্য। এলাকাবাসীর দাবিগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করছি আমরা।

তিনি বলেন, ‘এই বাজারে একদিকে কৃষক তার ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন, অন্যদিকে ক্রেতারাও তরতাজা বিশুদ্ধ সবজি পাচ্ছেন। এমন উদ্যোগ আরও বাড়ানো দরকার।’

এ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর অঞ্চল ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, এ ধরনের বাজার স্থাপনের উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। এখানে কৃষক নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করছেন। এতে তারা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন এবং নগরবাসী তরতাজা সবজি পাচ্ছেন। অর্থাৎ দু’পক্ষই লাভবান হচ্ছে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর ব্যস্ততম শহরগুলোতেও কৃষি বাজার রয়েছে। ঢাকায় রূফটপ গার্ডেন এবং নগর কৃষির সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাহলে নগরের কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত শাক-সবজি এসব বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত