1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

স্বল্প খরচে অধিক লাভ, বাড়ছে ভুট্টার আবাদ

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২

কৃষিনির্ভর উত্তরের জেলা নীলফামারীতে সিংহভাগ মানুষের জীবন-জীবিকা চলে কৃষির ওপরে। জেলার উর্বর মাটিতে নানা রকম ফসল আবাদ হয়। এর মধ্যে অন্যতম ভুট্টা। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে ভুট্টার আবাদ।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ধান, গম, সরিষা, পাট, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা ও হলুদ চাষ ছাড়াও ভুট্টা অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বদলে যাচ্ছে কৃষকের জীবন-জীবিকা। মানুষের খাদ্য তালিকায় যোগ হয়েছে ভুট্টার আটা। পাশাপাশি গো-খাদ্য, হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবে ভুট্টাদানার চাহিদা রয়েছে।

জেলার কৃষকরা বলছেন, একসময় জেলার ডিমলা-ডালিয়া তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষ না খেয়ে দিন পার করতেন। এখন আর না খেয়ে থাকতে হয় না। তিস্তা নদীর বুকে জেগে ওঠা একাধিক চরে ভুট্টা চাষ করছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, ডিমলায় দুই হাজার ৯৪৫ ও জলঢাকায় ৩২৮ হেক্টর চরবেষ্টিত জমি আছে। ঝুনাগাছ চাপানি, খালিশা চাপানি, টেপাখড়িবাড়ি, পূর্ব ছাতনাই ও জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি ও শৌলমারী ইউনিয়নের ছোট-বড় প্রায় ২৩টি চরে ভুট্টা চাষ হচ্ছে।

জেলায় গত বছর ২৩ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ১০০ হেক্টর। ফলে প্রায় দুই হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ বেড়েছে। এ বছর ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে জেলা সদরে দুই হাজার ৮৯৬, ডোমারে তিন হাজার ১২২, ডিমলায় ১৩ হাজার ৪৫৮, জলঢাকায় এক হাজার ৯৯৬ হেক্টর ও সৈয়দপুরে ৪০৪ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।

সরেজমিনে কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা ভুট্টা রোপণ ও পরিচর্চার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতোমধ্যে অনেক কৃষকের ক্ষেতের ভুট্টা গাছ বড় হয়ে গেছে।

ধান চাষে সেচ, সার, বীজ, পরিবহন, পরিচর্চা ও জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় ভুট্টা আবাদ দিনদিন বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জেলার কৃষকরা।

বোরো ধানের চেয়ে কম খরচে ভুট্টায় লাভ বেশি জানিয়ে ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ঝড়সিংহেশ্বর গ্রামের কৃষক মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় ভুট্টা চাষ করি। এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে খরচ হয় ৮-১০ হাজার টাকা। বিঘায় ৩৫-৪০ মণ ভুট্টা পাওয়া যায়। এখন ভুট্টা লাগাচ্ছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন ভালো হবে।’

তিস্তার চরে একসময় বোরো আবাদ করতাম, এখন ভুট্টা চাষ করছি উল্লেখ একই এলাকার রোস্তম আলী বলেন, ‘তিন বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। এতে ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ভুট্টায় লাভ বেশি খরচ কম।’

ভুট্টা ক্ষেতে বড় ধরনের রোগবালাই হয় না উল্লেখ করে জেলা শহরের উত্তর হাড়োয়া সরকারপাড়া মহল্লার আহমেদ আলী বলেন, ‘যদি কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে বিঘায় ৩৫-৪০ মণ ভুট্টার পাবো। কিন্তু ধানে এতো ফলন হয় না। এবার তিন বিঘায় ভুট্টা চাষ করেছি। এখন পরিচর্চা করছি।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ বলেন, ‘সদরে দুই হাজার ৮৯৬ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ১০০ হেক্টরে রোপণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এক হাজার কৃষককে প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বিঘাপ্রতি দুই কেজি ভুট্টা বীজ ও ৩০ কেজি করে সার দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।’

দিন দিন জেলায় ভুট্টার আবাদ বাড়ছে জানিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘পুষ্টিসমৃদ্ধ ভুট্টা লাভজনক হওয়ায় চাষাবাদে দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। কৃষি কর্মকর্তারা সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে বীজ ও সার দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। এজন্য কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ভুট্টা এখন শুধু গো-খাদ্যই নয়; মানুষের খাদ্য তালিকায় সংযুক্ত হচ্ছে। ফলে দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা।’


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ