1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে জনগণ নেই

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩

রাজধানীর ঢাকা মেডিকেলে শোকাহত মিজানুর রহমান জাতির কাছে প্রশ্ন করেছেন, কী অপরাধে নিহতদের জীবন নেওয়া হলো এবং এই বিচার কার কাছে চাইবেন তিনি? আসলেই তার প্রশ্নের জবাব দেওয়া সম্ভব নয়। কেউই পারবে না। এই নিষ্ঠুরতার জবাব কী হতে পারে? তার স্ত্রী নাদিরা আক্তার ও তিন বছরের ছেলে ইয়াছিনের মরদেহ চেনার অবস্থায় নেই। নিরাপরাধ মানুষ হত্যার বিচার কী ধরনের হতে পারে? ট্রেন থেকে উদ্ধার করা দেহ পুড়ে অঙ্গার। টেলিভিশনের খবরে দেখা গেলো, পুড়ে অঙ্গার হওয়া চারজনের মরদেহ সারি করে রাখা। সারি করা মরদেহগুলোর মধ্যে মিজানের স্ত্রী নাদিরা আক্তার (৩২) অন্যজন ৩ বছরের ছেলে ইয়াছিন রহমান। মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার পরে রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে তারা মারা গেছে। এ ঘটনায় আরও দু’জন নিহত হয়েছে। তারা পুরুষ। নিষ্ঠুর এ ঘটনায় হরতাল-অবরোধকারীদের দায়ী করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমি মনে করি যারা অবরোধ-হরতাল দিচ্ছে তারাই এই নাশকতা করেছে। এর আগেও তারা এভাবে ট্রেনে নাশকতা করেছে।’

আমরা যা দেখছি, এটা কি আদৌ অন্দোলন বলা চলে? যেভাবে এসব শুরু হয়েছে তা, কিন্তু মানুষকে আতঙ্কিত করছে। মানুষের ভরসাস্থল নষ্ট হচ্ছে। ‘কঠোর হাতে দমন করা হবে’ বলে বক্তৃতা দিয়ে মানুষকে বিশ্বাস করানো যাবে না। আর ‘লোক দেখানো’ তদন্ত কোনো কাজে আসবে না। নাশকতার এই চিত্র রাজনৈতিক সহিংসতাকে উসকে দিতে বাধ্য। পরিস্থিতি জটিল হবে। সুতরাং নাশকতাকারীরা আর যেন কোনো রকম সুযোগ যাতে না পায় সেদিকে সতর্কতা জরুরি। নাশকতাকারীরা তো অন্য কোনো দেশ থেকে আসেনি। একটা সময় বিএনপি নেতৃত্বাধীন সমমনা দলগুলো বড় বড় স্বপ্ন দেখত। যেকোনোভাবেই হোক সরকার পতনের বিশ্বাস ছিল তাদের। তবে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে নয়, এটা বহুবার প্রমাণ হয়েছে। সরকার উচ্ছেদ করার স্বপ্ন দেখতো। চাহিদা অনুযায়ী কয়েকজন জামায়াত নেতাকে মন্ত্রী করার আশ্বাস নাকি দেওয়া হয়েছিল। বিশ্বাস করাতে লন্ডন থেকে কথা বলিয়ে শোনানো হয় জামায়াতে ইসলামীকে। কিন্তু শেষপর্যন্ত কাজ হয়নি।

দীর্ঘদিন পর বিএনপি এখন নিশ্চিত হয়ে গেছে, আমেরিকা মৌখিক আশ্বাস দিচ্ছে। কাজের কাজ ওরা কিছুই করবে না। নিজেদের মধ্যে নাকি বলাবলি হচ্ছে, বর্তমান সময়কে নষ্ট করেছেন বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা। বিভিন্ন পরিবেশ ও নানামুখী অভিজ্ঞতায় এখন বদলে যাওয়া তৃণমূলে থাকা অধিকাংশ নেতাকর্মী মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে কিছু কর্মী নেতা এখনো স্বপ্ন দেখে সরকার উচ্ছেদের। কিন্তু এটা কী সম্ভব? এ প্রশ্ন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন বিভিন্ন নেতার। তারা এখন নাকি বিশ্বাস করেন যে, বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে জনগণ নেই। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে উৎসাহিত করে যাতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করতে পারে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) চাইছে, বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন হোক শান্তিপূর্ণ ও সবার অংশগ্রহণমূলক। তৃণমূলে যেভাবে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু হয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে, এটা কোনোভাবেই দমানো সম্ভব নয়।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর প্রতিদিনের বক্তব্য শুনলে মনে হয়, তারা সরকার উচ্ছেদ করতে যেকোনা ঘটনা ঘটাতে পারে। আর এটাও পরিষ্কার হয়ে গেছে, আন্দোলন করে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটানো অসম্ভব। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তৃণমূলের অবস্থা দেখে বোঝা যায়, এটা পরিষ্কার যে আন্দোলন থেকে বিএনপি অনেক দূরে। মূলত জনগণকে সম্পৃক্ত করা ছাড়া আন্দোলন কখনো সফল হয় না। বিএনপি জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। গত ২৮ অক্টোবর পুরানা পল্টনে যেসব মানুষকে দলটি জমায়েত করেছিল তারা কিন্তু সমর্থক। দলের কর্মী নয়। কিছু কর্মী ছিল তবে তারা সৎসাহসী ছিল না। বিএনপিতে নেতৃত্বের অভাব তারাও বুঝে গিয়েছিল। রুখে দেওয়ার মতো মানসিকতা তাদের ছিল না। এখন যা হচ্ছে তা আন্দোলন নয়, সন্ত্রাস। গোপনে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে, মানুষ পুড়িয়ে মেরে, আগুন জ্বালিয়ে, যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন ছড়িয়ে দিয়ে আন্দোলন হয় কি? ১৯৯০-এ জনগণের অংশগ্রহণ ছিল বলেই গণঅভ্যুত্থানে কুখ্যাত স্বৈরাচারের পতন ঘটানো হয়েছিল এটা কিন্তু অনেকেরই মনে নেই!

লেখক : দীপক চৌধুরী – উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি। কলামিস্ট, কথাসাহিত্যিক ও ফিল্মমেকার


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ