বিবর্তনবাদ কেন ধর্মীয় মোল্লাদের চক্ষুশূল? কারণ এই মতবাদ তাদের সমস্ত বানানো রূপকথা এক ঝটকায় ভাগাড়ে নিক্ষেপ করে, পরপারে তাদের জন্য অপেক্ষারতা লোভ ও লালসার বস্তুগুলো হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তারা কঁকিয়ে ওঠে। যাতে সেগুলো কোনোমতেই হাতছাড়া না হয়। মূলত সেজন্যই তারা এই মতবাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এইসব মোল্লাদের চিন্তার দৌড় বড়জোর মাটির ঢিলা কুলুপ বানানো পর্যন্ত কিংবা সহবাসের আগে ও পরে কী দুয়া পড়তে হয়, তা মুখস্ত করা। এদের বিবর্তনবাদ বোঝানো আর মাটির কুলুপে মুত্রসিক্ত গ্যান্স পে*স ধরে চল্লিশ কদম হাঁটার মত সমান পণ্ডশ্রম।
তবে তারা আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব কিংবা বিংব্যাঙ নিয়ে কিছু বলে না। কারণ তারা এর পেছনেও একজন ঈশ্বরকে দেখতে পায় যার হাতে ছিল এমন এক অসীম ভরবিশিষ্ট বস্তু যা তার নির্দেশে বিস্ফোরিত হয়ে পরিণামে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের ধারণা ঈশ্বর মহাবিশ্ব যেভাবে সৃষ্টি করেছিলেন, তা এখনো ঠিক সেরকমই আছে। কোন পরিবর্তন ঘটে নাই। মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রথম দিনেই তো মানুষ সৃষ্টি করেন নাই, করেছেন অনেক অনেক পরে। কিভাবে? তিনি মাটি থেকে একদিন মানুষ বানিয়ে তার ভেতরে আত্মা নামক এক বস্তু ঢুকিয়ে প্রাণময় করে দিলেন। কত সহজ! এই সহজ পথ ছেড়ে কেন বিবর্তনবাদ বুঝতে হবে মোল্লাদের?
প্রসঙ্গত বলা দরকার এই মোল্লা কিন্তু শুধু ধর্মগ্রন্থ মুখস্থ করা মানুষ নয়, বিজ্ঞান পড়া অজস্র মানুষও এই দলের অন্তর্গত। প্রকৌশল থেকে মেডিক্যাল থেকে আর সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও এই মোল্লাদের দলভুক্ত।
লেখক : আহসান হাবিব – ঔপন্যাসিক