ট্রাকচাপায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহতের ঘটনায় ট্রাকের চালক ও হেলপারকে আটক করেছে পুলিশ।
নিজ নিজ এলাকা থেকে বুধবার দুপুরে তাদের আটক করা হয়।
ট্রাকচালক টিটুর বাড়ি রাজশাহী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গার বালিয়া এলাকায় এবং হেলপার হামিম হোসেন কালুর বাড়ি পবা উপজেলার নবগঙ্গা এলাকায়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেয় পাথরবাহী ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেল। বাইকে থাকা অন্য দুজন আহত হন।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে থাকা পাঁচটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেন। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ফটকের সামনে গিয়ে রাজশাহী-ঢাকা সড়ক অবরোধ করেন। পরে তারা ছয় দফা দাবি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের বাসার সামনে অবস্থান নেন।
পরিস্থিতি সামলাতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেন। বিক্ষোভের মুখে রাতেই ক্যাম্পাস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ প্রত্যাহার করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর রাত ২টার দিকে বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে প্রক্টরকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন উপাচার্য।
রাতে শিক্ষার্থীরা জানান, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি টাকার চেক হিমেলের পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করলে তারা ক্যাম্পাস থেকে লাশ নিয়ে বের হতে দেবেন না। জানাজার আগেই চেক হস্তান্তর নিশ্চিত করতে হবে।
হিমেলের বিভাগের সামনে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার মরদেহ আনা হয়। এরপর নেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে।
সেখানে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা হিমেলের মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর নিয়েছি। আজকেই তার অ্যাকাউন্টে ৫ লাখ টাকা পাঠানো হবে। এখন ৫ লাখ দিয়ে শুরু করলাম। পর্যায়ক্রমে আরও দেয়া হবে।’
তিনি জানান, হিমেলের মায়ের আজীবন চিকিৎসা খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে। এ ছাড়া আহত দুই ছাত্রের চিকিৎসার সব টাকাও বিশ্ববিদ্যালয় দেবে।
এই ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেন। জানাজা শেষে হিমেলের দেহ স্বজনরা দাফনের জন্য তার নানা বাড়ি নাটোর সদরের কাপুড়িয়াপট্টিতে নিয়ে যান।