1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইল ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০২২

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়ায় বিশ্ববাসীর সামনে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে ভারত। বাংলাদেশ বছরের পর বছর মানবিক কারণে যে বোঝা বহন করছে তার জন্য দেশটিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন ভারতীয় এক কূটনীতিক।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে মিয়ানমার ইস্যুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের কাউন্সিলর আর মধু সুদন এমন মন্তব্য করেন।

বার্তা সংস্থা এএনআই-এর বরাত দিয়ে এই খবর প্রকাশ করেছে হিন্দুস্তান টাইমস।

তিনি আরও বলেন, এত বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বছরের পর বছর এই বোঝা বহন করছে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে মিয়ানমারে ইস্যুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের কাউন্সিলর আর মধু সুদন বক্তব্য দেন।

ভারতীয় দূত মধু সুদন বলেন, ‘কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ ভূখণ্ডে আশ্রয় দেয়ায় আমরা বাংলাদেশের প্রশংসা করছি। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ বছরের পর বছর মানবিক কারণে যে বোঝা বহন করছে তার জন্য দেশটিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া উচিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও গভীরভাবে বাংলাদেশের এমন কঠিন অবস্থা বোঝা উচিত।’

বাস্তুচ্যুতদের আরও বেশি সহায়তা দেয়া জরুরি উল্লেখ করে এই দূত বলেন, ‘আশ্রয় শিবিরে রোহিঙ্গাদের জীবনমান বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সেখানে আরও বেশি বেশি সহায়তা পাঠানো উচিত। ক্যাম্পে উগ্রবাদী গোষ্ঠীর দমন ও নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরালো করা দরকার।’

মিয়ানমার আর বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে উল্লেখ করে ভারতীয় দূত বলেন, ‘প্রতিবেশী মিয়ানমারে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা সরাসরি ভারতকে প্রভাবিত করে। মানবিক পরিস্থিতির অবনতি এবং সহিংসতার ঘটনায় মিয়ানমার থেকে এখনও লাখো রোহিঙ্গা আমাদের সীমান্তমুখী হচ্ছেন।’

গত বছর ১৮ নভেম্বর জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা রেজুলেশন গৃহীত হয়। আর এটাকে এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমাকে উদ্ধৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়, আজ জাতিসংঘে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজুলেশনটি গ্রহণ করা হয়।

রাবাব ফাতিমা জানান, রেজুলেশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করে ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদান এবং জাতীয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ যে উদারতা ও মানবিকতা প্রদর্শন করেছে রেজুলেশনটিতে তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ শুরু হয় ১৯৭৮ সাল থেকে। তখন বাংলাদেশে আসা তিন লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে আড়াই লাখকে মিয়ানমার পরে ফিরিয়ে নিয়েছিল। ১৯৯২ সালে আসে দুই লাখ ৫৫ হাজার ৫৫৭ রোহিঙ্গা।

এর মধ্যে মিয়ানমার ফিরিয়ে নিয়েছে দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে। ফলে প্রতিবারই কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে থেকে গেছে।

১৯৯২ সালের পর আরও বেশ কয়েকবার রোহিঙ্গারা এলেও তাদের ফিরিয়ে নেয়ার কোনো উদ্যোগ আর দেখা যায়নি। এরপর থেকে প্রত্যাবাসন বন্ধ হয়।

২০১২ সালের ৩ জুন মিয়ানমারে তাবলিগ জামাতের ওপর হামলা চালায় রাখাইনরা। সে সময় সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ মংডু থেকে আকিয়াব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়লে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়।

ওই পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে পালানো শুরু করে রোহিঙ্গারা। তাদের অনেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়।

২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর রাখাইন রাজ্যের সীমান্তে পুলিশের ছাউনিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য হতাহত হন। তখন মিয়ানমার সরকার দাবি করে, এ হামলার সঙ্গে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা জড়িত।

পরদিন রাতে হঠাৎ মিয়ানমারের সেনারা সন্ত্রাসী দমনের নামে রোহিঙ্গাদের গ্রাম ঘিরে ধরপাকড়, হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট শুরু করে। ওই সময় ৭৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

সবশেষ ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ২৪টি সীমান্ত চৌকিতে একযোগে হামলা চালানো হয়। আবারও শুরু হয় অপরাধী দমনের নামে অভিযান। পরের দিন ২৫ আগস্ট থেকে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। এর পর থেকে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় উখিয়া-টেকনাফে।

প্রায় ১৬ বছর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধ থাকার পর ২০১৭ সালের নভেম্বরে একটি নতুন সমঝোতা স্মারকে একমত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তিতে দুই মাসের মাথায় প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গা রাখাইনে ফেরত যেতে পারেনি।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ