1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বঙ্গবন্ধু ও সরদার ফজলুল করিম

জাফর ওয়াজেদ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩

জেলখানার বাইরে পরিচয়। জেলে দেখা হত।পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ছিল তীব্র। পাকিস্তান গণ পরিষদে দু’জনে নির্বাচন করেছেন। বিপরীত দল করতেন। সরদার কমিউনিস্ট হলেও আন্তরিকতা গভীরতর ছিল। ষাট দশকে দুজনের দেখা কম হলেও খোঁজ থাকতো। বঙ্গবন্ধুর পাঠাগারের আলমারীতে সরদারের অনূদিত বিখ্যাত দুটি বই দেখেছিলাম ১৯৮৩সালে। ১৯৭০সালে সরদার বাংলা একাডেমিতে। ১৯৭১সালে পাকিস্তানি সেনারা তাকে উঠিয়ে নেয়। ক্যান্টনমেন্ট হয়ে কারাগারে। ১৬ ডিসেম্বর ছাড়া পান। বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসেবে সরদারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করেন। তিনি যোগ দেনও। ভাবীকালের গবেষকরা এসব নিয়ে লিখবেন নিশ্চয়। সরদার ফজলুল করিম নিয়মিত ডায়েরি লিখতেন। ছাত্রাবস্থায় গড়া অভ্যাস শেষ জীবন পর্যন্ত ছিল। মাঝে মাঝে তা ছাপতেনও ।

বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চ ভাষণের উপর ওনার লেখাটি মাস্টারপীস। কেমন ছিলেন সরদার ফজলুল করিমের পিতা? বরিশালের প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষিজীবি মানুষটি লঞ্চে চড়ে ঢাকা এসেছেন পুত্রকে একনজর দেখার জন্য। রাজনৈতিক কারণে জেলখাটা পুত্র থাকে সলিমুল্লাহ হলে। বাবা এসেছেন- সাথে কৃষিজীবি বড়ভাই। বাবার বগলে চটি(পাছে নস্ট হয়)। পুত্রকে আপনি করে সম্বোধন করছেন। তাদের সাক্ষাৎ পর্বটি বেদনা বিধূর। ১৯৭৮সালে দৈনিক সংবাদের ২৬ মার্চ বিশেষ সংখ্যায় ছাপা ‘বাবা’ শিরোনামের লেখাটি পড়ে চোখ ভিজে গিয়েছিল।

দু’দিন পর স্যারের রুমে গিয়ে থম মেরে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। সেই লেখাটির কথা অজো মনে রয়ে গেছে। সরদার ফজলুল করিম ছিলেন সেই বাবা যিনি তার পুত্রর হাটবাজারটাও করে দিয়ে আসতেন। মগবাজারে থাকা পুত্র ও পুত্রবধূর সব খরচও বহন করতেন। শেষ বয়সে তাই তাকে নানাধরনের কাজ করতে হয়েছে। বড়পুত্রটি অটিস্টিক। প্রায়শই পাগলামী করে। বিয়েথার পরও মাঝে মাঝে উন্মাদপ্রায়। বহু চিকিৎসা করান। নিজে থাকতেন পশ্চিম রাজাবাজার।পরে শ্যামলীতে বাড়ি বানিয়ে সেখানে উঠেন। বুড়ো বয়সে ছেলের তদারকিতে কেটে যেত। স্ত্রী বিয়োগের পর আরো অসহায় হয়ে পড়েন। শেষ দিকে ছিল বুয়া নির্ভর জীবন।

৮০’র দশকের মাঝামাঝি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেবার পর যোগ দেন সংবাদে। কাজ দেয়া হয় চিঠিপত্র দেখার। বংশালে সংবাদ অফিসে ওঠার সিঁড়িকোঠায় জঞ্জালের মাঝখানে বসতেন। ঘন্টা দুই গরমের মধ্যে ফ্যান ছাড়া কাজ করতেন। দেখে আমার কষ্ট হতো। স্যারকে বলি চিঠি বাড়ি নিয়ে কাটাছেঁড়া করার জন্য। অবশ্য তা করতেনও। ওনার সঙ্গে রয়েছে অনেক স্মৃতি। বছর দেড়েক পর একটি কলেজে যোগ দেন। বড় কষ্টকর, বড় কঠিন জীবন কাটিয়েছেন। রাষ্ট্র তার সেরা প্রতিভাবানকে সামান্যতম মর্যাদা দেয় নি কখনো।

লেখক : জাফর ওয়াজেদ – মহাপরিচালক, পিআইবি


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ