পাঁচ ফিট কাঠের চৌকির ওপর বাঁশের মাচা, তার ওপর প্লাস্টিক বিছিয়ে নতুন করে জীবন সংগ্রাম শুরু করেছেন অগ্নিকাণ্ডে ছাই হয়ে যাওয়া বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা। অস্থায়ী এ ব্যবস্থা দুই মাসের বেশি সময় ধরে। ঈদুল আজহার ১০ দিন আগে গতকাল শনিবার অস্থায়ী বঙ্গবাজারে গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতাসাধারণের বেশ ভিড়। পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারের ১.৭৯ একর খোলা মাঠে ক্রেতাসাধারণের সরব উপস্থিতিতে কিছুটা হলেও উদ্যম ফিরে পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
৪ এপ্রিল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের আট দিন পর ঢালী ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী রায়হান কবির অন্যদের সঙ্গে একটি চৌকি পেতে ফের ব্যবসা শুরু করেছিলেন বঙ্গবাজারে। গতকাল ক্রেতাদের সঙ্গে দর-কষাকষি করতে করতে রায়হান কবির বলেন, ‘খুচরা, পাইকারি সব ধরনের ক্রেতাই আসছেন। ঈদের আগে একটু ব্যবসা যদি করা যায়, তাহলে মানুষের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ একটু হলেও শোধ করা যাবে।
খুচরা ক্রেতাদের সঙ্গে বঙ্গবাজারে ভিড় করছেন পাইকারি ক্রেতারাও। ব্যবসায়ীরা জানান, সুলভমূল্যে তৈরি পোশাক পাওয়া যায় বলে বঙ্গবাজারের ওপর আস্থা রয়েছে পাইকারি ক্রেতাদের।
হাসান গার্মেন্ট নামের দোকানে কথা হয় পাইকারি ক্রেতা আলিফ খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার নিজের দোকানের জন্য জিন্স প্যান্ট নিতে এসেছি।
এখানকার অনেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আগে থেকে আমার পরিচয় রয়েছে। আগুনে ক্ষতি হলেও চাহিদামতো পণ্য এখানকার ব্যবসায়ীরা আমাদের সরবরাহ করতে পারেন।’
পুঁজির সংকট :
অস্থায়ী বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এভাবে ব্যবসা করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেও তাঁদের কাছে নেই পর্যাপ্ত পুঁজি। টাকার অভাবে চাহিদামতো পণ্য তুলতে পারছেন না তাঁরা।
রায়হান ফ্যাশনের মালিক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘টাকার অভাবে যথেষ্ট মাল কিনতে পারি নাই।
ক্রেতা থাকলেও আগের মতো বেচাকেনা করতে পারছি না। আমাদের ক্ষতির অঙ্কটা অনেক বড়।’
বঙ্গবাজারের খোলা মাঠের এনেক্সকো টাওয়ারের পাশে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির অফিস। ওই অফিসে সমিতির কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া আব্দুর রহমান বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে আমরা অফিস চালু করেছি। ব্যবসায়ীরা খোলা মাঠে অস্থায়ী দোকানে ব্যবসা করছেন। অস্থায়ী হলেও ব্যবসা মোটামুটি ভালো হচ্ছে।’
ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের টাকা সমিতির অ্যাকাউন্টে জমা আছে। আরো টাকা আসছে। এসব টাকা ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।’