1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্তরায়

দুলাল আচার্য : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে এক আলোচনায় বলেছিলেন-

“স্বাধীন বাংলাদেশে সেক্যুলার বাঙালি জাতির অস্তিত্বের রক্ষাকারী হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা। আমি এই ধর্মনিরপেক্ষতার চারা বাংলাদেশের মাটিতে পুঁতে গেলাম। যদি কেউ এই চারা উৎপাটন করে, তাহলে বাঙালির জাতির স্বাধীন অস্তিত্বই সে বিপন্ন করবে।”

গভীর যন্ত্রণা ও উদ্বেগ নিয়ে বলতে হচ্ছে, চলতি বছর দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন থেকে ধর্ম অবমাননার অজুহাতে কুমিল্লাসহ দেশের ২২টি জেলায় ‘সংখ্যালঘু’ হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে তাণ্ডব চলল, মণ্ডপে প্রতিমা ভাঙচুর হলো, ‘সংখ্যালঘু’দের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চলল, কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটল, তা আতঙ্কিত ও শঙ্কিত হওয়ার মতো।

বঙ্গবন্ধু তো এমন বাংলাদেশের কথা বলেননি, এমন বাংলাদেশের স্বপ্নও দেখেননি। বাস্তবতা হলো- ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতা দখলের দোলাচলে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাটি তার অবস্থানে বজায় থাকতে পারেনি। কারণ, তখন থেকেই রাজনীতি হয়ে যায় ধর্মাশ্রয়ী। মূলত সেই থেকেই পাকিস্তানি ধারায় সাম্প্রদায়িকতা এদেশে আবারও অবস্থান নেয়। তারপর থেকে নানা সময়ে ঘটে আসছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির তাণ্ডব।

হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষের মিলিত রক্তস্রোতে অর্জিত বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা। এই পতাকা এ দেশের অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থার শিকল ভেঙে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থার শিকল ভেঙে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা, তিনি সেটা করতে পেরেছিলেন। তিনি নিশ্চিত করেছিলেন এ দেশ সব ধর্মের, সব বর্ণের, সবার সমানাধিকার। আমাদের সংবিধানের চার মূলনীতিও সেই লক্ষ্যেই সংযোজিত হয়েছিল। সব ধর্মের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই দেশের সূচনা। আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি। এর পরের পরিচয় আমরা কে কোন ধর্মের।

সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশে জাতি-ধর্ম, বর্ণ নিয়ে কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই যার যার ধর্ম পালন করতে পারবে। কেউ কোনো বাধার সৃষ্টি করতে পারবে না। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(১) অনুচ্ছেদে বলা আছে- ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।’ এ কারণেই বিশ্বে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। বিশ্বে বাংলাদেশকে সম্প্রীতির রোল মডেলও আখ্যায়িত করা হয়।

এ দেশের মুক্তিযুদ্ধে কোনো বিশেষ ধর্মের নয়, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ রক্ষার জন্য সশস্ত্রযুদ্ধ করেছে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে। একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদররা যখন হিন্দুদের ওপর আক্রমণ শুরু করল, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিল, তখন মুসলিমরাই তাদের নিজের ঘরে আশ্রয় দিয়েছে। এখনও হিন্দু-মুসলমান ও অন্যান্য সম্প্রদায় সম্প্রীতির বন্ধন নিয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ায়। এভাবেই সম্প্রীতির বন্ধনে বাংলাদেশের মানুষ আবহমানকাল থেকেই আবদ্ধ।

১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-

“জনাব স্পিকার সাহেব, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মকর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবও না। ২৫ বৎসর আমরা দেখেছি, ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেইমানি, ধর্মের নামে খুন, ধর্মের নামে ব্যভিচার- এই বাংলাদেশের মাটিতে এসব চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা চলবে না। যদি কেউ বলে যে, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়েছে, আমি বলব, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়নি। সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করার ব্যবস্থা করেছি।”

ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্রপরিচালনার একটি নীতি আর এই নীতিকে পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

তুচ্ছ ঘটনায় বার বার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয় দেশের ‘সংখ্যালঘু’ সম্প্রদায়ের মানুষ। গত ১৭ মার্চ যখন দেশব্যাপী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষের অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল, সেদিন সকালে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে ঘটে যায় ন্যক্কারজনক ঘটনা।

ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়া নিয়ে একযোগে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয় ওই গ্রামের ৮৮টি হিন্দুবাড়ি ও পাঁচটি মন্দিরে। তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাও। ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ‘সংখ্যালঘু’দের ওপর নৃশংস হামলা চলে। মামলা হলেও দুর্বৃত্তরা শাস্তি পায়নি। সবাই এখন জামিনে মুক্ত।

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হয়েছে আরও ভয়াবহ হামলা। এ হামলার এখনও বিচার হয়নি। এখানেও গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা জামিনে মুক্ত। একইভাবে দিনাজপুর, জয়পুরহাট, নাটোর, রাজশাহীর চারঘাট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও পিরোজপুরে ‘সংখ্যালঘু’ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যেক ঘটনার পর ব্যাপক আলোচনা, পত্রপত্রিকায় লেখালেখি, প্রতিশ্রুতি ও রাজনীতি হয়; কিন্তু অপরাধীর শাস্তি হয় না। ফলে থামছে না সংখ্যালঘু নির্যাতন। উল্লেখ্য, প্রতিটি হামলার পেছনেই অপশক্তি কাজ করেছে। ধর্মীয় ইস্যুকে ব্যবহার করা হয়েছে।

শুধু ধর্মীয় ইস্যুই নয়, রাজনৈতিক কারণেও এদেশে ‘সংখ্যালঘু’রা নানা সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। স্মরণ করতে হয়, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর একটি বিশেষ ভোট ব্যাংকের তকমা নিয়ে দেশের ‘সংখ্যালঘু’দের ওপর যে হামলা চালানো হয়। তা ১৯৪৭, ১৯৫০, ১৯৬৪, ১৯৯০, ১৯৯২ ও ২০০১ সালের ‘সংখ্যালঘু’ নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় এদেশে ঘটেছে।

১৯৯২ সালে ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশি হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নেমে আসে নানামুখী নির্যাতন। এ সময় ৩৫২টি মন্দির আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়, ‘সংখ্যালঘু’ মেয়েদের ধর্ষণ ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।

২০০১ সালে নির্বাচন-উত্তর সহিংসতার শিকার হয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। স্বাধীনতা-উত্তরকালে এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, জোর করে বিয়ে, ধর্মান্তরিত করা, চাঁদা আদায় ও সম্পত্তি দখল- কোনো কিছুই যেন বাদ ছিল না সেসময়ে। অভিযোগ রয়েছে ভোলার চরফ্যাশনে এক রাতে দুই শতাধিক হিন্দু মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়। এই দুটি ঘটনার সময়ই বিএনপি-জামায়াত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় ঘোষণার পরও ‘সংখ্যালঘু’ পরিবারের ওপর হামলা হয়। অবস্থা এমন যেন সাঈদীর রায়ের জন্য ‘সংখ্যালঘু’ সম্প্রদায়ই দায়ী।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যশোরসহ দেশের কয়েকটি স্থানে ‘সংখ্যালঘু’দের ওপর ভোট-পরবর্তী সহিংসতা চলে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর একই চিত্র। অপরাধ- হিন্দু মানেই একটি বিশেষ দলের ভোটার। পরিসংখ্যান বলছে, এভাবে ক্রমান্বয়ে ‘সংখ্যালঘু’ হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা কমছে। নিরাপত্তা এবং পরবর্তী বংশধরদের কথা ভেবে দেশ ছাড়ছেন অনেকেই। ২০০১ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে এদেশে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল ১৬.৮৩ মিলিয়ন।

২০১১ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই সংখ্যা ১২.৩ মিলিয়নে এসে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক বছরে এই পরিসংখ্যান এখন কোথায় দাঁড়িয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। আর এবার ১৩ অক্টোবরের পরই পরিসংখ্যান কী হবে, তা সেই প্রশ্ন করাই যায়।

সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকাও কোনো কোনো ক্ষেত্রে রহস্যজনক। বিশেষ করে কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার ওসি একটি টেলিফোনের ভিত্তিতে সকালে যখন পবিত্র কোরআনটি উদ্ধার করেন, তখন সেখানে মাত্র চারজন লোক ছিলেন।

তিনি সঙ্গে সঙ্গেই এটি সংরক্ষণ করে থানায় চলে আসতে পারতেন। তাহলে হয়তো বিষয়টি এতদূর গড়াত না। তিনি নানা মহলের সঙ্গে ফোনে ব্যস্ত ছিলেন, যা এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। ওসি নিজের পরিচয় দিয়ে বক্তব্য রেখে হাজার হাজার মানুষকে জড়ো করার সুযোগ করে দিলেন কেন? ফয়েজ নামে এক ব্যক্তির দীর্ঘ সময় মোবাইলে লাইভ করার সুযোগ কেন তিনি তৈরি করে দিলেন?

আমার সাধারণ ধারণায় বলতে পারি- একজন ওসি দক্ষ ও চৌকষ ব্যক্তিই হয়ে থাকেন। বিশেষ করে একটি জেলা শহরের মতো থানায়। এই ক্ষেত্রে তার কোনোটারই প্রমাণ পাওয়া গেল না। তিনি এই ক্ষেত্রে বোকামিই করেছেন নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই, তা স্পষ্ট হওয়া দরকার। এখানে উল্লেখ্য, মোবাইলে লাইভ করা ব্যক্তি ফয়েজের বাড়ি পাশের উপজেলা চৌদ্দগ্রামের এক অজপাড়াগাঁয়ে। প্রশ্ন উঠছে তিনি এত ভোরে কীভাবে ওই স্থানে গেলেন?

পুলিশের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ নোয়াখালীর চৌমুহনীতে। সেখানে ইসকন মন্দিরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে হামলা ও লুটপাটের সময় পুলিশের সহায়তা চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ যখন আসে, তখন সব শেষ। রংপুরের পুলিশের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ‘সংখ্যালঘু’দের।

নানা সময়ে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভেতরে জামায়াত-বিএনপির ঘাপটি মারা লোক রয়েছে। আর কুমিল্লা, চৌমুহনী, রংপুরসহ নানা স্থানের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্টতা। গ্রেপ্তারও হয়েছে কয়েকজন। এই ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারো কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লার ঘটনা এবং এর জেরে ধরে সহিংসতার ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যখন বিশ্বসভায় একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ঠিক সে সময়ে একটি চিহ্নিত মহল পরিকল্পিতভাবে দেশে সাম্প্রদায়িক হানাহানি সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। সরকার ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করেছে। তিনি তার দল আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীকে দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির তৎপরতা প্রতিরোধ করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

ইতোমধ্যে সিসি টিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তৎপরতায় বহু অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। শুধু বিচার নয়, অভিযুক্তদের অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অতীতের মতো অপরাধীরা ছাড় পেয়ে গেলে এই ধরনের অপরাধ থামবে না। এই জন্য বিশেষ আদালত জরুরি।

আমরা মনে করি, শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো দরকার। এই ক্ষেত্রে কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। এমন শিক্ষাব্যবস্থা দরকার যাতে ধর্মীয় সম্প্রীতিসহ বর্ণ-জাতি, গোষ্ঠীগত কোনো ভেদাভেদ না থাকে। দেশব্যাপী সরকারিভাবে কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

গ্রামে গ্রামে ছোটো ছোটো বৈঠকের মাধ্যমে সুন্দরভাবে অসাম্প্রদায়িকতা সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে। সব ধর্মের ধর্মীয় উপাসনালয়ে এ ব্যাপারে শিক্ষা দেয়ার কথা বলে দিতে হবে এবং পর্যবেক্ষণ করতে হবে- যারা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে উসকে দিচ্ছে অপকর্ম করার জন্য, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমও সম্প্রীতি রক্ষায় নিজ উদ্যোগে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যাতে কেউ উসকানি না দিতে পারে, এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে বাংলা ভূখণ্ডে নানা জাতি-গোষ্ঠী ও ধর্মমতের অনুসারীরা পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে মিলেমিশে একত্রে বসবাসের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য সংহত রেখেছে। নানা ধর্ম-বর্ণ, গোত্রের এই উপমহাদেশে বিরাজিত হোক শান্তির ললিত বাণী।

জনজীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, নাশকতাকারী অপশক্তির স্থান যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলায় না হয়, এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। ধর্ম-বর্ণ, গোষ্ঠী- সবার মাঝে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধন বিরাজ করুক- এই প্রত্যাশা আমাদের।

লেখক: দুলাল আচার্য, সিনিয়র সাংবাদিক


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ