রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪ ঘটিকায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে হাজার হাজার মানুষ খুন, গুম, ধর্ষণ, বোমা হামলা ও নির্যাতনের বিচারের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আয়োজিত প্রতিবাদী সমাবেশ ‘মায়ের কান্না’ ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
আয়োজিত সমাবেশে অধ্যাপক ডা: মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল তার বক্তব্যে বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন আইএসআই কর্মকর্তা। জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। একমাত্র জিয়ার পরিকল্পনাতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত খুন, গুম, হত্যা একমাত্র এই জিয়াউর রহমান করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৭ সালে যাদেরকে হত্যা করেছিলেন জিয়াউর রহমান, তাদের কবর কোথায় তা তাদের স্ত্রী, ছেলে, মেয়েরা আজ পর্যন্ত জানে না।
বিএনপি আজ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসাবে মেনে নিতে পারে নাই বলে মন্তব্য করে তিনি বিএনপিকে পাকিস্তানে পাঠানোর অনুরোধ করেন।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামাত সরকারের আমলে খুন,গুম, হত্যা করেছিল তাদের তান্ডব সম্বন্ধে নতুন প্রজন্মকে আমাদের জানানো উচিত। বর্তমানে বিএনপি-জামায়াত প্রত্যেক জেলায় খুন, ঘুম, হত্যা চালিয়ে দেশে একটা অরাজকতা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে । ১৯৭৭ সালে ২ অক্টোবরের ঘটনা সঠিকভাবে তদন্ত করে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি বিএনপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করা হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন এর অভিমুখে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সমাবেশে আল্টিমেটাম দেয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমানুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের অন্যতম সাক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, বিশিষ্ট নাট্য অভিনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল হক মিনু, পূর্ণিমা রাণী শীলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের পক্ষ থেকে চার দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হচ্ছে-
১। বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা, অগ্নি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদেরকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার করা।
২। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিক হত্যার অপরাধে জিয়ার মরণোত্তর বিচার।
৩। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আন্দোলনের নামে সমগ্র দেশে আগুন দিয়ে হাজার হাজার মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অপরাধে বিএনপির রাজনীতি স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধসহ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল।
৪। জঙ্গিবাদ, অগ্নি সন্ত্রাস, দুর্নীতি, ধর্ষণ ও বোমা হামলার মদদদাতা বিদেশে পলাতক আসামি তারেক রহমানকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা।