1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিটুমিনের সঙ্গে প্লাস্টিক মিশিয়ে সড়ক বানালে কমবে খরচ, হবে টেকসই

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

গবেষকরা বলছেন, বিটুমিনের সঙ্গে প্লাস্টিক ব্যবহারের ফলে এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে খরচ কমবে ২ লাখ ৭৪ হাজার টাকার বেশি।

বিটুমিনের সঙ্গে ৫ থেকে ১০ শতাংশ প্লাস্টিক-পলিথিন মিশিয়ে রাস্তা তৈরি করলে তা টেকসই, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হবে। সেই সঙ্গে সড়কের স্থায়িত্বও বেড়ে যাবে। ফলে রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের খরচ অনেক কমে যাবে।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য দেন বক্তারা। চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগ ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে ‘পলিথিন বর্জ্যের কারণে পরিবেশ দূষণ ও বিরূপ প্রভাব এবং রাস্তা নির্মাণে বিকল্প ব্যবহার’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী পিয়াল বড়ুয়া ও আল আমিন। এ গবেষণার তত্ত্বাবধান করেছেন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. স্বপন কুমার পালিত।

সংবাদ সম্মেলনে পিয়াল বড়ুয়া বলেন, প্লাস্টিক-পলিথিন বর্জ্য রাস্তা নির্মাণে ব্যবহার করা পরিবেশবান্ধব এবং অর্থনৈতিকভাবে ইতিবাচক। একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এক কিলোমিটার দীর্ঘ ২ লেনের রাস্তার প্রতি লেনের প্রস্থ যদি ৩ দশমিক ৫ মিটার এবং এসফল্টের পুরুত্ব ৭৫ মিলিমিটার হয়, সেখানে বিটুমিনের সঙ্গে যদি সাড়ে সাত শতাংশ প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যবহার করা হয়, তাহলে প্রতি কিলোমিটারে সাড়ে ৪ টন বিটুমিন সেভ করা যাবে। এতে সাড়ে চার টন প্লাষ্টিক ও পলিথিন ব্যবহার করা যাবে। এভাবে সাড়ে চার টন প্লাস্টিক বর্জ্য কমানো সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে সাড়ে চার টন বিটুমিনের খরচ বেঁচে যাবে। এর ফলে এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে ব্যয় হ্রাস পাবে ২ লাখ ৭৪ হাজার টাকার বেশি। প্লাস্টিক-পলিথিন বর্জ্য যদি রাস্তা নির্মাণে ব্যবহার করা যায়, তাহলে পরিবেশ থেকে প্লাস্টিক কমবে।

তিনি আরও বলেন, বেশি তাপমাত্রা বিটুমিনের জন্য সুফল বয়ে আনে না। কিন্তু প্লাস্টিক-পলিথিন মেশানো বিটুমিন (মডিফায়েড বিটুমিন) বেশি তাপমাত্রাতেও ব্যবহার করা যায়। মডিফায়েড বিটুমিন ট্রাফিক লোডও বেশি পরিমাণে নিতে পারবে। এতে রাস্তার সার্ভিস লাইফ বাড়ানো যাবে।

গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. স্বপন কুমার পালিত বলেন, আমাদের বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে অনেক বেশি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীতে দৈনিক ২৪৯ টন প্লাস্টিক-পলিথিনের বর্জ্য উৎপাদন হচ্ছে। এ নিয়ে সোচ্চার হওয়ার কারণ হচ্ছে প্লাস্টিক ও পলিথিন হচ্ছে অপচনশীল। এটা পরিবেশকে বিভিন্নভাবে দূষিত করে। তাই পলিথিন-প্লাস্টিকের বর্জ্য কীভাবে রাস্তায় ব্যবহার করা যেতে পারে তার একটা গবেষণা করেছি। সেই সঙ্গে রাস্তার মান ও সাসটেইনেবিলিটি কীভাবে বেড়ে যেতে পারে সেটা আমরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, বিটুমিনের সঙ্গে পলিথিন-প্লাস্টিক মডিফাই করলে রাস্তার স্থায়িত্ব বেড়ে যায়। আমাদের দেশে রাস্তায় বিভিন্ন ভারী যানবাহন চলাচল করে। রাস্তায় গাড়ি চলাচলে কত ওজনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে তার নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও গাড়িচালক ও মালিকরা তা মানছে না। এর ফলে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বিটুমিনের সঙ্গে পলিথিন-প্লাস্টিক মডিফাই করলে ভারী গাড়ি চললেও রাস্তার তেমন ক্ষতি হবে না বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। মডিফায়েড বিটুমিন ব্যবহার করলে তাপ সহ্য ক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে। বৃষ্টির দিনে পানি পড়লে সাধারণ বিটুমিনের রাস্তা গাড়ি চলাচলের কারণে নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু মডিফায়েড বিটুমিনে রাস্তা তৈরি করলে, বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চলাচল করলেও রাস্তা তেমন নষ্ট হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে চুয়েটের সাবেক ভিসি ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পলিথিন-প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করার চিন্তা করতে হবে। গবেষকরা বলছেন বিটুমিনের সঙ্গে প্লাস্টিক-পলিথিন মেশালে খরচ কমে, রাস্তাও টেকসই হয়। আমাদের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে একটি উদাহরণ তৈরি করার জন্য বলব। সিটি করপোরেশন থেকে এক কিলোমিটার রাস্তা দিয়ে চুয়েটের তত্ত্বাবধানে একটি পরীক্ষা করে দেখা দরকার। যাতে মডিফায়েড বিটুমিন আর নরমাল বিটুমিনের তফাত জানতে পারি। এটা সফল হলে প্লাস্টিক ও পরিবেশের দূষণ থেকেও বাঁচা যাবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ