1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

রহিমা-মরিয়ম মান্নানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ভুক্তভোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২২

খুলনার মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম অপহরণ মামলায় গ্রেফতার ছয় জনের মধ্যে চার জন মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) জামিনে মুক্ত হয়েছেন। কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন দাবি করে রহিমা বেগম ও মরিয়ম মান্নানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।

মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে এক মাস থাকার পর মুক্তি পান কুয়েটের সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া। তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, যারা মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলেছে, যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মান নিখে খেলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রশাসন অবশ্যই নেবে। আমরা যারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি তারাও আইনগত পদক্ষেপ নেবো।

তিনি আরও বলেন, রহিমা ও তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান-আদুরী মামলাবাজ। তারা আমার নামে চারটি মামলা দিয়েছে। সবগুলোই মিথ্যা প্রমাণিত হয়। সবশেষে অপহরণ মামলা দিয়েছে। আমিও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া আক্ষেপ নিয়ে বলেন, জীবনে কখনও থানার বারান্দায় যাইনি। পুলিশ কাছে আসতে পারে, এমন কোন অপরাধও করিনি। কিন্তু মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও জেল খাটতে হলো। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে কি মামলা বা আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা দেখছি।

তিনি গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, মিডিয়ার জন্য আজ প্রকৃত সত্য উদঘাটন হলো। সবাইকে ধন্যবাদ।

এ মামলায় কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া মো. নুর আলম জুয়েল বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে লাখো-কোটি শুকরিয়া, যে জেল থেকে বের হতে পেরেছি। মরিয়ম মান্নানসহ তার পরিবার যে কতটা নিচে নামতে পারে তা দেশবাসী দেখেছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়েও তামাশা করেছে। আমি সুবিচার চাই।

তিনি বলেন, রহিমা বেগম, মরিয়ম মান্নান মামলাবাজ। আমি ও আমার পরিবার রহিমার তিনটি মিথ্যা মামলার শিকার। অপহরণ মামলায় এক মাস জেল খাটলাম। আইনি পদক্ষেপ অবশ্যই গ্রহণ করবো।

মুক্তি পাওয়া মো. মহিউদ্দিন বলেন, আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। প্রশাসন যা করার করবে। তবে আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

অপর মুক্তি পাওয়া রফিকুল আলম পলাশ বলেন, কারাগারে খুবই কষ্টে ছিলাম। ১৫ দিনে একদিন পরিবারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছি। আর এক সপ্তাহে একবারই ১০ মিনিট ফোনে কথা বলার সুযোগ ছিল। মিথ্যা মামলায় যারা আমাদের এভাবে স্বজনদের থেকে দূরে রেখেছে, অবশ্যই আমি তাদের বিচার চাই।

উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রাহিমা বেগম (৫২)। ঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফিরে আসেন না। পরে মায়ের খোঁজে সন্তানরা সেখানে গিয়ে মায়ের ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে সন্ধান নেওয়ার পর মাকে পাননি সন্তানরা। এরপর থানায় সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়ন। মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র‌্যাব ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল ঘটক ওরফে বেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ ও জুয়েল এবং হেলাল শরীফ।

পরে বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ সেপ্টেম্বর আদালত মামলার তদন্তভার পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নথিপত্র ১৭ সেপ্টেম্বর বুঝে নেয় পিবিআই। এখন এ মামলার তদন্ত করছেন পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। ২২ সেপ্টেম্বর রহিমার মেয়ে মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান দাবি করেন তার মায়ের লাশ তিনি পেয়েছেন। তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুরে দিনভর অবস্থান নেন। একই সঙ্গে সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত এক মহিলার লাশকে নিজের মা বলে শনাক্ত করেন। ডিএনএ প্রোফাইল করার জন্যও তিনি সম্মত হন। ২৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের আদালতে ডিএনএ প্রোফাইল করার আবেদন করা হয়। আদালত ২৫ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে ডিএনএ প্রোফাইল করার অনুমতি দেন। এদিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলার সৈয়দপুর থেকে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে আদালতে সোপর্দ করা হলে রহিমা ২২ ধারার জবানবন্দিতে তিনি অপহরণ হয়েছিলেন বলে দাবি করেন। এরপর সন্ধ্যায় আদালত মামলার বাদী ও রহিমার মেয়ে আদুরীর জিম্মায় তাকে মুক্তি দেন। এরপর ওই রাতেই মেয়ে মরিয়ম ও আদুরী তাদের মাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। স্বজনরা জানিয়েছেন ঢাকায় রহিমার চিকিৎসা চলছে। এদিকে ৪ অক্টোবর আদালত চার জনের জামিন মঞ্জুর করেন এবং সন্ধ্যায় তারা কারাগার থেকে মুক্ত হন।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ