1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

তরুণ প্রজন্মকে আলোর পানে এগিয়ে যেতে হবে

অধ্যাপক ড. আহমেদ আমিনুল ইসলাম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত মানবতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত বাঘা বাঘা ব্যক্তিদের বিচার কার্যকর হওয়ায় অনেকেই এরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছিলেন যে, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে দেশ পুনরায় সামনের দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করেছে। বিদগ্ধ ব্যক্তিবর্গের একথা সত্য হলে এই ইতিহাসও আমাদের মেনে নিতে হবে যে, আমরা দীর্ঘদিন পেছনের দিকে মুখ ফিরিয়ে পশ্চাদমুখী একপ্রকার ‘অনিচ্ছুক’ চলনে অভ্যস্থ ছিলাম। তরুণ প্রজন্মকে মনে রাখতে হবে, প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে একটি গোষ্ঠী সামগ্রিকভাবে এদেশকে এবং অতি অবশ্যই দেশবাসীর চিন্তা-চেতনা ও মননকে পেছনের দিকে ঠেলে দিয়েছে- ঠেলে নিয়েছে। প্রশ্ন উঠতে পারে, কোন্ অবস্থান থেকে আমরা পেছনের পানে চলতে বাধ্য হলাম? কারা আমাদের পশ্চাৎমুখী যাত্রায় বাধ্য করেছিল? তাদের স্বরূপটিও তরুণদের সম্মুখে ইত্যবসরে উন্মোচন হওয়া দরকার। খুব সহজে বলা যায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর যারা এদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভোগ করেছে কিংবা বঙ্গবন্ধু হত্যার সুবিধাভোগী তারাই আমাদের চিন্তা-চেতনা ও মননকে পেছনের দিকেই ঠেলে দিয়েছে- ঠেলে নিয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারীদের যারা রাষ্ট্রীয় পদ, পদবি ও সম্মানে ভূষিত করে রাজনৈতিকভাবে এদেশে প্রতিষ্ঠা দান করেছে তারাই দেশকে ও দেশের মানুষের মননকেপেছনের দিকেই ঠেলে দিয়েছে- ঠেলে নিয়েছে। স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া শত শত সেনা কর্মকর্তাকে বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে বে-আইনি কোর্ট মার্শাল বসিয়ে যারা হত্যা করেছে প্রকৃতপক্ষে তারাই দেশটিকে তারাই পশ্চাতে ঠেলে দিয়েছিল- ঠেলে নিয়েছিল সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখনো তারা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ফন্দিফিকির নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। নানা ইস্যুতে তাদের ষড়যন্ত্রেরও কোনো শেষ নেই!

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শরূপে গৃহীত মৌলনীতি চারটির অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ। যা এদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্য উৎসারী এবং একইসঙ্গে যা মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধকে দৃঢ়তর করতে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। জাতির পিতা প্রবর্তিত রাজনৈতিক আদর্শ বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং অসাম্প্রায়িকতার চর্চা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সহনশীলতা প্রতিষ্ঠায় যেমন ভূমিকা রাখে তেমনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তি রচনায়ও ভূমিকা রাখে। সমাজ সংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক বোধ মানুষে মানুষে সামাজিক বন্ধন ও সুসম্পর্ককে সংহত করে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নিজস্ব সহনশীল মনোভঙ্গির পটভূমি এবং আদর্শিক উপলব্ধির ওপর নির্ভর করে উপরোক্ত প্রত্যয়সমূহ যথা- সমাজ, সংস্কৃতি, অসাম্প্রদায়িক কিংবা ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাসহ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মহিমাময় মানবিক চেতনা। এসবের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত থাকে একটি আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থাও। ৭৫-উত্তর দীর্ঘ সময় পরিক্রমায় উল্টোপথে রাষ্ট্রের চলন ছিল বলেই বিগত কয়েক যুগে আমাদের শিক্ষব্যবস্থার মধ্যেও তৈরি হয়েছিল পশ্চাদ-পদতা, যুক্ত হয়েছিল পেছনের দিকে চলার অপশক্তির তাণ্ডবও। ফলে, আমাদের সংস্কৃতিও আজ অনেকটাই দ্বিধাগ্রস্ত। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি আজ বিপন্নপ্রায়।

আমাদের দেশে বিভিন্ন ধারার প্রচল শিক্ষাব্যবস্থা সমাজে ‘বৈচিত্র্য’ তৈরির বদলে বৈষম্য, বিভেদ ও বিভ্রান্তিই বেশি তৈরি করছে। ফলে, প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে দ্বিধাবিভক্তির সমাজ। আর এই দ্বিধাবিভক্ত সমাজে মানুষে মানুষে সামাজিক বন্ধন দৃঢ়তর না হয়ে বরং তৈরি হয়েছে চরম শৈথিল্য। মানুষে মানুষে ঘনীভূত হচ্ছে বিদ্বেষ হিংসা রিরংসা- ঘনীভূত হয়ে উঠছে উগ্রবাদীতাও। এসবের পশ্চাতে প্রচল শিক্ষাব্যবস্থার কোনো ভূমিকা নেই তা বলা যাবে না। বাংলা মাধ্যমের সাথে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের আবার এই উভয়বিধ ধারার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাদ্রাসা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কেবল মানসিক বৈষম্যই নয় সামজিক বৈরিতাও প্রতিষ্ঠিত রূপ ধারণ করেছে। শুরুর দিকে সম্ভবত নানামুখী এসব শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ‘বৈচিত্র্যপূর্ণ’ ফলাফল প্রত্যাশা করা হয়েছিল। কোনো সময় হয়তো তা কিছু পরিমাণে পাওয়াও গিয়েছিল। কিন্তু আজকের এই কঠিন বাস্তবতার যুগে দাঁড়িয়ে আমরা সহজেই দেখতে পাই সেখানে বৈচিত্র্যের বদলে বৈষম্য, বিভেদ ও বিভ্রান্তিই বেশি প্রকটিত। প্রকটিত সেই সঙ্কটের সাথে ভীষণ-দর্শন অলংকাররূপে যুক্ত হয়েছে এক ধরনের ধর্মীয় উগ্রবাদী বিদ্বেষও।

এই বৈষম্য ও বিদ্বেষকে পুঁজি করে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক কিছু কিছু গোষ্ঠী তাদের ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে উঠার অবকাশ পেয়েছে। শুধু তৎপর বললে ভুল হবে- বলা যেতে পারে অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের এই সক্রিয় অপ-তৎপরতার ইতিহাসও কম লম্বা নয়। তাই মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় থেকেই একটি গোষ্ঠী অসাম্প্রদায়িক চেতনাপুষ্ট স্বাধীনতার চার মৌল স্তম্ভের অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষতা আর বাঙালি জাতীয়তাবাদকে নেতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছিল। এইসব গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা আজও মুক্তিযুদ্ধের চার মৌলনীতিকে সহজে গ্রহণ করতে পারেনি- যেমনটি গ্রহণ করতে পারেনি সমাজতন্ত্র বা গণতন্ত্রকেও। বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি রাজনৈতিক দল দেশ-বিদেশ থেকে নানা অপপ্রচারের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মেও মগজধোলাইয়ের অপচেষ্টায় এখনো সক্রিয় রয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যাকারী শাসক গোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যমুখী পেট্রো-ডলার সংস্কৃতির যে অর্থব্যবস্থার পত্তন করে তা বাঙালির চিরকালীন প্রবহমান সংস্কার-সংস্কৃতি ও বোধ-বিশ্বাসের ওপর চরম আঘাত হানে। সে সময় মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসকারী ও পেট্রো-ডলার প্রেরকেরা ইসলামের নামে তদ্দেশীয় সংস্কার-সংস্কৃতিও যথাসম্ভব এদেশে আমদানি করে। ফলে, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে সামরিক কিংবা ছদ্মসামরিক শাসনামলে এদেশের মানুষ যতটা না আর্থিক স্বচ্ছলতা লাভ করে তারচেয়ে বেশি অভ্যস্থ হয়ে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যীয় ঠাঁট-বাট, চাল-চলন, সংস্কার-সংস্কৃতিতে! ফলে, দূরাগত এক সংস্কার-সংস্কৃতির আক্রমণের কবলে পড়ে ক্রমশ ম্লান হতে থাকে আবহমান বাঙালির চিরায়ত সাংস্কৃতি। বাঙালিত্বের বিশেষত বাঙালি মুসলমানিত্বের পরিচয় ছাপিয়ে ভিন্দেশীয় মুসলমানিত্ব আমাদের মননে-মগজে প্রবেশ করে। আমরাও দিন দিন পেট্রো-ডলারের মোহ আর স্বচ্ছন্দ জীবনের লোভে আত্মবিসর্জন দিয়ে ফেলি কখনো জেনে কখনো না জেনে। যে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ সংবিধান স্বীকৃত তার ওপর অস্ত্র চালিয়ে একটি অত্যাধুনিক সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলা হয়। স্বৈরশাসক জিয়ার উত্তরসূরী এরশাদের আমলে রাষ্ট্রধর্ম প্রবর্তনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সবুজ শ্যামল বাঙালি-আত্মাকে আরো একবার বিসর্জিত করি। বাঙালি জীবনে গভীরভাবে প্রোথিত ইসলামকে আচার-সর্বস্ব রূপ দেওয়ার চেষ্টা চলে অনেকটা যেন পেট্রো-ডলার বিনিময়ের সূত্রেই। পেট্রো-ডলারের রেমিটেন্সের কাছে বিকিয়ে দেওয়া হয় অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলমন্ত্র- ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ। ফলে, সংবিধান স্বীকৃত গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রও আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। হাজার বছরের বেশি সময় ধরে এই অঞ্চলের বাঙালি জীবনে প্রতিষ্ঠিত ইসলামকে এক ভ্রান্ত ব্যাখ্যায় জঙ্গিরূপে আচ্ছন্ন করার অপপ্রয়াস শুরু হয়। এই অপপ্রয়াস আর জঙ্গি-জুলুম থেকে শান্তির ধর্ম ইসলামকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার দায় নিতে হবে এদেশের চিন্তাশীল ওলামা-মাশায়েখদেরকেই। তারাই ইসলামের শাশ্বত শান্তির রূপটি মানুষের সম্মুখে তুলে ধরবেন। সামাজিক সচেতনতার মধ্য দিয়ে ইসলাম যে প্রকৃতই শান্তির ধর্ম একথা তাদেরকেই পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য প্রথমেই ইমামদেরকে প্রশিক্ষিত ও দক্ষরূপে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। ইসলাম তার স্বমহিমায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে যে কোনো রূপ অশুভ আক্রমণ থেকে দেশের মানুষ রক্ষা পাবে। স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সমাজ সুস্থিরভাবে সম্মুখের দিকে এগিয়ে যাবে।

পাশাপাশি, সরকারের উদ্দেশ্যেও আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। তাহলো- কেবল সাংবিধানিকভাবে অর্থাৎ সংবিধানের স্তম্ভ হিসেবে কেবল অসাম্প্রদায়িক চেতনাপুষ্ট ধর্মনিরপেক্ষতা বা বাঙালি জাতীয়তাবাদ লিপিবদ্ধ থাকলে চলবে না- এসব আদর্শের লালন-পালন ও চর্চার বিষয়টিও স্পষ্ট করতে হবে। স্পষ্ট করতে হবে জাতীয় জীবনে এসব মহান আদর্শের চিত্রভাষ্য। এদুটি বিষয় নিয়ে যে বর্তমান সরকার ভাবিত-চিন্তিত এমনকি সামান্যতম আন্তরিক তাও কিন্তু আমাদের সাধারণ নাগরিকের অভিজ্ঞতার একেবারে বাইরে। রাষ্ট্রীয় কিংবা জনজীবনের কোনো ক্ষেত্রেই এ বিষয় দুটি গুরুত্বের সাথে উচ্চারিত বা চর্চিত হয় না। ফলে, আত্মপরিচয়ের ক্ষেত্রেও আমরা কিঞ্চিৎ দ্বিধাগ্রস্ত থাকি বলেই অপপ্রচারকারীরা সুযোগ গ্রহণ করে। এ কথা তো প্রমাণিত যে, একটি মহল দেশকে, দেশের মানুষকে জিম্মি করে ভিন্নতর সাংস্কৃতিক আবরণে আচ্ছাদিত করার অপপ্রয়াসে সক্রিয় ও নানামুখী অপতৎপরতায় ব্যস্ত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তরুণ প্রজন্মকে সব বিষয়ে সতর্ক নজর রাখতে হবে।

সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রামে বিএনপির মহাসমাবেশে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্রের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদেরকে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে একটি প্রশ্নের মুখোমুখি করে দিয়েছে। তা হলো, আমরা কি যুদ্ধাপরাধীদের বংশধরদের হুমকি-ধামকিতে মেনে লেজগুটিয়ে পালিয়ে যাবো না সত্যের পথে থেকে, ন্যায়ের পথে থেকে, আলোর পথে থেকে প্রয়োজনে আবারো গর্জে উঠবো? আমাদেরকে আরেকটি প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে তা হলো পৃথিবীর অন্যান্য দেশের যুদ্ধাপরাধীদের ন্যায় এদেশের যুদ্ধপারাধীদের সম্পত্তি কেন এখনো বাজেয়াপ্ত করা হলো না? অনেক আগেই বলা হয়েছিল, যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কাজে লাগানো হবে। বলা হয়েছিল, যেসব ব্যক্তি বা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটনকারীকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়েছিল, জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিল সেইসব ব্যক্তি বা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকেও বিচারের আওতায় আনা হবে! এসবের কোনোটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আদৌ কখনো সম্ভব হবে কি না জানি না, তবে ইতিহাস তার সঠিক দিকনির্দেশনা নিয়ে অবশ্যই হাজির হবে তার দায় মেটাতে; যেমন যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে ইতিহাসই নির্ধারণ করে দিয়েছে। পঁচাত্তর-উত্তর যে বৈরী সময় আমরা পার করেছি তাতে কোনোদিন কল্পনা করাও কঠিন ছিল যে এদেশে যুদ্ধাপরাধীর বিচার কখনোই সম্ভব হবে! জননেত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েই সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে- জন রায়কে বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে। সরকার তাই সাধুবাদ পাওয়ার দাবিদার। সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায় কার্যকর করেছে, কিন্তু তরুণ প্রজন্মকে পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে।

১৯৭১ সালে যে লক্ষ্য ও আদর্শ সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তা ছিল বাঙালির এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। এই এগিয়ে যাওয়াকে ১৯৭৫ সালের আগস্টে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু স্তব্ধ নয়- তখন থেকে দেশ এক অতল অন্ধকাওে নিমজ্জিত হয়, পশ্চাদপানে ধাবিত হতে শুরু করে। সেই অন্ধকারকে পেছনে ফেলে জননেত্রী শখ হাসিনার সরকার পুনরায় সম্মুখপানে জাতির গন্তব্য নির্ধারণ করেন। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, যুদ্ধাপরাধের বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পুনরায় সঠিক পথে ফিরেছে। সঠিক পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। এদেশের নতুন প্রজন্মের লক্ষ কোটি তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে দুর্বার উন্নয়নের গতিতে দেশ এগিয়ে চলছে সম্মুখের পানে- আলোর পানে। আমাদের তরুণ প্রজন্মের এই জয়যাত্রা প্রতিহত করে রুখে দাঁড়ায় সেই সাহস ও শক্তি আছে কার? প্রতিটি তরুণের বুকের গভীরে সেই আত্মবিশ্বাস ও অহংকারই তো দীপ্তিমান। তরুণ প্রজন্মও জানে আলোর বিকল্প কিছু নেই! সব অন্ধকার পেছনে ফেলে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে আলোর পানেই ছুটে চলতে হবে নিরন্তর।

লেখক : ড. আহমেদ আমিনুল ইসলাম – অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ