1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ছাত্র ইউনিয়ন কি এককভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করেছিলো? কবে?

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩

গতকাল সিলেটে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মিছিল থেকে ‘৭৫ এর হাতিয়ার গর্জে উঠার সংবাদ সহ ভিডিও প্রকাশ করে “Sylhet Voice”- অনলাইন পোর্টাল। সংবাদের প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট সংসদের পক্ষ থেকে পোর্টালটির সম্পাদক সৈয়দ রাসেল ‘কে একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দাবী করা হয়- এরকম কোন শ্লোগান দেয়া হয়নি। একই সাথে বিজ্ঞপ্তিতে দাবী করা হয় “বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ১৯৭৫ সালে সংগঠিত নৃশংস হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদকারী সংগঠন”। দ্বিতীয় দাবী নিয়ে একটু আলাপ করতে চাই, অতীতেও করেছি। বারবার করতে হবে কারন গত ৫২ বছর ধরে ছাত্র ইউনিয়ন এই “মিথ্যে, বানোয়াট, বিকৃত ইতিহাস চর্চা” করে ক্রেডিট নিচ্ছে।

এবার আসেন মুল আলাপে- সত্য হলো- ২০ অক্টোবর ১৯৭৫ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে একটি ঝটিকা মিছিল হয়। এই মিছিলে কারা ছিলেন?

এর আগে জেনে নিতে হবে, ‘৭৫ এর জানুয়ারীতে জাতীয় দল বাকশাল গঠন হবার পর আওয়ামী লীগ, সিপিবি, ন্যাপ তিন দলই আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়ে বাকশালে একীভূত হয়। দলগুলোর ছাত্রসংগঠনও বিলুপ্ত হয়ে বাকশালের ছাত্র সংগঠন “জাতীয় ছাত্রলীগ”-এ একীভূত হয়। প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও অজয় দাশ গুপ্ত “জাতীয় ছাত্রলীগ”-এর কেন্দ্রীয় সদস্য নির্বাচিত হন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড যখন ঘটিত হয় তখন আওয়ামী লীগ ও ছিলোনা, সিপিবিও ছিলোনা, ছাত্রলীগও ছিলোনা, ছাত্র ইউনিয়নও ছিলোনা। মুল দল ছিলো বাকশাল, ছাত্র সংগঠন ছিলো জাতীয় ছাত্রলীগ।
২০ অক্টোবর ’৭৫ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম যে মিছিল হয় সেটি ছাত্র ইউনিয়নের ছিলোনা, ছাত্রলীগেরও ছিলোনা। ছিলো বাকশালের ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের। জাতীয় ছাত্রলীগের ছিলো বলেই সেই মিছিলে যেমন বিলুপ্ত ছাত্র ইউনিয়নের মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অজয় দাশ গুপ্ত ছিলেন তেমনি ছিলেন বিলুপ্ত ছাত্রলীগের রবিউল মুকতাদীর, ইসমত কাদির গামা প্রমুখ। পরবর্তীতে জাতীয় ছাত্রলীগ আর কার্যকর না থাকায় এঁরা আবারো ছাত্র ইউনিয়ন/ ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত হন।

’৭৬ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একক ছাত্র সংগঠন হিসাবে ( জাতীয় ছাত্রলীগ তখন অকার্যকর হয়ে গেছে) সবচেয়ে বড় মিছিলের আয়োজন করে, জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনকে চ্যালেঞ্জ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবীতে সেই থেকে একটানা ছাত্র আন্দোলনের শুরু। ছাত্রলীগের সেই মিছিলের একজনের সাক্ষ্য অনুযায়ী, ছাত্রনেতা আওরঙ্গের একক নেতৃত্বে ঐ মিছিল সংগঠিত হয়েছিলো। আওরঙ্গের নেতৃত্ব ছাড়া তৎকালীন জাতীয় ছাত্রদল আর বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের সশস্ত্র ক্যাডারদের মোকাবেলা করে মিছিল করা সম্ভব হতোনা।

যা হোক, মুল আলাপ হচ্ছে ২০ অক্টোবরের প্রথম প্রতিবাদ মিছিল ছাত্র ইউনিয়নের ছিলোনা ( ছাত্রলীগের ও না)- এটা ছিলো জাতীয় ছাত্রলীগের। ’৭৬ এ একক ভাবে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিরুদ্ধে মিছিল শুরু করে।

ছাত্র ইউনিয়ন কি এককভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করেছিলো? কবে? না করলে কোন সমস্যা নেই। সিপিবি বা ছাত্র ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদের কোন দায় নেই। কিন্তু গৌরবের অংশীদার হতে হলে তো প্রকৃত সত্যের ভিত্তিতে হতে হবে। জাতীয় ছাত্রলীগকে ছাত্র ইউনিয়ন বানিয়ে সেটি হবেনা।

ছাত্র ইউনিয়নের জ্ঞানী জ্ঞানী পুরনো নেতারা মিথ্যে কৃতিত্বের দাবী ছাড়েননি, ফলে তাঁদের সংগঠনের নতুনরাও এই মিথ্যার দায় বহন করে চলছে। ছাত্র ইউনিয়নের নতুন কমরেডরা আমাকে দুটো গালি বা আমার ঠিকুজি অনুসন্ধানের আগে এ বিষয়ে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম কিংবা অজয় দাশ গুপ্ত’কে জিজ্ঞেস করে নিতে পারে।

লেখক : হাসান মোর্শেদ – গবেষক 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ