সঠিক নিয়মে ছাদকৃষি করলে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘ছাদবাগান ও ছাদকৃষি হতে পারে নিরাপদ খাদ্যের উৎস। ছাদকৃষির ক্ষেত্রে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সঠিক নিয়মে, নিরাপদে এটি করতে হবে। ডিএনসিসির ওয়ার্ড থেকে যারা সবচেয়ে বেশি নিরাপদ খাদ্য ও নিরাপদ ছাদকৃষি করতে পারবেন তাদের পুরস্কার দেওয়া হবে। আমরা চাই ঢাকা শহরকে অক্সিজেনের হাব করতে।’
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশান নগর ভবনে ‘নিরাপদ ছাদকৃষি’ বিষয়ে দিনব্যাপী ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। সেখানেই পুরস্কারের ঘোষণা দেন তিনি।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ছাদবাগানের মাধ্যমে অক্সিজেনের সংস্থান হবে। পরিবেশ রক্ষায় এটি ভূমিকা রাখবে। ঢাকা শহরের গাছপালা কেটে শুধু ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। বনানী চেয়ারম্যান বাড়ির গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। সিটি ফরেস্ট ধ্বংস করা হয়েছে। ঢাকার পরিবেশ ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আমাদের যেহেতু শহরে জায়গার অভাব সেহেতু ছাদেই কৃষি করতে হবে। তবে নিরাপদ ছাদবাগান করতে হবে। সেখানে যেন এডিস মশার জন্ম না হয় সেটি খেয়াল রাখতে হবে।’
মেয়র বলেন, ‘গুলশান, বনানী ও বাড়িধারার লেকগুলো দূষিত হয়ে যাচ্ছে। আমরা নিয়মিত লেক পরিষ্কার করছি, খাল ও ড্রেন পরিষ্কার করছি। কিন্তু বাসা-বাড়ির পয়ঃবর্জ্যের লাইন খালে গিয়ে প্রতিনিয়ত খালের পানিকে দূষিত করছে। দূষণের ফলে খালে মাছের চাষ করতে পারছি না, সেখানে মশার চাষ হচ্ছে। এটি আর হতে দেওয়া যাবে না। এ দূষণ রোধ করতে হবে।’
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম খুবই পশুপ্রেমী। আমরা দেখেছি তারা বিড়াল, কুকুর ও অন্যান্য প্রাণীকে কিভাবে যত্ন করে। অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার হাসপাতাল ও ট্রি ওয়েলফেয়ার হাসপাতালের জন্য মিরপুরে একটি জায়গা ঠিক করেছি। আমরা সেখানে দ্রুতই কাজ শুরু করবো। যারা গাছ ভালোবাসেন তাদের গাছের কোনও অসুখ হলে আমাদের কাছে আসলে চিকিৎসা দেব। এছাড়া অসুস্থ পশু পাখির চিকিৎসাও দেওয়া হবে।’
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘ছাদকৃষি করলে খাদ্যের চাহিদা পূরণ হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। পরিবেশগত উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে। ছাদকৃষিতে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নিয়ম মেনে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে। তাহলেই ছাদকৃষি নিরাপদ হবে।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রতিটি উন্নয়নের সঙ্গে কিছু বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে। উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে সেই প্রতিক্রিয়াগুলো সঠিকভাবে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবস্থাপনা করতে হবে। আমাদের দেশে এক সময় যানজট ছিল না। কারণ তখন গাড়ির সংখ্যা অনেক কম ছিল। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে যানজটও বেড়েছে। সঠিক ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে এটি ব্যবস্থাপনা করতে হবে। তেমনি ছাদবাগান ও ছাদকৃষির চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ছাদকৃষি চমৎকার উদ্যোগ। আমি এটি সমর্থন করি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
পরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এবং ডিএনসিসি মেয়র কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের সনদ প্রদান করেন। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, কাউন্সিলর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।