1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

পণ্য বহুমুখীকরণে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি

আবু মোখলেছ আলমগীর হোসেন : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২২

দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার স্বার্থে বাংলাদেশ সরকার রপ্তানিমুখী প্রবৃদ্ধির প্রতি গুরুত্বারোপ করছে। বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য গুটি কয়েকটি পণ্যের উপর নির্ভরশীল বিধায় ঝুঁকিপূর্ণ। রপ্তানি বাণিজ্যের এ প্রবণতা সামগ্রিক অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে শ্লথ করছে। এটা অনুধাবনযোগ্য যে, বিশ্ব অর্থনীতি করোনা ভাইরাস হতে উদ্ভূত অতিমারী পরিস্থিতি হতে উত্তরণ না হতেই রাশিয়া-ইউক্রেণ যুদ্ধ এ বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটকে আরও প্রকট হতে প্রকটতর করে তুলেছে। বাংলাদেশ যেহেতু বিশ্ব অর্থনেতিক ব্যবস্থা হতে বিচ্ছিন্ন নয় সেহেতু এর বিরুপ প্রভাব বাংলাদেশের সামস্টিক অর্থনীতিতে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফিতির ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বমুখীতা জ্বালানি এবং খাদ্য সংকটকে উসকে দিয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে বিশ্বের অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ উন্নত রাস্ট্র ও চরমভাবে সংকটে রয়েছে।

করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বেড়ে যাওয়ায় পুঞ্জিভূত চাহিদার (Pent-up Demand) জন্য দেশের আমদানী পরিমান বেড়ে যায় এবং আমাদের ফরেন রিজার্ভের উপর চাপ সৃস্টি হয়। করোনাকালিন আগস্ট ২০২১ সময়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমান ছিল ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ক্রমবর্ধমান আমদাানি ব্যয় পরিশোধ করার ফলে নভেম্বর ২০২২ সময়ে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমান দাঁড়িয়েছে মার্কিন ডলার ৩৩.৮৬ বিলিয়ন। আমদানি ব্যয়ের সংস্থান করা হয় মূলত রপ্তানি আয় এবং প্রবাসী (Bangladeshi Diaspora) কর্তৃক প্রেরিত রেমিট্যান্স হতে। আমদানি ব্যয়ের সিংহভাগ ব্যয় রপ্তানি আয়ের মাধ্যমে নির্বাহ করা হয়। ২০২১-২২ অর্থ বছরে পণ্য ও সেবা খাত মিলে রপ্তানি আয় অর্জিত হয়েছিল ৬০৯৭১.০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, পক্ষান্তরে উক্ত সময়ে আমদানি বাবদ ব্যয় হয়েছিল ৮৯,৩৩৬.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমদানি ব্যয়ে ৪৬.৫২ % রপ্তানি আয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছিল। গত দশ বছরের আমদানি ও রপ্তানি আয়/ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায় , ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে রপ্তানি আয়ের মাধ্যমে আমদানি ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৮৫.৩৪% সংস্থান করা হয়েছিল (সূত্র- ইপিবি)। আমদানি ব্যয়ের মাস ওয়ারী ব্যয় বিবেচনায় দেখা যায় জুলাই – অক্টোবর ২০২২-২৩ সময়ে আমদানি হয়েছে ২৫.৫০ বিলিয়ন যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.৭২% বেশী (সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক)। আমদানি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরার জন্য সরকার ইতোমধ্যে বিলাসবহুল পণ্য এবং ৩০০টি অ-দরকারী পণ্যের উপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণসহ নন-ফরমাল চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণের বিষয়টি কঠোর নজরদারীতে রেখেছে।

নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ এবং বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এর অবনমন রোধ করার জন্য রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীও তার বিভিন্ন বক্তব্যে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের বিষয়টি বারবার উল্লেখ করছেন এবং এ বিষয়ে সংশ্লিস্ট সকলকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণেরও নিদের্শনা প্রদান করছেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১- ২০৪১) এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়ও পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

রপ্তানি পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশের রপ্তানি আয় সীমিত কয়েকটি পণ্যের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। বাংলাদেশের খাতভিত্তিক রপ্তানি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশের মোট রপ্তানিতে তৈরি পোশাকের অংশীদারিত্ব ৮১.৮২ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্য প্রধান পণ্য খাত যেমন: হোমটেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হালকা প্রকৌশল পণ্য এবং হিমায়িত ও ফ্রেশ ফিস এর রপ্তানি অংশীদারিত্ব যথাক্রমে ৩.১১ শতাংশ, ২.৩৯ শতাংশ, ২.২৩ শতাংশ, ২.১৭ শতাংশ, ১.৫৩ শতাংশ এবং ১.০২ শতাংশ। রপ্তানি আয়ে তৈরী পোষাক খাতের অবদান ৮১.১৬% এবং নন-টেক্সটাইল খাতের অবদান ১৮.৮৪% । বাংলাদেশের রপ্তানি অতিমাত্রায় তৈরি পোশাকের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে অন্যান্য সম্ভাবনাময় পণ্যের রপ্তানির অংশীদরিত্ব বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা একান্ত আবশ্যক।

২. প্রধান প্রধান রপ্তানি পণ্যের রপ্তানি পারফরমেন্স নিম্নের ম্যাট্রিক্সে উল্লেখ করা হল :
(মূল্য- মিলিয়ন ডলার)

ক্রমিক নং পণ্যের নাম ২০২১-২২ অংশীদারীত্ব %
নীটওয়্যার ২৩,২১৪.৩২ ৪৪.৫৭
ওভেন গার্মেন্ট ১৯,৩৯৮.৮৪ ৩৭.২৫
হোম-টেক্সটাইল ১৬২১.৯৩ ৩.১১
চামড়া এবং চামড়ার পণ্য ১২৪৫.১৮ ২.৩৯
কৃষি পণ্য ১১৬২.২৫ ২.২৩
পাট এবং পাটজাত পণ্য ১১২৭.৬৩ ২.১৭
প্রকেীশল পণ্য ৭৯৫.৬৩ ১.৫৩
হিমায়িত এবং টাটকা মাছ ৫৩২.৯৪ ১.০২
পাগড়ী/টুপি ৩৬৪.৬৩  ০.৭০
১০ রাসায়নিক পণ্য ৩৬৪.০৭ ০.৭০
অন্যান্য ২২৫৫.২৪ ৪.৩৩
সর্বমোট ৫২০৮২.৬৬ ১০০.০০

রপ্তানি আয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী পণ্যের বাজার আকৃতি এবং আমাদের যে রপ্তানি আয় অর্জিত হয় এর মধ্যে ব্যাপক ফারাক রয়েছে অর্থাৎ কোন পণ্যের বাজার আকৃতি বিবেচনায় এর বিক্রি এবং প্রবৃদ্ধি কাঙ্খিত মাত্রার চেয়ে কম হলে একে কৌশলগত পরিকল্পনা গ্যাপ (Strategic Planning Gap) বলা হয়। আমাদের এ কৌশলগত পরিকল্পনা গ্যাপ হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কৌশলগত পরিকল্পনা গ্যাপ হ্রাসের জন্য আমরা নিবিড় প্রবৃদ্ধি কৌশল অনুসরণ করতে পারি। Market Penetration (বাজারের আরও গভীরে প্রবেশ) এবং নতুন বাজার উন্নয়ন কৌশলের (Market Development Strategy) মাধ্যমে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিধারা অব্যাহত রেখে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুবিধাজনক অবস্থায় রাখা সম্ভব। Market Penetration-এর ক্ষেত্রে বিদ্যমান রপ্তানি বাজারের নতুন মার্কেট শেয়ার ধরার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের ট্রেডিশনাল রপ্তানি গন্তব্যে (ইউএসএ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন) আমাদের তৈরী পোশাকের রপ্তানি আয় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বিশ্বব্যাপি তৈরী পোষাকের বাজার আকৃতি ইউএসডি ৪৩২.৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (ITC Trade Map, Knit and Woven HS Chap-61&62)। মার্কিন যুক্তরাস্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজার আকৃতি (Market Share) যথাক্রমে ৮৭.৩৪ এবং ১৭৭.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১-২২ অর্থ বছরে বাংলাদেশ নীট ও ওভেন মিলে রপ্তানি আয় অর্জিত হয়েছিল মার্কিন ডলার ৪২.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফলে উক্ত দুইটি অঞ্চলে অনুষ্ঠিত আইকোনিক সোর্সিং শ্রেণীর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় কার্যকর অংশগ্রহণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বিদ্যমান ক্রেতাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

৩. এ ব্যতিত, নতুন বাজার উন্নয়নের মাধ্যমে রপ্তানি সম্প্রসারণের কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন,এক্ষেত্রে ব্রাজিলসহ মারকোসুর (ল্যাতিন আমেরিকার মুক্ত বানিজ্য এলাকা যেখানে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে এবং উরুগুয়ে পূর্ণ সদস্যদেশ), ম্যাক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, রাশিয়াসহ CIS-ভূক্ত দেশ জাপান, সাউথ আফ্রিকান ডেভেলপিং ক্যান্ট্রিজ (SADC)-এর বিভিন্ন দেশ সমূহে রপ্তানি বাজার অন্বেষণ এবং সম্প্রসারণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহন এবং বাণিজ্য মিশন প্রেরণ একটি যথাযথ পদক্ষেপ হতে পারে। বাংলাদেশ ফরেন মিশন এ উদ্যোগ ফলপ্রসূ করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। পণ্য উন্নয়নের মাধ্যমে তথা রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি বাজার সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও অব্যাহত রাখা যেতে পারে।

বাণিজ্য ভারসাম্যের এ দুঃসময়ে পণ্য বহুমুখীকরণের বিষয়টি যে কোন বাণিজ্য সংক্রান্ত টক শো-তে একটি অধিক আলোচিত বিষয়। রপ্তানি পণ্য বৈচিত্র্যায়নে সরকার কর্তৃক অদ্যাবধি নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পণ্য বহুমুখীকরণ কার্যক্রম বেগবান করার জন্য বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) সৃষ্টি করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, মৎস্য, ফার্মাসিউটিক্যাল এন্ড হারবাল প্রোডাক্ট হালকা প্রকৌশল পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি এবং প্লাস্টিক পণ্যের উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক বাজার তৈরীর লক্ষ্যে বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) কাজ করছে। বাজার উন্নয়ন, অন্বেষণ, সুসংহতকরণ এবং সম্প্রসারণের পাশাপাশি রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে রপ্তানিমুখী প্রবৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ফুটওয়্যার, হালকা প্রকৌশল পণ্য, এবং প্লাস্টিক খাতকে প্রক্ষেপণ করে ৬ বছর মেয়াদি Export Competitiveness for Jobs (EC4J) প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার জন্য খাত ভিত্তিক রপ্তানি রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে যার মাধ্যমে সরকারের নীতিগত সহায়তা এবং সংশ্লিষ্ট সেক্টর প্লেয়ারদের সমন্বিত উদ্যোগে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জনের বিস্তৃত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য জাপানি কনসেপ্ট ওয়ান ভিলেজ ওয়ান প্রোডাক্ট (OVOP)-এর আদলে স্থানীয় রির্সোসেস এবং কারুতা ব্যবহার করে পণ্য উন্নয়নের জন্য জেলা ওয়ারী ১৪টি পণ্যখাতকে চিহ্নিত করে One District One Product (ODOP) কর্মসূচী গ্রহণকরা হয়েছিল। যথাযথ উদ্যোগ এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে চিহ্নিত খাতগুলো কাঙ্খিত মাত্রায় রপ্তানি বাণিজ্যে সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। ফলে পণ্য বহুমুখীকরণের বিষয়টি অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনায় এ উদ্যোগকে বিদেশী কোন বাণিজ্য উন্নয়ন সংস্থার কারিগরী এবং আর্থিক সহায়তায় প্রকল্প আকারে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি) ভাল একটি অপশন হতে পারে।

নেদারল্যান্ডভিত্তিক ট্রেড প্রমোশন প্রতিষ্ঠান CBI (সেন্টার ফর প্রমোশন অব ইমপোর্টস ফরম ডেভলপিং কান্ট্রিজ)-এর কারিগরি সহায়তায় Export Coaching Project on Home Decoration and Home Textiles হাতে নেয়া হয়েছে। উক্ত প্রকল্পের অধীন ২৪ টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের ডিজাইন ও মান উন্নয়ণসহ তাদের সক্ষমতা তৈরী ও বাজার উন্নয়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া কানাডা ভিত্তিক TFOC (Trade Facilitation office Canada) কর্তৃক SME ভূক্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছিল।

এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কারিগরি সহায়তায় হার্বস এন্ড হার্বাল মেডিসিন, হালকা প্রকৌশলী পণ্য, আইসিটি, হর্টিকালচার এবং কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের মান উন্নয়ণ এবং পণ্য বহুমুখীকরনের জন্য Bangladesh Quality Support Programme (BQSP) বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতীয়মান হয় যে, তৈরী পোশাক খাত বহির্ভূত অন্যান্য পণ্যের সক্ষমতা বৃদ্ধি, মান উন্নয়ন, বাজার সম্প্রসারণসহ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর সর্বাত্বক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পের কর্মসূচী হতে প্রাপ্ত রূপরেখার (Road Map) শুধুমাত্র কাগজে কলমেই বন্দি থাকায় পণ্য বহুমুখীকরণের সুফল আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যে কার্যকরভাবে প্রতিফলিত হয়নি।

৪. পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধি ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের বিভিন্ন প্রকল্প এবং কর্মসূচী হতে প্রাপ্ত গাইডলাইন এবং সুপারিশ সরকারের নীতিগত সহায়তার মাধ্যমে বাস্তবায়ন ব্যতীত বিকল্প নেই। পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির উদ্যোগকে সরকারের নীতিগত সহযোগিতা এবং পণ্যখাতের সংশ্লিষ্ট ট্রেড এসোসিয়েশন, নেতৃস্থানীয় চেম্বারসহ সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে ব্যবসা সহায়ক প্রতিষ্ঠান/সংস্থাসমূহের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। একক পণ্যের উপর নির্ভরশীলতার বৃত্ত হতে রপ্তানি বাণিজ্য বেড়িয়ে আসুক এ প্রত্যাশা করি।

লেখক: আবু মোখলেছ আলমগীর হোসেন – পরিচালক, মেলা ও প্রদর্শনী বিভাগ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ