1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিএনপির যা অবস্থা এতে লজ্জা পায় জনগণ!

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

নির্বাচন নিয়ে এখন সর্বত্র আলোচনা। নানারকম হিসেব-নিকেশ। আসলে মানুষকে ঠেকিয়ে রাখার দিন কি আর আছে? জনগণ কী চায়? জনগণ কাকে চায়, কেন চায়? এই হিসাবটা এখন বড়। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশে মানুষ টানতে পারেন। সম্ভবত তিনি মা-মাটি-মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারেন। আমরা দেখেছি, সমাবেশে জনগণকে টানবার মতো মানুষের অধিকার আদায়ের কথাও চিন্তা করে থাকেন। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কোনো রকম মনস্তাত্ত্বিক চাপে যাতে সাধারণ মানুষ না পড়ে এ কারণেই নির্বাচনমুখী করেছেন জনগণকে। জনগণের অংশগ্রহণ করাটাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। আমি গতবছর একট লেখা লিখেছিলাম এবং সম্ভবত এর শিরোনাম ছিল- বিএনপি জিরাফের মতো বড়-সড় হলেও আসলে এর আচার-আচরণ অনেকটা ফরিঙের মতো উড়াউড়ি করা। আমার পরিচিত অনেকেই তখন হেসেছিলেন, প্রশ্ন করেছিলেন, এটা কী ঠিক? আমরা অভিমত হচ্ছে, যারা সরকারকে উচ্ছেদ করা, বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়া, অপসারণ করার বড়বড় হুঙ্কার দেয় তারা গণতন্ত্র চায় না। তারা কাগুজে ভাগ। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা চায় আর মসনদে বসাই একমাত্র যোগ্যতা মনে করে। তারা জনগণকে ভয় পায়। ভোটানুষ্ঠান ভয় পায়। লন্ডন থেকে হুঙ্কার দেয়া আর আন্দোলন করা এক কথা নয়। গাড়ি ভাড়া করে অর্থের বিনিময়ে মানুষ এনে বড় সমাবেশ দেখানো যায় কিন্তু নির্বাচন করা সম্ভব হয় না।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ সারাদেশে, গ্রাম-গঞ্জে, শহরে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনি তফশিলে কোনো পরিবর্তন না আনলে নতুন করে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। এদিকে সংসদ নির্বাচনে নৌকার টিকিট নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কার হওয়া ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন তিনি। তবে পত্র-পত্রিকায় এসেছে, আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার আগে কারাগারে থাকাকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমির খসরু, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে কথা হয়েছিল ব্যারিস্টার ওমরের। তিনি জানিয়েছেন, কারাগার থেকে বের হওয়ার কয়েকদিন আগে একসময় কেরানীগঞ্জ জেলে থাকার সময় নাশতা খাওয়ার পর আমি (শাহজাহান ওমর) সবাইকে বললাম, ‘এবারের নির্বাচনে যাওয়া উচিত। পরে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বললেন, হ্যাঁ নির্বাচনে যেতে পারি। তবে ৩টি শর্ত আছে। প্রথমটি হচ্ছে, ম্যাডাম জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। দ্বিতীয়ত সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সবশেষ শর্ত হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে সরকারকে। এমন আলোচনা চলছিল আমাদের মধ্যে।’ এরপর এসব কথার পরিণতি জানা যায় নি।

আসলে এসব কথার বিষয়ে এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন জনগণের কাছে। নতুন করে এর বিশ্লেষণ কীভাবে দরকার পড়ে? আসলে বিএনপি-জামায়াত কোনোভাবেই নির্বাচণে অংশগ্রহণ করবে না। কিছুদিন টেলিভিশনে, টকশোতে কেবল শোনা যাচ্ছিলো, জিনিসের দামে আগুন। বাস্তবে তখন নানাকারণেই দ্রব্যমূল্যের দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি ছিল। কিন্তু এখন যখন জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক, কোনো কোনো ক্ষেত্রে খুবই কম- এখন রাতের টকশোতে ‘কম’ এ কথাটি শোনা যায় না। বলা হতো, রাতারাতি ডিমের দাম বাড়লেও এর দায় নিচ্ছে না কেউ। ডজন ১১০টাকা থেকে ১৫০ টাকা হয় কীভাবে? এমন পরিস্থিতিতে ডিম নিয়ে যে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছিল সেটা স্পষ্ট। কিন্তু এখন দাম কম, কমদামে গ্রাহক পাচ্ছেন টিভির টকশোতে একথাটা বলা হয় না। সিন্ডিকেট একটা সমস্যা। আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টি-জামায়াত-মুসলিম লীগ সবাই যেন ঐক্যমত; একারণে সিন্ডিকেট ভাঙাও কঠিন। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির চেয়েও ব্যক্তির ব্যবসাটা বড়, সিন্ডিকেটের লোকেরা এটা চায়। মনের ভেতর প্রশ্ন জাগে, ইভিএম নিয়ে একসময় আলোচনা তুঙ্গে ছিল। বিএনপিসহ কিছু দলের নেতারা গণসংযোগ, প্রচারপত্র বিতরণ ও পথসভা করেছেন এর বিরুদ্ধে। কিন্তু এটা তো সত্য সাধারণ মানুষ ইভিএম নিয়ে মোটেই মাথা ঘামাতে চায় না। বাস্তবতা না মেনে বক্তৃতা করে যে অধিকার আদায় সম্ভব নয় এটা অনেকেই বুঝতে চান না। অথচ তারা মাঠ গরমের রাজনীতি করেন। অবাস্তব বক্তৃতা সমস্যা বাড়ায়। জনগণের উপকার হয় না।

মানুষ বিশ্বাস করে যে, যুদ্ধের জন্য জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে এটা ঠিক। এখন মাংসের দাম কম। কিন্তু কারো মুখ থেকে এ সত্য উচ্চারণ হচ্ছে না। কেন? এটাও মানুষ বিশ্বাস করেন, সিন্ডিকেটের কারসাজিতে পরিকল্পিতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছিল। এখনো সিন্ডিকেট রয়েছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পাটি-জামায়াত বলে কিছু থাকে না। তারা সবাই এক। সরকার এককভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে মনে হয় না। দোষারোপ না করে সবগুলো রাজনৈতিক দল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এগিয়ে আসা জরুরি। কী উপায়ে সমাধান সম্ভব? কী উপায়ে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এ বিষয়ে পরামর্শ নেই। এখন হরতাল অবরোধের মধ্যে আমরা আছি। জনগণ কীভাবে একে গ্রহণ করেছে তা রাস্তা-ঘাট-সড়ক-মহাসড়ক দেখলেই বোঝা যায়। অতীতে মানুষের অংশগ্রহণে হওয়া যুক্তিসঙ্গত হরতাল আর বর্তমান সময়ের জ্বালাও-পোড়াওয়ের নামে সহিংসতামূলক কর্মসূচি এক নয়। মৃত্যু কাম্য নয়। হরতালে একশ্রেণির মধ্যসত্ত্বভোগীর সুযোগে থাকে। মাঝখান থেকে মানুষের কষ্ট আরো বাড়ে। লন্ডনে এয়ারকন্ডিশনের ভেতর থেকে দলের সমর্থক-কর্মীদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার নাম রাজনীতি হতে পারে না। এ মুহূর্তে সব্যসাচী লেখক সুকুমার রায়ের ‘খিচুড়ি’ কবিতাটির কথা মনে পড়ছে। কবি লিখেছেন, ‘হাঁস ছিল, সজারু ব্যাকরণ মানি না/হয়ে গেল ‘হাঁসজারু’ কেমনে তা জানি না।’ লোকমুখে পরিচিত দল বিএনপি এখন ‘হাসজারু’র দিকেই এগিয়ে যাওয়ার চিন্তায়ই আছে। সুকুমার রায় আরেক জায়গায় লিখেছেন, ‘জিরাফের সাধ নাই মাঠে-ঘাটে ঘুরিতে/ফরিংয়ের ঢঙ ধরি সেও চায় উড়িতে।’ এ ছড়ার সঙ্গে বিএনপির মারাত্মক মিল রয়েছে। বিএনপি কিন্তু জিরাফের মতো বেশ বড়-সড়। তাদের ভালো সমর্থক রয়েছে। কিন্তু দলটি ফরিঙের মতো উড়তে চায়। এখন দলটির যা অবস্থা এতে লজ্জা পায় জনগণ। যা দলটির জন্যই আসলে বিপদ ডেকে আনবে অচিরেই।

লেখক : দীপক চৌধুরী – উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, কথাসাহিত্যিক ও ফিল্মমেকার


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত