1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ভোট ঠেকানোর প্রতিবাদে হবে ভোটবিপ্লব!

নিউজ এডিটর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পক্ষ-বিপক্ষের সূত্রপাত হয়েছে। যদিও নিবন্ধিত অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে তথাপি যারা নির্বাচনী রেসে উঠতে পারেনি তারা নির্বাচনকে যে কোনোভাবে প্রতিহত করতে নানা রকমের কর্মসূচি প্রদান করছে। তার বিপরীতে যারা দেশপ্রেমিক বাঙালি, তাদের নির্বাচনে ভোটের বিপ্লব ঘটাতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কেননা, ভোটের বিপ্লব মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা দরকার রয়েছে সেটির প্রমাণ নিশ্চিত করা যাবে। শুধু তাই নয়, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপস্থাপনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি যে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে সমর্থন করছে সেটিরও জাস্টিফিকেশনের নিশ্চয়তা প্রদান করা যাবে।

এখন ভোটবিপ্লব কীভাবে নিশ্চিত করা যায় সে ব্যাপারে সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে কেন্দ্রে যাতে নির্বিঘ্নে ভোটাররা আসতে পারে সে সংক্রান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ভোট প্রদান করে প্রার্থী নির্বাচনের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার ব্যাপারে এখন থেকেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কেননা, একটি পক্ষ রয়েছে- যারা ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তারা প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্নভাবে ভোটারদের ভোট প্রদানে বাধাগ্রস্ত করার কাজ করতে পারে ভোটের দিন এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। মুষ্টিমেয় মানুষ ছাড়া দেশের অধিকাংশ মানুষ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন দেখতে চায়। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটারদের ভোটে অংশগ্রহণ। ভোটে অংশগ্রহণ করে নিরপেক্ষভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করে নেতা নির্বাচনের সুযোগ গ্রহণ করা একটি উলেস্নখযোগ্য বিষয়। সেই সুযোগটি কোনোভাবে হাতছাড়া করা যাবে না মর্মে প্রচারণা চালাতে হবে।

দেখা যায়, একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক নারী ভোটার প্রায় প্রত্যেক নির্বাচনী আসনে রয়েছে। উলেস্নখ্য, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন আসনে সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে নারীরা। নারীর ক্ষমতায়ন, নারীদের নির্বাচনে সক্ষমতা বৃদ্ধি, নেতৃত্বের বিকাশ ও নেতা নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণের লক্ষ্যে নারীদের ভোটের দিন কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সে লক্ষ্যেই নারী ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। বাড়ি বাড়ি যেয়ে কিংবা পথসভা করে নারীদের কেন্দ্রে আনার সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, নারী ভোটারদের ভোটের মাধ্যমেই কোনো একটি আসনের নেতা নির্বাচনে মোক্ষম বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। তাছাড়া যে বা যারাই নারী ভোটারদের কেন্দ্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে কিংবা ভোট প্রদানের প্রয়োজন নেই মর্মে উদ্বুদ্ধ করে তাদের ব্যাপারে সরাসরি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা যেতে পারে।

আমরা সবাই জানি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বিদেশিদের ব্যাপক আগ্রহ ও আকর্ষণ রয়েছে। আকর্ষণ এই অর্থে বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে আশানুরূপ উন্নতি করায় বাদ বাকি বিশ্ব বাংলাদেশকে সমীহ করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ইস্যুতে পূর্বের ন্যায় নাক গলানোর পরিবেশ এখন আর নেই। তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অপরিসীম গুরুত্ব থাকায় সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন জোট কাজ করছে। কিছু রাষ্ট্র বিশেষভাবে বারবার বলছে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা তারা করছে। নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে মূলত কেউ যেন কোনোভাবে প্রশ্ন তুলতে না পারে সেই লক্ষ্যেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য ভোটবিপ্লব অত্যন্ত জরুরি।

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ও সংবিধানকে অনুসরণ করেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখানে অনেকেই বিভিন্ন অজুহাতে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করবে, তার বিপরীতে বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কেন অকার্যকর ও অগ্রহণযোগ্য সে বিষয়ে সাধারণ জনগণকে সতর্ক করে তুলতে হবে। যাতে ষড়যন্ত্রকারীরা এ ইস্যুকে সামনে তুলে ধরে ষড়যন্ত্র করতে না পারে। শুধু তাই নয়, প্রজাতন্ত্রের স্বার্থমতে অনির্বাচিত সরকারব্যবস্থা যে জন্য অগ্রহণযোগ্য তার কার্যকারণ জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে- যাতে ষড়যন্ত্রকারীরা গুজবের আশ্রয় গ্রহণ করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে না পারে। শুধু তাই নয়, বিশ্ব গণমাধ্যমে তত্ত্বাবধায়কের অগ্রহণযোগ্যতা ও অসামঞ্জস্যতা নিয়ে কলামসহ সম্পাদকীয়তে লেখা হচ্ছে। সুতরাং, সঠিক ও সত্য ঘটনা তুলে ধরে বিষয়বস্তু উপস্থাপন করে সাধারণ জনগণকে অবহিত করতে হবে। তা না হলে ষড়যন্ত্রকারীরা ভোটের মাঠে তাদের অব্যাহত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ভোট প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ করবার আপ্রাণ চেষ্টা চালাবে।

কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশের জন্য ৮০০ কোটি ডলারের জলবায়ু তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ ধরনের আরও অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্প বাংলাদেশে চলমান এবং আরও বেশ কিছু বরাদ্দের প্রক্রিয়া অপেক্ষামাণ রয়েছে। যদি ভোট ঠেকানোর ষড়যন্ত্রকারীরা কোনোভাবে সফল হয়ে যায় তাহলে এ ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ স্থবির হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারগুলো দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে হবে এবং এর জন্য দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সবাইকে বহন করতে হবে। নির্বাচন সফল ও সুষ্ঠু করার দায় কেবলমাত্র নির্বাচন কমিশনের নয়, সরকারসহ অন্যান্য যারা জড়িত বিশেষ করে প্রার্থী, ভোটার ও নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই প্রক্রিয়াটির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত। মোদ্দা কথা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে, অগ্রগতির লক্ষ্যে, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে আসন্ন নির্বাচনে ভোটের বিপ্লব ঘটাতে হবে। আবারও প্রমাণ করে দিতে হবে বাংলাদেশের মানুষ আগুন সন্ত্রাসকে পদদলিত করে সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রের স্বার্থে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বদ্ধপরিকর।

এতসংক্রান্তে যে বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি তা হচ্ছে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ভোটের দিন ভোটবিপ্লব ঘটাতে হবে। ভোটবিপ্লবের মাধ্যমেই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে জবাব দিতে হবে এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে বাংলাদেশের মানুষের ঐক্যমতকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারাই ভোট ঠেকানোর লক্ষ্যে কাজ করবে তাদেরই প্রতিহত করতে হবে, পাড়ায় পাড়ায় ভোট প্রদানে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিকদের দাঁড়াতে হবে, রাষ্ট্রীয় আইন কানুন মেনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে বাধাদানকারীরা দেশ ও জাতির শত্রম্ন। তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের ধারায় বাংলাদেশ চলবে এবং বিকশিত হবে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই ধারণাকে সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কেননা, ১৯৭২ সালের সংবিধানের অন্যতম মূল স্তম্ভ গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থেই মূলত নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণে বিরত থাকলে এর দায় সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের, নির্বাচন কমিশনের নয়। নতুন বা তরুণদের প্রত্যাশাকে পড়তে হবে গভীরভাবে। তরুণদের কথা সর্বাগ্রে বিবেচনায় গ্রহণ করে রাজনৈতিক ইশতেহার বাস্তবায়নের দীপ্ত মন্ত্রে উজ্জীবিত হতে হবে। কারণ আমরা জানি, তরুণরাই বদলে দিতে পারে বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের সীমাহীন অগ্রযাত্রার অন্যতম অংশীদার হচ্ছে তরুণেরাই।। তাদের মাধ্যমেই উন্নয়নের চূড়াকেই ছুঁয়ে যাওয়ার মানসে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যেতে হবে শেষ দিন অবধি। বিশেষ করে তরুণদের কর্মসংস্থান এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন পলিসি প্রণয়ন করার ওয়াদা প্রদান করতে হবে। ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেও তরুণদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। প্রত্যেক পরিবারের উঠতি বয়সি তরুণদের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে ওই পরিবারের সংশ্লিষ্টদের ভোটকেন্দ্রে আনার। ভোটবিপ্লবের দায়িত্ব তরুণদের প্রদান করতে হবে। বোঝাতে হবে সবাই, আপনার ভোট আপনি দেবেন, যাকে খুশি তাকে দেবেন। সে লক্ষ্যে আপনাদের কেন্দ্রে আসতে হবে। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর। এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এসেছে প্রার্থী নির্বাচনের। ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ইচ্ছেমতো প্রার্থীকে ভোট প্রদান করার স্বাধীনতা প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে এবং সে লক্ষ্যেই কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ধরে রাখতে এবং সহযোগিতার জায়গাকে প্রসারিত করতে সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের বিকল্প নেই। আমরা এও জানি, বাংলাদেশবিরোধীরা উন্নয়নের গতিধারাকে প্রতিহত করতে তথা অর্থনীতির বিকাশকে গলা টিপে ধরতে দীর্ঘদিন ধরে অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের প্রতিহত করতে এবং দেশের সামষ্টিক উন্নয়নের স্বার্থে ভোটবিপ্লবের মাধ্যমে ভোট ঠেকানোর কৌশলকে ধূলিসাৎ করে দিতে হবে।

লেখক : মো. সাখাওয়াত হোসেন – চেয়ারম্যান, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ