1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

‘বিদ্যানন্দ’ বনাম প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী

রহমান বর্ণিল : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আনন্দের সঙ্গে বিদ্যা শিক্ষার জন্য ‘বিদ্যা+আনন্দ’ মানে বিদ্যানন্দের যাত্রা। অথচ মূর্খ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী বলছে, কোনো এক হিন্দুধর্মাবলম্বীর নামের ‘নন্দ’র আগে ‘বিদ্যা যুক্ত করেই নাকি বিদ্যানন্দ’। সুবিধাবঞ্চিত বিশেষত পথশিশুদের শিক্ষা সহায়ক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে সংগঠনটির যাত্রা হলেও বর্তমানে অজস্র মানবিক কাজে জড়িয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি। পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র ও অসচ্ছল শিশুদের মৌলিক শিক্ষা, খাবার, চিকিৎসা এবং আইন সেবা দেওয়া ছাড়াও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে পোশাক, শিক্ষা উপকরণ, মাসিক বৃত্তি প্রদান এবং সামাজিক নানান সেবামূলক কাজ করছে বিদ্যানন্দ। গত একযুগ ধরে প্রতিদিন হাজার হাজার বুভুক্ষু মানুষের মুখে খাবারও দেয় এই সংগঠনটি।

‘এক টাকায় আহার’ এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা এক টাকায় দুস্থ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই রমজান মাসে ‘এক টাকার ইফতারি’ ও ‘এক টাকায় সাহ্রী’ বিতরণ করে যাচ্ছে। শুভেচ্ছা মূল্য এই এক টাকা নেওয়া হয় যেন গ্রহীতার মনে কোনো হীনম্মন্যতা সৃষ্টি না হয়। বিদ্যানন্দ গ্রহীতাদের মন থেকে ‘ভিক্ষা’ ও বণ্টনকারীদের মন থেকে ‘দান’ শব্দ দুটি মুছে ফেলতে চায়। তারা যেন ভাবতে পারে প্রতীকী হলেও কিছু মূল্য দিয়েই খাবারটি তারা নিয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিদিন খাবার পাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বিদ্যানন্দ মানুষের জন্যই কাজ করে যাচ্ছ। কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে বৌদ্ধ বা খৃষ্টান এসবে ভেদাভেদ করেনি। তার প্রমাণ হিসেবে আমরা দেখি বিদ্যানন্দ রোজাদারকে ইফতারি দেয়, মাদ্রাসার ছাত্রদের পাঞ্জাবি-জোব্বা বানিয়ে দেয়। যারা মাদ্রাসায় জোব্বা দেয়, তারা মন্দিরে গেরুয়াও দিতে হবে। বরং সেটা না করলেই বিদ্যানন্দকে সাম্প্রদায়িক বলা যেতো। সকল ধর্মের মানুষের ধর্মীয় পরিচয় একপাশে রেখে কেবল মানুষ হিসেবে সহযোগিতা করছে বলেই বিদ্যানন্দ অসাম্প্রদায়িক। যারা ধর্মীয় উস্কানি ছড়ায় তাদের সঙ্গে বিদ্যানন্দের পার্থক্য হচ্ছে, ধার্মীকদের প্রদত্ত ত্রাণের প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে ‘রমজান ফুড প্যাকেজ’। আর সেই ত্রাণ পায় কেবল একটা বিশেষ ধর্মের মানুষ। আর বিদ্যানন্দের কিশোর কুমার ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হয়েও মুসলমানদের মাঝে সেহেরি, ইফতারি সরবরাহ করে। এখানেই একজন ধর্মিক আর একজন মানুষের মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্য। যারা বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন, যারা কিশোর কুমারকে হিন্দু বলে সমালোচনা করছেন, তারা প্রকারান্তরে হাজার হাজার হতদরিদ্র মানুষের মুখের আহার কেড়ে নেওয়ার পক্ষে কাজ করছেন।

বিদ্যানন্দ মানুষের অনুদানে মানুষের সেবা করে। কিন্তু কাউকে অনুদানের জন্য জোরজবরদস্তি তো করে না। আপনার যাকাতের টাকা আপনি বিদ্যানন্দকে দিতে হবে বিদ্যানন্দ সেটা বলেনি। আপনি আপনার যাকাতের টাকা বলাৎকারক মোল্লার বলবর্ধনের জন্য মাদ্রাসায় দিন। কিন্তু বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে হতদরিদ্র মানুষের পেটে লাথি দেয়ার কোনো অধিকার আপনার নেই।

লেখক : রহমান বর্ণিল – কথাসাহিত্যিক


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ