1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা : স্বাধীনতার সাঁকো

হামজা রহমান (অন্তর) : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩

৭ জুন ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস। বাঙালি জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জানতে হলে ৬ দফা পড়তে হবে, এবং এর প্রভাবে পরবর্তী আন্দোলনগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে সম্মিলিত বিরোধী দলের সভায় পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী এমনকি পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় সকল বিরোধী দলও এই ৬ দফা প্রত্যাখ্যান করেছিলো, কারন সবার আশংকা ছিলো এই ৬ দফা আসলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ১ দফাই, তা হলো শেখ সাহেবের দীর্ঘকালের পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্র। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারিশমেটিক দিক এখানেই, তিনি জানতেন জনগণের সামনে এই ৬ দফা নিয়ে একবার দাঁড়াতে পারলে প্রলয়ঙ্করী গতিতে স্বার্থন্বেষী মহলের সকল বিরোধিতাকে প্রতিহত করতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা প্রয়োজন।

১৯৬৬ সালের ১৭ এপ্রিল পশ্চিম পাকিস্তানের পিপলস পার্টির নেতা এবং তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ৬ দফা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এক বির্তকের আহবান জানালেন, স্থান নির্ধারিত হলো পল্টন ময়দান! শেখ সাহেবের ৬ দফা ভুট্টো কিভাবে দফারফা করে তা দেখতে হাজার হাজার জনতা এসে উপস্থিত হলো সেখানে। কিন্তু ভুট্টো তার কথা রাখলো না, জনগণের উপর বঙ্গবন্ধুর অসীম মেন্ডেট দেখে ধুরন্ধর ভুট্টো পালিয়ে গেলো।

এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ৬-দফা দলীয় কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। দলীয় কর্মী বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত তরুণ ছাত্রলীগ নেতৃত্বের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। বঙ্গবন্ধু বলতেন, ‘সাঁকো দিলাম, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়ার জন্য।’

মার্চ মাসের ১৮-১৯ তারিখ বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে বিপুল ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হলেন, সাধারণ সম্পাদক হলেন দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত তাজউদ্দিন আহমদ। এবার আর তাঁকে আটকায় কে? কাউন্সিল অধিবেশনের পর বঙ্গবন্ধু সারাদেশ চষে বেড়ান। ৩৫ দিনে মোট ৩২টি জনসভায় তিনি বক্তৃতা করেন। আন্দোলন শুরু হল ৬ দফার। ১৯৬৬ সালের ১০ মে’র মধ্যে আওয়ামী লীগের ৩৫০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বঙ্গবন্ধু এটি আঁচ করে সংগঠনকে যতটা পারেন গুছিয়েছেন। কয়েকটি স্তর করা হয়েছিল। এক স্তর গ্রেফতার হলে আরেক স্তর আন্দোলন সংগঠন করবে এই ছিল কৌশল। এ-সময় ছাত্রলীগ বিশেষ ভুমিকা পালন করে।

৭ জুন হরতাল ডাকা হল, “৬ দফা কায়েম কর” এই শ্লোগানকে কেন্দ্র করে। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন এ দেশের রাজনীতিতে ঐতিহাসিক যুগান্তকারী দিন। স্বাধীনতার বীজ বপন হয়েছিল এই দিনে। শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য রাজবন্দীদের মুক্তির দাবীতে ৭ জুন হরতালে পুলিশের হামলায় ১০ জন এবং পরে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ১ জনসহ মোট ১১ জন শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মনু মিয়া, সফিক, শামসুল হক, আবুল হোসেনসহ মাত্র ৪ জনের নাম জানা যায়। এই আন্দোলন ধাবিত করে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নিরঙ্কুশ বিজয় এবং ৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকে।

এদেশের নাগরিক হিসেবে এই গৌরবময় ইতিহাস আমাদের সকলের জানা কর্তব্য। যে ৬ দফা জানেনা, সে বঙ্গবন্ধুকেও জানেনা। আর বঙ্গবন্ধুকে না জানলে এই দেশের জন্মের ইতিহাস জানা অসম্ভব। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক এই দিনে সকল শহীদদের আবারও স্মরণ করছি অবনত মস্তকে।

যা ছিলো ৬ দফায় –

১) প্রথম দফা : শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি:
১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সরকারের বৈশিষ্ট্য হবে Federal বা যুক্তরাষ্ট্রীয় ও সংসদীয় পদ্ধতির; তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচন হবে প্রত্যক্ষ এবং সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে। প্রদেশ গুলোকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার প্রতিনিধি নির্বাচন জনসংখ্যার ভিত্তিতে হবে।

২) দ্বিতীয় দফা : কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা:
কেন্দ্রীয় বা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের দায়িত্ব থাকবে কেবল প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়ে সীমাবদ্ধ। অবশিষ্ঠ সকল বিষয়ে অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।

৩) তৃতীয় দফা : মুদ্রা ও অর্থ বিষয়ক ক্ষমতা:
পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য দু’টি পৃথক মুদ্রা-ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যা পারস্পরিকভাবে কিংবা অবাধে উভয় অঞ্চলে বিনিময়যোগ্য। এ ক্ষেত্রে দুই অঞ্চলে স্বতন্ত্র বা পৃথক পৃথক ষ্টেট ব্যাংক থাকবে এবং মুদ্রার পরিচালনা ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। অথবা, এর বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে একটি মুদ্রা-ব্যবস্থা চালু থাকতে পারে এই শর্তে যে, একটি কেন্দ্রীয় সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যার অধীনে দুই অঞ্চলে দুটি রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে। তাতে এমন বিধান থাকতে হবে যেন এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে সম্পদ হস্তান্তর কিংবা মূলধন পাচার হতে না পারে। বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্থান থেকে পশ্চিম পাকিস্থানে মূলধন পাচার বন্ধ করার জন্য সংবিধানে কার্যকর ব্যবস্থা থাকতে হবে।

৪) চতুর্থ দফা : রাজস্ব কর ও শুল্ক বিষয়ক ক্ষমতা:
সকল প্রকার রাজস্ব ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা থাকবে অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে। কেন্দ্রীয় তথা প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়ের ব্যয় নির্বাহের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োজনীয় রাজস্বের যোগান আঞ্চলিক তহবিল হতে সরবরাহ করা হবে। সংবিধানে নির্দেশিত বিধানের বলে রাজস্বের এই নির্ধারিত অংশ স্বাভাবিকভাবেই ফেডারেল তহবিলে জমা হয়ে যাবে। এহেন সাংবিধানিক বিধানে এমন নিশ্চয়তা থাকবে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্বের প্রয়োজন মেটানোর ব্যাপারটি এমন একটি লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ হতে হবে যেন রাজস্বনীতির উপর নিয়ন্ত্রন ক্ষমতাটা নিশ্চিতভাবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকে।

৫) পঞ্চম দফা : বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা:
পঞ্চম দফায় বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ে নিম্নরূপ সাংবিধানিক বিধানের সুপারিশ করা হয়:
(ক) ফেডারেশনভুক্ত প্রত্যেকটি অঙ্গরাজ্যের বহির্বাণিজ্যের পৃথক পৃথক হিসাব রক্ষা করতে হবে।
(খ) বহির্বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গরাজ্যগুলোর এখতিয়ারে থাকবে এবং অঙ্গরাজ্যের প্রয়োজনে অঙ্গরাজ্য কর্তৃক ব্যবহৃত হবে।
(গ) কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা সমান হারে অথবা সর্বসম্মত নির্দিষ্ট হারে অঙ্গরাজ্যগুলোই মিটাবে।
(ঘ) অঙ্গরাজ্যের মধ্যে দেশজ দ্রব্য চলাচলের ক্ষেত্রে শুল্ক বা কর সদৃশ কোন বাধা থাকবে না।
(ঙ) সংবিধানে অঙ্গরাজ্যগুলোকে বিদেশে নিজ নিজ বাণিজ্য প্রতিনিধি দল প্রেরণের এবং স্ব স্ব স্বার্থে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা দিতে হবে।

৬) ষষ্ঠ দফা : আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা:
(ক) আঞ্চলিক সংহতি ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সংবিধানে অঙ্গরাজ্যগুলোকে স্বীয় কর্তৃত্বাধীনে আধা-সামরিক বাহিনী বা আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে।
(খ) কেন্দ্রীয় সরকারের সকল শাখায় বা চাকরি ক্ষেত্রে প্রতিটি ইউনিট থেকে জনসংখ্যার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ করতে হবে।
(গ) নৌ-বাহিনীর সদর দপ্তর করাচি থেকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করতে হবে।

লেখক : হামজা রহমান (অন্তর) – কলামিস্ট, ছাত্রনেতা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক।

 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত

জঙ্গি ছিনতাইকারী ঈদী আমিনের আত্মসমর্পণ, দায়ী কনস্টেবল বরখাস্ত

শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস : অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার দিন

পূর্বাচলে বসছে বঙ্গবন্ধুর তর্জনীর ৭১ ফুট ভাস্কর্য

গ্যাসের চাহিদা মেটাতে সিঙ্গাপুর থেকে এলএনজি কিনছে সরকার

সমুদ্রপথে শতাধিক মালয়েশিয়াগামীসহ ট্রলারডুবি, ৩৫ রোহিঙ্গাসহ উদ্ধার ৩৯

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়ার গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা চলবে

ছাত্র না হয়েও ৩ বছর ধরে ঢাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা দিচ্ছেন, গিয়েছেন ট্যুরেও

ফরিদপুরে রোপা আমনের বাম্পার ফলন, চলছে ধান কাটার মহোৎসব

যেভাবে মহামারি করোনা প্রতিরোধ করেছে তাইওয়ান, হংকং ও ম্যাকাউ

কক্সবাজারে শীত উপেক্ষা করে কেন্দ্রে নারী ও নতুন ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি