রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দিতে সাধারণত অ্যাম্বুলেন্সে সাইরেন বাজানো হয়। এর শব্দ শুনে রাস্তায় চলাচলে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় গাড়িটিকে। কিন্তু আজকাল অনেকেই এই নিয়মের অপব্যবহার করে থাকেন। যেমনটি করেছেন এক অ্যাম্বুলেন্সচালক। গাড়িতে রোগী না থাকলেও রাস্তায় সুবিধা পেতে সাইরেন বাজিয়েছেন তিনি। এরপর হাসপাতালে না গিয়ে ঢুকেছেন খাবারের দোকানে।
সম্প্রতি এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের হায়দ্রাবাদে। এর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, ওই অ্যাম্বুলেন্সটির ভেতরে কোনো রোগী ছিলেন না। অর্থাৎ কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ছিল না সেটি। তবু তাতে সাইরেন বাজানো হয়েছিল।
এর মাধ্যমে ট্রাফিক পুলিশের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পরিবর্তে কাছাকাছি একটি খাবারের দোকানে যান অ্যাম্বুলেন্সচালক। সেখান থেকে ভাজাপোড়া খাবার ও কোমল পানীয় কেনেন তিনি।
পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার রাতে। অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যস্ত বশিরবাগ জংশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় চালক সাইরেন বাজানোয় দায়িত্বরত ট্রাফিক কনস্টেবল অবিলম্বে গাড়িটি চলার জন্য রাস্তা পরিষ্কার করে দেন।
ওই কনস্টেবল ভেবেছিলেন, অ্যাম্বুলেন্সটির তাড়া রয়েছে। কিন্তু সেটি ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরত্বে একটি খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়ায়। এ দৃশ্য দেখে এগিয়ে যান কনস্টেবল।
তিনি বিষয়টি সম্পর্কে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের কথপোকথনের ভিডিও রেকর্ড করা হয় কনস্টেবলের শরীরে লাগানো বডি ক্যামেরায়।
#TelanganaPolice urges responsible use of ambulance services, citing misuse of sirens. Genuine emergencies require activating sirens for swift and safe passage. Strict action against abusers is advised.
Together, we can enhance emergency response and community safety. pic.twitter.com/TuRkMeQ3zN
— Anjani Kumar IPS (@Anjanikumar_IPS) July 11, 2023
ফুটেজে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সচালকের হাতে একটি জুসের বোতল। আর গাড়ির ভেতর কোনো রোগী নেই, কেবল দুজন নার্স রয়েছেন। চালক দাবি করেন, একজন নার্সের শরীর খারাপ।
সব শুনে ট্রাফিক কনস্টেবল বলেন, আপনি সাইরেন চালু করার পর আমি অ্যাম্বুলেন্সকে ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু হাসপাতালে না গিয়ে আপনি ‘মিরচি ভাজি’ (মরিচের চপ) খাচ্ছেন, চা খাচ্ছেন। রোগী কোথায়? মিরচি ভাজি খাওয়ার জন্য আপনি সাইরেন চালু করেছেন?
ক্ষুব্ধ কনস্টেবল ওই অ্যাম্বুলেন্সচালককে আরও বলেন, তিনি এ ঘটনায় রিপোর্ট করবেন এবং ভিডিওটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। তিনি বলেন, আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো।
পরবর্তীতে ওই চালককে ভারতীয় মোটরযান আইন লঙ্ঘনের দায়ে এক হাজার রুপি জরিমানা করা হয়।
ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (ট্রাফিক-আই) রাহুল হেগড়ে বার্তা সংস্থা পিটিআই’কে বলেছেন, এটি কোনো জরুরি পরিস্থিতি ছিল না। অ্যাম্বুলেন্সচালকের সাইরেন ব্যবহার করা উচিত হয়নি। যদি জরুরি হতো তাহলে তাদের হাসপাতালে যাওয়া উচিত ছিল… কিন্তু তারা যাননি। তাদের রাস্তার পাশে খাবারের দোকানে পাওয়া গেছে। কেবল ট্রাফিক ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার জন্য তারা সাইরেন বাজিয়েছিলেন।
ডিসিপি বলেন, আমরা সাইরেন অপব্যবহারের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাবো। যদি বারবার বা গুরুতর লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে এ ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে।