1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জ্বালানি খাতের আশাজাগানিয়া মেগাপ্রকল্প এসপিএম

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০২৩

জ্বালানিখাতে সরকারের সবচেয়ে বড় এবং যুগান্তকারী মেগাপ্রকল্প (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) এসপিএম। বাংলাদেশের জ্বালানি তেল ব্যবস্থাপনা সাশ্রয়ী ও টেকসই করতে এই প্রকল্প কার্যকরি অবদান রাখবে। প্রকল্পটি চালু হলে ১১ দিনের কাজ মাত্র ৪৮ ঘন্টায় করা সম্ভব হবে। এতে করে প্রতি বছর ৮০০ কোটি টাকা রাষ্ট্রের সাশ্রয়ী হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

মহেশখালীতে নির্মাণ হচ্ছে ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপ লাইন প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় ২২০ কিলোমিটার পাইপলাইনে পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ছয়টি বিশালাকার স্টোরেজ ট্যাঙ্ক; যা বাংলাদেশের তেল মজুদ সক্ষমতাকে নিয়ে যাবে নতুন উচ্চতায়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৯৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে জি টু জি ভিত্তিতে বাস্তবায়নাধীন সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং পাইপ লাইন দিয়ে স্বল্প সময়ে, সাশ্রয়ী খরচ ও নিরাপদে জ্বালানি তেল (ক্রুড ওয়েল ও ফিনিসড প্রডাক্ট) পরিবহন সহজ হবে। বাংলাদেশের জ্বালানিখাতে যুগান্তকারী মেগাপ্রকল্প এসপিএম। ভৌত অবকাঠামোর নির্মাণ শেষ, এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। উদ্বোধনের পরে চলতি বছরের শেষ দিকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল এবং ফিনিসড পোডাক্ট মাদার ভেসেল থেকে খালাস করতে ১১-১২ দিন সময় লাগত। একই সঙ্গে ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে আমদানি নির্ভর জ্বালানি তেল খালাস করতে অতিরিক্ত সময়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রের গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা। এসপিএম প্রকল্প চালু হলে টাকা এবং সময় দুইটায় সাশ্রয়ী হবে।

আমদানি করা জ্বালানি তেল সরাসরি স্বল্প সময়ের মধ্যে খালাস করার জন্য ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে গভীর সমুদ্রে ডাবল পাইপলাইনের সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) প্রকল্প হাতে নেয় শেখ হাসিনার সরকার। চলতি বছরে এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসপিএম বয়াটি মহেশখালী দ্বীপের পশ্চিম পার্শ্বে বঙ্গোপসাগরে স্থাপন করা হয়েছে। জাহাজ থেকে সরাসরি অফশোর পাইপলাইনের মাধ্যমে মাতারবাড়ি এলটিই (ল্যান্ড র্টামিনাল ইন্ড) পর্যন্ত এবং সেখান থেকে অনশোর পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালী এলাকায় স্থাপিত স্টোরেজ ট্যাঙ্কারের জমা হবে তেল।

প্রকল্পে এসপিএম নির্মাণের পাশাপাশি মহেশখালীর মাতারবাড়ী উপকূলে ৫০ হাজার টন ধারণক্ষমতার তিনটি ক্রুড অয়েল স্টোরেজ ট্যাঙ্ক, ৩০ হাজার টন ধারণক্ষমতার তিনটি ডিজেল স্টোরেজ ট্যাঙ্ক এবং মহেশখালীতে পাম্প স্টেশন স্থাপন, স্কাডা সিস্টেম স্থাপন ও ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে জি টু জি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীনস্থ কোম্পানি ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড এটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের ইপিসি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছেন চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানি লিমিটেড।

প্রকল্প কর্মকর্তা মনজেদ আলী শান্ত বলেন, সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং এসপিএম উইথ ডাবল পাইপ লাইন এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল এবং ফিনিসড পোডাক্ট আসত। সেটা মাদার ভেসেল থেকে লাইটারিং করে নিতে হয়। একটা মাদার ভেসেল থেকে লাইটারিং করতে ১০ থেকে ১১ দিন লাগে। এজন্য আমাদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হত এবং অনেক সময় লাগত। এই প্রকল্প চালু হলে সেটা আমরা ৪৮ ঘন্টা সময়ের মধ্যেই চট্টগ্রাম পৌঁছাতে পারব। এখানে আমাদের ৬টি ট্যাঙ্কারের রয়েছে। ৩টি ফিনিসড পোডাক্ট আর ৩টি ক্রড অয়েলের জন্য। সুবিধা মত আমরা ক্রড অয়েলকে পাম্পিং করে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারীতে পাঠাতে পারব।

প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, ইতিমধ্যেই আমাদের প্রকল্পের ৯৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি প্রকল্পের কমিশনিং এবং টেস্টিংয়ের কাজে যাবে। কমিশনিং এবং টেস্টিংয়ের কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন হলে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্প চালু হলে বছরে সরকারের প্রায় ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয়ী হবে৷ মোট ১৯১ একর জায়গায় ওপরে এটা নির্মিত হচ্ছে। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে এক্সিম ব্যাংক অব চায়না ও বাংলাদেশ সরকার।

এই কর্মকর্তা বলেন, এসপিএম উইথ ডাবল পাইপ লাইনে খুব উন্নতমানের পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। সমুদ্রে থাকা পাইপ লিকেজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কোথাও কোনো সমস্যা হলে আমাদের সংকেত পাঠাবে। পুরো প্রকল্পে সর্বাধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রকল্প পরিচালনার জন্য আলাদা কোম্পানি গঠন হতে যাচ্ছে। সেই কোম্পানি এটা পরিচালনা করবেন। এই প্রকল্পের দেশের অনেক লোকেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৯০ একর জায়গার উপর ছয়টি স্টোরেজ ট্যাঙ্ক ও পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে।

মুরিং পয়েন্ট থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল আনলোড করা হবে। এরপর মহেশখালী স্টোরেজ ট্যাংক থেকে ১৮ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি পৃথক পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল যাবে ইস্টার্ন রিফাইনারির শোধনাগারে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ