1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জন্মের পাপ মোচন হয়েছে শেখ হাসিনার উসিলায়

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০২৩

রোদ, ঝড়-বৃষ্টিতে কি কষ্ট আমাদের গেছে, তা বলা সম্ভব নয়। আকাশে মেঘ চমকালেই যেন বুকের পাঁজর মোচর দিয়ে উঠতো। বৃষ্টি নামলে অনেকে গরু-ছাগল নিয়ে দৌড়ায়, কেউবা ধান-খড় উঠায়। আর আমাদের কাঁথা-বালিশ, চুলা-খড়ি টানা হ্যাচড়া করে নিরাপদে রাখতে হতো। কতদিন ভেজা বিছানায় রাত কেটেছে, তার হিসাব জানা নাই। এটাই ছিল আমাদের জীবন। পৃথিবীতে জন্ম নিয়ে যেন পাপ করেছিলাম। আর সেই পাপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উসিলায় মোচন হয়েছে আশ্রয়ণে একটি স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে।

কষ্টের কথাগুলো বলেছিলেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ ইউনিয়নের পাতাইবাড়ী ডাঙ্গার আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগি নুর ইসলাম-রশিদা দম্পত্তি (২৮)।

নুর ইসলামের বাড়ি ছিল পাশ্ববর্তী উপজেলার কাঁঠালী ইউনিয়নের দেশীবাই গ্রামে। গত বছর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের জন্য একটি আবেদন করেন। সে সময় কয়েক দফা যাচাই-বাছাইয়ে চুড়ান্ত তালিকায় নাম উঠে নুর ইসলামের। তারপর তারা স্বপ্নের ঠিকানা পান। তাদের ঘরে দুই সন্তান আছে। এরমধ্যে নুর জান্নাত (৫) ও নাইম ইসলাম (১)।

জানা যায়, সারাদেশে ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে পূনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের তত্ত্ববধানে শুরু হয় ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’। জলঢাকা উপজেলায় এক হাজার ২৩২টি ভূমিহীন পরিবারের তালিকা হয়। তারমধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে ৮২১, সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত আশ্রয়ণ ব্যারাকে ১০০, গুচ্ছগ্রামের মাধ্যমে নির্মিত ১৮০ ও উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিল থেকে

তিনটি ঘর নির্মাণের মাধ্যমে মোট এক হাজার ১০৪টি পরিবারকে পূণর্বাসিত করা হয়েছে। এ ছাড়া চতুর্থ পর্যায়ে ১২৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

পাতাইবাড়ীর ডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮৯ নম্বর ঘরের বারান্দায় সেলাই মেশিনে বসে হাসি মুখে নুর ইসলামের স্ত্রী রশিদা বেগম বলেন, ‘ভবিষ্যত ছেলে-মেয়েতো দুরের কথা একমুঠো খাবারের চিন্তাই আমাদের কাছে বড় ছিল। আল্লাহর রহমতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আশ্রয়ণের ঘরটি আমাদের নতুন পথ দেখিয়েছে। আশ্রয়ণে আসার পর আমি সেলাই প্রশিক্ষণ নেই। প্রশিক্ষণের পর আমাদের ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) স্যারের সহায়তায় একটি সেলাই মেশিন পাই। তারপর নিয়মিত সেলাইয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এখানে ১৩০ ঘরের উপকারভোগি পরিবারের সদস্য ছাড়াও বাইরের অনেক মহিলা ও মেয়েরা কাপড় সেলাই করতে আসেন। এ থেকে যা আয় হয়, তাই দিয়ে বেশ ভালই চলছি। আর থাকারতো কোনও চিন্তা নাই, পাকা ঘর পেয়ে রাজার হালে আছি।’

আরেক উপকারভোগি খাদিজা বেগম ও লতিফুল নেছা বলেন, সে বাড়ির চারিদিকে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ লাগিয়েছে। পরিশ্রমী রশিদা সেলাই কাজের পাশাপাশি হাঁস-মুরগি পালন করছে। সম্প্রতি তার রোজগারের টাকায় তার স্বামীকে দিয়ে মীরগঞ্জ বাজারে একটি গলামাল (মুদি দোকান) ব্যবসা খুলেছে। রশিদাকে দেখে অনেকেই এখন সেলাই প্রশিক্ষণে আগ্রহী হচ্ছে।

উপজেলার মীরগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়াডের্র সদস্য মমিনুর ইসলাম বলেন, ‘মুজিববর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন (ক শ্রেণির) পরিবারের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে পাতাইবাড়ী ডাঙ্গায় ১৩০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। সেখানে বসবাসরত সুবিধাভোগিরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে স্বাবলম্বী হয়েছে। যার বাস্তব উদাহরণ নুর ইসলাম-রশিদা দম্পত্তি।’

মীরগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা মানিক বলেন, ‘আমরা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত সুবিধাভোগি নির্বাচন করেছি। তাই অনেকেই আশ্রয়ণে তাদের স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে নতুন স্বপ্ন বুনছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। অত্র অঞ্চলের মানুষের মান উন্নয়ন থেকে শুরু করে মৌলিক অধিকারসহ উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে।’


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ