1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

লাভ বেশি হওয়ায় হলুদ তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা

জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২

বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে খ্যাত আর ধান ও আলুর উৎপাদনের জন্য জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা পরিচিত প্রাচীনকাল থেকে। তবে এই উপজেলায় নতুন করে বাণিজ্যিকভাবে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাচা পদ্ধতিতে বিদেশি নানান জাতের বর্ষাকালীন তরমুজের চাষ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় অন্য ফসল বাদ দিয়ে অসময়ে তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন এলাকার কৃষকরা।

অন্য সব ক্ষেতে তরমুজ যখন শেষ, তখন এই আগস্ট মাসে মাচায় মাচায় ঝুলছে চায়না ও থাইল্যান্ডের মধুমালা আর তৃপ্তি জাতের তরমুজ। বাজারমূল্য অনেক ভালো হওয়ায় ধানসহ অন্যান্য ফসল বাদ দিয়ে কালচে ও হলুদ রংয়ের তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন এখানকার কৃষকরা। এই ফল ভিতরে লাল ও রসালো আর খেতে অনেক সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে এ তরমুজ উপজেলায় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে- ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়া, নওগাঁ, নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, কালাই সদর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউপির হাজীপাড়া গ্রামে। উপজেলার হাতিয়র ব্লকের সেই হাজীপাড়ায় সবুজ মাঠ পেরিয়ে আঁকাবাঁকা জমির আইলপথ ধরে সামনে এগিয়েই পশ্চিম-হাজীপাড়া মাঠে চোখ ধাঁধানো বিদেশি জাতের তরমুজের রাজ্য। তরমুজ চাষি মো. সাগর হোসেন, বাবলু মিয়া, ছাইদুল ইসলাম ও সুজাউলসহ অনেকেই বিদেশি জাতের তরমুজের বীজ রোপণের অল্প দিনের মধ্যেই জমিতে গাছগুলো বেড়ে উঠেছে। চাষিরা জমিতে বেড করে মাটির সঠিক আদ্রতা ধরে রাখতে মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে রেখেছে। জুন মাসে ১৮ ইঞ্চি পরপর চায়না ও থাইল্যান্ড দেশের মধুমালা আর তৃপ্তি জাতের তরমুজের বীজ রোপণ করেন কৃষকরা। পুরো ক্ষেতে বাঁশের খুঁটির উপরে চিকন দড়ি দিয়ে জালের মতো করে বিছিয়ে মাচা তৈরি করা হয়। বীজ রোপণের ৩০ দিনের মধ্যে গাছের লতাপাতাগুলো মাচায় উঠতে শুরু করে। রোপণের ৪০ দিনের মধ্যে গাছে গাছে প্রচুর হলুদ রংয়ের ফুল ফোটে এবং অনেক গাছে কুঁড়িও আসে। আবার তরমুজ ৩৫ দিনের পরিপক্ব হয়ে মাচায় ডোগায় ডোগায় ঝুলে আছে আড়াই থেকে চার কেজি ওজনের তরমুজ। এই তরমুজ দেখতে অনেকটা হলুদ রংয়ের মতো মনে হলেও ভিতরে কিন্তু লাল টুকটুকে ও রসে ভরা আর খেতে অনেক সুস্বাদু এবং মিষ্টি। এখানকার কৃষকরা ব্যস্ত বিদেশি তরমুজ চাষ করতে।

উপজেলার হাজীপাড়ার সফল তরমুজ চাষি মো. সাগর হোসেন বলেন, বাজারে এই তরমুজের চাহিদা অনেক বেশি এবং দামও ভালো আছে। প্রতিটি তরমুজ গড়ে আড়াইশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। এতে সবকিছু খরচ বাদ দিয়ে আমার আয় হবে প্রায় ২ লাখ টাকা। স্থানীয় তরমুজ ব্যবসায়ী ইলিয়াস ও জাহিদুল ইসলাম জানান, কালাই উপজেলার উৎপাদিত তরমুজগুলোর গুণগত মান অনেক ভালো। এই এলাকার তরমুজ বিষ ও ফরমালিন মুক্ত এবং খেতে খুব সু-স্বাদু ও দেখতেও অনেক আকর্ষণীয়। তাছাড়া এখারকার তরমুজ ক্রেতাদের চাহিদাও অনেক বেশি। তারা ক্ষেত থেকে প্রতি মণ তরমুজ ১ হাজার ৮০০ টাকা দরে পাইকারি দরে কিনছেন। এখানকার তরমুজ কিনে ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়া, নওগাঁ, নাটোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তারা পাঠান।

উপজেলা কৃষি অফিসার নীলিমা জাহান বলেন, উপজেলায় ১০ হেক্টর জামিতে মধুমালা ও তৃপ্তি জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। এলাকায় তরমুজ চাষের জন্য কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহের পরামর্শ এবং বালাইনাশক ব্যবহারে ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এই এলাকার কৃষকেরা নতুন পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করছেন। আগামীতে এই ফসল চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে। এই নতুন পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া গেলে একদিকে যেমন তরমুজ সারা বছর পাওয়া যাবে, অন্যদিকে তরমুজ চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে অনেক স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ