1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

নকলনবিশদের চাকুরী জাতীয়করণের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মানববন্ধন

নাজিম আজাদ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী রেজিস্ট্রি অফিসে অস্থায়ী ভাবে কর্মরত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মসহ দেশের সকল নকলনবিশদের চাকুরী জাতীয়করণের দাবিতে আজ ৩১ অক্টোবর রবিবার দুপুর ১২ টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে আইন মন্ত্রণালয় ঘেরাও ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে আইন মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। পরে সংগঠনের দুই সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলকে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রোমান হোসাইন ও বাংলাদেশ নকলনবিশ এসোসিয়েশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম। এর আগে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ও সংগ্রামের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল অনিয়ম ও অসঙ্গতির বিরুদ্ধে রাজপথে প্রতিবাদ করে আসছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এর ধারাবাহিকতায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী রেজিস্ট্রি অফিসে অস্থায়ীভাবে কর্মরত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মসহ দেশের সকল নকলনবিশদের চাকুরী জাতীয়করণসহ ছয় দফা দাবিতে আজ ৩১ অক্টোবর রবিবার দুপুর ১২ টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে আইনমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। ৬১টি জেলার ৫০১টি রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত ১৬,২৪৫ জন এক্সট্রা-মোহরার নকলনবিশদের চাকুরী স্থায়ীকরণের (স্কেলভুক্ত) জন্য ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং ১৯৮৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সানুগ্রহ সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজও পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করা হয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রায় এক হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মসহ মোট ১৬ হাজার নকলনবিশের পরিবাররা অতিকষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। নকলনবিশদের চাকুরী জাতীয়করণ করা রাষ্ট্রের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি।”

বাংলাদেশ নকলনবিশ এসোসিয়েশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন,
“এক্সট্রা-মোহরারগণ দলিল বালাম না লিখলে দলিলটি রেজিস্ট্রিকৃত বলে গণ্য হয়না। কাজেই যারা স্থায়ী রেকর্ড সৃষ্টি করে তারা অস্থায়ী থাকতে পারেনা। ১৯৫৮ সালে জজকোর্ট, মহামান্য হাইকোর্ট এবং সরকারের অন্যান্য বিভাগের নকলনবিশদের চাকুরী সরকারিকরণ হলেও রেজিষ্ট্রি বিভাগের নকলনবিশদের চাকুরী আজও পর্যন্ত সরকারিকরণ হয়নি। সরকার নকল বাবদ যে ফি’ (অর্থ) পক্ষগণ থেকে আদায় করেন, সে অর্থ দিয়েই নকলনবিশদের বেতন-ভাতাদির সংকুলান করা সম্ভব। বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হবে না। গত ১৯/১০/২০১৪ সালে দশ হাজার তিনশত বত্রিশ জন এক্সট্রা-মোহরারকে স্কেলভুক্ত করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছিল সেটাও আজও পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। ১৯৮৪ সালের ১৬ আগস্ট এক জনসভায় বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেছিলেন- “এক্সট্রা মোহরারদের স্থায়ী করার জন্য ১৯৭৩ সনে বঙ্গবন্ধু আইন প্রণয়ন করিলেও আজ পর্যন্ত তাহাদের সমস্যার সমাধান হয় নাই। জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, নকলনবিশদের চাকুরী স্থায়ীকরণের নীতিমালা হয়েছে। ২০১৯ সালে বলেছিলেন, নকলনবিশদের চাকুরি স্থায়ীকরণ বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। ২০২১ সালে বলেছিলেন, সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসগুলোতে কর্মরত নকলনবিশদের চাকরি শীঘ্রই স্থায়ী করা হবে। বারবার আশ্বাসের পরেও অদৃশ্য কারণে নকলনবিশদের চাকুরী জাতীয়করণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না যা কখনোই কাম্য নয়। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ সমর্থন এখনো পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ কি? আইন মন্ত্রণালয় ও নিবন্ধন অধিদপ্তরকে অবশ্যই তা জাতির সামনে পরিস্কার করতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্মসহ দেশের সকল নকলনবীশদের চাকুরী জাতীয়করণ করা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত নকলনবিশদের দুঃখ-কষ্টের অবসান হয়নি যা প্রতারণার শামিল। আইন মন্ত্রণালয় ও নিবন্ধন অধিদপ্তরকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে কারণ তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।”

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন বলেন,
“মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সরকারের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সকল উদ্যোগ ও ঘোষণা বাস্তবায়ন করা। কিন্তু সেটা না করে বছরের পর বছর নকলনবিশদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে যা কখনোই মেনে নিবে না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। আমাদের বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিকট এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করলে অবশ্যই নকলনবিশদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। আইন মন্ত্রীর নিকট দাবি, অবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করে নকলনবিশদের দুঃখ-কষ্ট লাঘব করুন। কারণ এটা তাদের প্রাপ্য। আপনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় দেশের নকলনবিশের অসহায় পরিবাররা তাকিয়ে আছে। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, নকলনবিশদের ঐক্য ধ্বংস করার নানাবিধ ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। নকলনবিশদের সাথে ব্রিটিশদের ডিভাইড এ্যান্ড রুল পলিসি অর্থাৎ ভাগ করো ও শাসন করো নীতি প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে যা নকলনবিশদের যৌক্তিক আন্দোলনকে কখনোই দমাতে পারবে না। নকলনবিশসহ সকল বঞ্চিত ও নির্যাতিত মানুষের পাশে থাকবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সবসময় আপোষহীন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, কেউ যদি ন্যায্য কথা বলে, তাদের সংখ্যা যদি একজনও হয়, আমি তাদের কথা মেনে নিবো। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বারবার দাবি করা সত্ত্বেও অদৃশ্য কারণে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা আজও পর্যন্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অবিলম্বে দেশের সকল রেজিস্ট্রি অফিসে অস্থায়ীভাবে কর্মরত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মসহ সকল নকলনবিশদের চাকুরী দ্রুত জাতীয়করণ করতে হবে। অন্যথায় সকল নকলনবিশদের সাথে নিয়ে দেশব্যাপী আরোও কঠোর কর্মসূচী পালন করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।”

দেশের নকলনবীশদের পক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এর ৬ দফা দাবিসমূহঃ যথাক্রমে-

১। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মসহ দেশের সকল নকলনবিশদের চাকুরী দ্রুত জাতীয়করণ করতে হবে।

২। রেজিস্ট্রি অফিসে জনগণের হয়রানি বন্ধে একটি মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।

৩। নকলনবিশদের বদলী ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে এনলিস্টেড তালিকা অনুসরণ করতে হবে এবং জাতীয়করণের পূর্বে কোন নিয়োগ প্রদান করা যাবে না।

৪। প্রেষণে বদলীকৃত ২ বছরের বেশি সময়ে কর্মরত নকলনবিশদের প্রেষণ বাতিল করতে হবে।

৫। নকলনবিশদের ঐক্য ধ্বংসের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করার জন্য তাদের দাবি আদায়ের একমাত্র নিবন্ধিত সংগঠন যাহার রেজি: নং- বি-১৭৪৬, সভাপতি: রফিকুল ইসলাম ব্যতীত একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরে দাবিকৃত সকল অবৈধ ও ভুয়া সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৬। রেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত