1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ফেরি পাচ্ছেন ‘বিচ্ছিন্ন’ খালিয়াজুরীবাসী

নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২২

নেত্রকোনা জেলা শহর থেকে খালিয়াজুরীর দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। আর মদনের উচিতপুর থেকে খালিয়াজুরী সদরের দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার। দুবছর আগে ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাব-মার্জিবল (ডুবন্ত) সড়ক হয়েছে। এ সড়ক ছয় মাস পানিতে তলিয়ে থাকে আর বাকি ছয় মাস চলতে হয় ডুবন্ত সড়ক দিয়ে। কিন্তু ধনু নদের কারণে যানবাহন চলাচল থেকে বিচ্ছিন্ন খালিয়াজুরীর জনপদ।

নেত্রকোনার হাওড় উপজেলা খালিয়াজুরীর দীর্ঘদিনের এ সমস্যার অবসান হতে যাচ্ছে। ওই উপজেলাকে বিচ্ছিন্ন করে প্রবাহিত ধনু নদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ফেরি। ফেরি রসূলপুর ঘাটে পৌঁছালে যেকোনো ধরনের পরিবহন পৌঁছাবে যান বিচ্ছিন্ন খালিয়াজুরী উপজেলা শহরে। আর এরকম খবরে খুশির বন্যা বইছে হাওর অঞ্চলে।

১২ জানুয়ারি প্রথমে লাল ও কালো রঙের চার চাকার দুটি গাড়ি দেখে হতবাক হন নেত্রকোনার খালিয়াজুরী হাওড় উপজেলার মানুষজন। ধনু নদে সেতু না থাকায় এ শহরে চার চাকার গাড়ি এর আগে দেখেনি কেউ।

স্থানীয়রা জানান, লাল ও কালো রঙের দুটি চার চাকার গাড়ি চলার দৃশ্য দেখতে বুধবার রাস্তার দুপাশে ভিড় জমিয়েছেন হাওরপাড়ের শতশত মানুষ। ওইদিন বিকেলে খালিয়াজুরী উপজেলা সদরে এ দৃশ্য অবলোকন করেন স্থানীয়রা।

এ দু’টি গাড়িই খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের মাটিতে চলা প্রথম কোনো চার চাকার যান। এর আগে আর কোনোদিন এই উপজেলায় সদরে প্রাইভেটকার, জিপ কিংবা, বাস, ট্রাক পৌঁছায়নি। তবে গাড়িগুলো সেখানে পৌঁছাতে পোহাতে হয়েছে নানা ঝক্কি ঝামেলা। নৌকায় পার করতে হয়েছে ধনু নদ। আর সেজন্য কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থেকে আনতে হয়েছে ইঞ্জিনচালিত প্রশস্ত নৌকা।

নদীর পাড় থেকে নির্মাণ করতে হয়েছে অ্যাপ্রোচ সড়ক। আর এসব মোকাবিলা করতে হয়েছে ফাইজার কোম্পানির কোভিড-১৯ টিকা পৌঁছাতে গিয়েই।

টিকা নিয়ে যাওয়া গাড়ি দুটির মধ্যে লাল রঙের গাড়িটি খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। আর কালো রঙের গাড়িটি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার। বরাদ্দ থাকলেও খালিয়াজুরী উপজেলা সদরে এর আগে কোনোদিন তাদের গাড়ি আসেন।

খালিয়াজুরী উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক স্বাগত সরকার শুভ বলেন, ‘উপজেলা সদরে কোনো যানবাহন না আসায় আমরা সব দিক দিয়ে পিছিয়ে আছি। ইউনিয়নগুলো থেকে কেউ চাইলেই রাতের বেলা উপজেলা সদরে আসতে পারেন না। জরুরি ও জটিল রোগীদের পরিবহন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। দূরের শিক্ষার্থীরা সদরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে নিয়মিত ক্লাস করতে পারে না। কৃষিপণ্য ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন মালামাল আনা-নেয়া করতে হয় শ্রমিক দিয়ে। তাই একটি ফেরি চালু হলে আমাদের উপজেলার সম্পূর্ণ চিত্রটি পাল্টে যাবে। গতি আসবে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে।

খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ধনু নদটির জন্য দীর্ঘদিন এ উপজেলা শহর বিচ্ছিন্ন ছিল। জরুরি প্রয়োজনে বা কোনো প্রসূতি মাকে নিয়ে জেলা শহরে যেতে পারিনি স্থানীয়রা। রসুলপুর ঘাটে ফেরি সার্ভিস চালু হলে জেলা সদর, বিভাগ কিংবা রাজধানীর সঙ্গে খালিয়াজুরীর সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। খালিয়াজুরী থেকে জেলা সদর পর্যন্ত সরাসরি বাস সার্ভিস চালু করা যাবে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার নিয়ে খুব সহজেই পৌঁছে যাবে খালিয়াজুরীতে। এ ছাড়া কৃষিনির্ভর এ এলাকার কৃষকদের পণ্য পরিবহন সহজ হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘খালিয়াজুরী উপজেলার রসুলপুর ঘাটে ধনু নদে একটি ফেরি সার্ভিস চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটি বরাদ্দ হবে।’

খুব দ্রুত সময়ে সেখানে উঁচু একটি সেতু এবং মদনের উচিতপুর থেকে খালিয়াজুরী সদর পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণের চিন্তাভাবনা আছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ